০৯:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
শ্রদ্ধাঞ্জলি: বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ হামিদুর রহমান এর ৫৪তম শাহাদাত বার্ষিকী সিরাজগঞ্জ কারাগারে আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু সেনাপ্রধানের সাথে পাকিস্তানের এর জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান এর সৌজন্য সাক্ষাৎ ছয়তলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে শিশুর মৃত্যু জুলাই সনদে স্বাক্ষর নিয়ে শর্ত রাখল এনসিপি বাংলাদেশ-পাকিস্তানের সম্পর্ক জোরদারে একসঙ্গে এগোতে অঙ্গীকার পৃথিবীতে এখনও ৬৬ কোটি মানুষ বিদ্যুৎবিহীন জীবন কাটাচ্ছে রণক্ষেত্রে (পর্ব-১১০) সাজালেন মুফতি মোহেববুল্লাহ’র অপহরণ, তদন্তে বেরিয়ে এলো মিথ্যা নাটক আদালতে চতুর্থ দিনের শুনানি শেষে জামায়াতের দাবি—তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে এবারের নির্বাচন সম্ভব নয়

বিশ্বায়নের পথে কোমর বেঁধে নেমেছে চীন

  • Sarakhon Report
  • ০১:৩৯:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
  • 126

যুক্তরাষ্ট্র যখন বিশ্ববাণিজ্যের নেতৃত্বস্থানীয় অবস্থান থেকে সরে গিয়ে ট্যারিফ যুদ্ধের পথে হাঁটছে, তখন চীন আরও জোর দিয়ে বিশ্বায়ন ও মুক্ত বাণিজ্যের পক্ষে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বজুড়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনীতিগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্ব দৃঢ় করছে বেইজিং। এমনটাই বলছেন চীনা অর্থনীতিবিদরা।

চায়না একাডেমি অব ম্যাক্রোইকোনমিক রিসার্চের গবেষক চাং ইয়ানশেং চায়না ডেইলিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে তারা বর্তমান বাণিজ্য ব্যবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত, তাই তারা ট্যারিফ যুদ্ধ শুরু করেছে। এই যুদ্ধ ভবিষ্যতে মুদ্রা, আর্থিক এবং প্রযুক্তি যুদ্ধেও রূপ নিতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন বিশ্ব বাণিজ্যব্যবস্থাকে ভাঙার চেষ্টা করছে। শক্তির মাধ্যমে ও ‘জঙ্গলের আইন’ প্রয়োগ করে অন্য দেশগুলোর কাছ থেকে নিজেদের ঘাটতি পূরণ করতে চাচ্ছে তারা।

চাং বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ভুলে যাচ্ছে যে, তাদের ডলার আধিপত্য ধরে রাখার জন্য দীর্ঘদিন ধরে বাণিজ্য ঘাটতিটা প্রয়োজন ছিল। এটি এমন একটি চক্র তৈরি করেছে, যেখানে ডলারের আধিপত্য বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতার ওপর নির্ভরশীল।

‘যুক্তরাষ্ট্র এখন আরও বেশি প্রতিরক্ষামূলক ও আত্মকেন্দ্রিক নীতির দিকে যাচ্ছে। যেই বহুপাক্ষিক অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক ব্যবস্থার নেতৃত্ব একসময় তারা দিত— এখন সেখান থেকে নিজেরাই সরে আসছে।’

চীনের এখন প্রধান কাজ হচ্ছে এই সংকটকে কীভাবে সুযোগে পরিণত করা যায়— সেই পথ খুঁজে বের করা। চাং বলেন, ‘আমাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ানো ও আরও বেশি খোলা নীতিমালার ওপর জোর দিতে হবে। এতে করে চীন হবে এমন একটি বাজার, যেখান থেকে গোটা বিশ্ব নতুন চাহিদা, নতুন অর্ডার এবং প্রবৃদ্ধির সুযোগ পাবে।’

তিনি বলেন, ‘মানুষের আয় বাড়ানো এবং আবাসন, প্রবীণদের সেবা ও চিকিৎসা খাতে চাপ কমাতে একটি শক্তিশালী সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। এতে করে চীনের অভ্যন্তরীণ চাহিদা শক্তিশালী হবে। ফলে অন্যান্য দেশও চীনের বাজারের দিকে তাকিয়ে থাকবে।’

‘এইভাবে, চীনের সঙ্গে অন্য দেশগুলোর সহযোগিতা যত ঘনিষ্ঠ হবে, বিশ্বও তত সমৃদ্ধ হবে। অবকাঠামোগত সংযোগ যত মজবুত হবে, ততই সমন্বিত উন্নয়ন সম্ভব হবে— এটি এক ধরনের ইতিবাচক চক্র’ বলেন চাং।

তিনি আরও বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সংগঠন আসিয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে হবে চীনকে।

