প্রদীপ কুমার মজুমদার
ঐতিহাসিকেরা কিন্তু ক্যে’র সমালোচনাকে অসঙ্গত মনে করেন এবং তাঁয় সমালোচনাকে তীব্র কষাঘাতও করেছেন। কোলেব্রুক সাহেবের গ্রন্থ বা প্রবন্ধ দেখে ক্যে এক জায়গায় বলেছেন-দ্বিতীয় ভাস্করাচার্য পূর্ব সূরীদের যে নামোল্লেখ করেছেন তার মধ্যে আর্যভটের নাম নেই।
মনে হয় ক্যে কোলেক্রক সাহেবের লেখা সঠিক হৃদয়ঙ্গম করতে পারেন নাই। কোলেব্রুক বলেছেন দ্বিতীয় ভাস্করাচার্য তাঁর বীজগণিত গ্রন্থে তিনজন পূর্বসূরীর নাম উল্লেখ করেছেন। ক্যে হয়তো এ থেকেই তাঁর উক্ত মত প্রকাশ করেন।
দ্বিতীয় ভাস্করাচার্যের সিদ্ধান্তশিরোমণি যদি পর্যালোচনা করা যায় তাহলে দেখা যাবে বেশ কিছু জায়গায় ভাস্করাচার্য আর্যভটের কাজের বা আর্যভটের আবিষ্কৃত কোন কোন ফলের উল্লেখ করেছেন। যেমন ধরা যাক বৃত্তের পরিধির সঙ্গে ব্যাসের অনুপাত উল্লেখ করতে গিয়ে দ্বিতীয় ভাস্করাচার্য সিদ্ধান্ত শিরোমণির গোলধ্যায়ের ভুবনকোশের ৫২ তম শ্লোকে বলেছেন:
“পৃষ্ঠক্ষেত্রফলং তথা যুগগুণত্রিংশচ্ছরাষ্টাদয়ো
ভূমেঃ কন্দুক জালবং কু-পরিধি ব্যাসাহতেঃ প্রস্ফুটম।”
অর্থাৎ ‘কথিত আছে কু-পরিধি ৪৯৬৭ যোজন, তাহার ব্যাস ১৫৮১২৯, তাহার
পৃষ্ঠ ক্ষেত্রফল ৭৮৪৩০৩৪ বর্গযোজন, শেষোক্ত কন্দুকজালের ন্যায়। কু-পরিধিকে ব্যাস দ্বারা গুণ করিলে প্রস্ফুটিত হইবে।’
(চলবে)
প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-১৪৬)