৮ এপ্রিল থেকে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনথাও ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, সৌদি আরব, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং আসিয়ানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কলে বৈঠক করেন। এসব আলোচনায় ছিল অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানো এবং যুক্তরাষ্ট্রের ‘পাল্টা ট্যারিফ’ নীতির সমন্বয়।

চাং মনে করেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য যেন শুধু ধনী ও ক্ষমতাবানদের জন্য সীমাবদ্ধ না থাকে, বরং সব দেশ— বড় হোক বা ছোট— সমভাবে এতে লাভবান হোক, এটাই হওয়া উচিত বিশ্বের লক্ষ্য।

সিএমজি বাংলা

জনপ্রিয় সংবাদ

শ্রদ্ধাঞ্জলি: বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ হামিদুর রহমান এর ৫৪তম শাহাদাত বার্ষিকী

বিশ্বায়নের পথে কোমর বেঁধে নেমেছে চীন

০১:৩৯:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্র যখন বিশ্ববাণিজ্যের নেতৃত্বস্থানীয় অবস্থান থেকে সরে গিয়ে ট্যারিফ যুদ্ধের পথে হাঁটছে, তখন চীন আরও জোর দিয়ে বিশ্বায়ন ও মুক্ত বাণিজ্যের পক্ষে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বজুড়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনীতিগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্ব দৃঢ় করছে বেইজিং। এমনটাই বলছেন চীনা অর্থনীতিবিদরা।

চায়না একাডেমি অব ম্যাক্রোইকোনমিক রিসার্চের গবেষক চাং ইয়ানশেং চায়না ডেইলিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে তারা বর্তমান বাণিজ্য ব্যবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত, তাই তারা ট্যারিফ যুদ্ধ শুরু করেছে। এই যুদ্ধ ভবিষ্যতে মুদ্রা, আর্থিক এবং প্রযুক্তি যুদ্ধেও রূপ নিতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন বিশ্ব বাণিজ্যব্যবস্থাকে ভাঙার চেষ্টা করছে। শক্তির মাধ্যমে ও ‘জঙ্গলের আইন’ প্রয়োগ করে অন্য দেশগুলোর কাছ থেকে নিজেদের ঘাটতি পূরণ করতে চাচ্ছে তারা।

চাং বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ভুলে যাচ্ছে যে, তাদের ডলার আধিপত্য ধরে রাখার জন্য দীর্ঘদিন ধরে বাণিজ্য ঘাটতিটা প্রয়োজন ছিল। এটি এমন একটি চক্র তৈরি করেছে, যেখানে ডলারের আধিপত্য বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতার ওপর নির্ভরশীল।

‘যুক্তরাষ্ট্র এখন আরও বেশি প্রতিরক্ষামূলক ও আত্মকেন্দ্রিক নীতির দিকে যাচ্ছে। যেই বহুপাক্ষিক অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক ব্যবস্থার নেতৃত্ব একসময় তারা দিত— এখন সেখান থেকে নিজেরাই সরে আসছে।’

চীনের এখন প্রধান কাজ হচ্ছে এই সংকটকে কীভাবে সুযোগে পরিণত করা যায়— সেই পথ খুঁজে বের করা। চাং বলেন, ‘আমাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ানো ও আরও বেশি খোলা নীতিমালার ওপর জোর দিতে হবে। এতে করে চীন হবে এমন একটি বাজার, যেখান থেকে গোটা বিশ্ব নতুন চাহিদা, নতুন অর্ডার এবং প্রবৃদ্ধির সুযোগ পাবে।’

তিনি বলেন, ‘মানুষের আয় বাড়ানো এবং আবাসন, প্রবীণদের সেবা ও চিকিৎসা খাতে চাপ কমাতে একটি শক্তিশালী সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। এতে করে চীনের অভ্যন্তরীণ চাহিদা শক্তিশালী হবে। ফলে অন্যান্য দেশও চীনের বাজারের দিকে তাকিয়ে থাকবে।’

‘এইভাবে, চীনের সঙ্গে অন্য দেশগুলোর সহযোগিতা যত ঘনিষ্ঠ হবে, বিশ্বও তত সমৃদ্ধ হবে। অবকাঠামোগত সংযোগ যত মজবুত হবে, ততই সমন্বিত উন্নয়ন সম্ভব হবে— এটি এক ধরনের ইতিবাচক চক্র’ বলেন চাং।

তিনি আরও বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সংগঠন আসিয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে হবে চীনকে।

৮ এপ্রিল থেকে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনথাও ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, সৌদি আরব, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং আসিয়ানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কলে বৈঠক করেন। এসব আলোচনায় ছিল অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানো এবং যুক্তরাষ্ট্রের ‘পাল্টা ট্যারিফ’ নীতির সমন্বয়।

চাং মনে করেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য যেন শুধু ধনী ও ক্ষমতাবানদের জন্য সীমাবদ্ধ না থাকে, বরং সব দেশ— বড় হোক বা ছোট— সমভাবে এতে লাভবান হোক, এটাই হওয়া উচিত বিশ্বের লক্ষ্য।

সিএমজি বাংলা