১০:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

চীনের সহযোগিতায় কম্বোডিয়ার কাঠলিচু চাষিদের আয় বাড়ল যেভাবে

  • Sarakhon Report
  • ০৩:০০:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
  • 21

কম্বোডিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে কার্ডামোম পর্বতমালার উত্তরের প্রদেশ পাইলিনে হাজার হাজার কাঠলিচু গাছ এখন ফুলে ভরা। এখানকার চাষি সার চাম রোউন জানান, এ বছরও বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।

৬৩ বছর বয়সী চাম রৌউন ১৯৯৭ সাল থেকে কাঠলিচু বা লংগান চাষ করছেন। তার পরিবারিক খামারটির তিন দশকের উন্নতির পেছনে রয়েছে চীনা প্রতিষ্ঠান ছোংছিং চিনকুওইউয়ান ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোম্পানির সক্রিয় অংশগ্রহণ। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৮২ সালে ছোংছিংয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং গত ১০ বছর ধরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে ফল রপ্তানির বাণিজ্য করে আসছে।

২০২২ সালে পাইলিনে প্রতিষ্ঠানটি একটি নিজস্ব বাণিজ্যিক সংস্থা চালু করে, যখন থেকে কম্বোডিয়ার কাঠলিচু চীনে সরাসরি রপ্তানির অনুমোদন পায়।

চিনকুয়োইউয়ানের স্থানীয় শাখা চিন আই এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি (কম্বোডিয়া) কোম্পানির নির্বাহী পরিচালক পু চিয়ানফেই জানান, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ফল উৎপাদনে সম্ভাবনা থাকলেও বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার অভাব ও প্রযুক্তিগত সহায়তার ঘাটতির কারণে কৃষকেরা চ্যালেঞ্জের মুখে থাকেন।

তিনি বলেন, ‘চীনের আধুনিক কৃষি দক্ষতা শুধু উৎপাদনই বাড়ায়নি, বরং কৃষককেও বিজ্ঞানভিত্তিক চাষে উদ্বুদ্ধ করেছে।’

প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে ড্রিপ সেচ পদ্ধতি চালু করেছে, কৃষিকাজে ড্রোন ব্যবহার করছে, যা এক ঘণ্টায় এক হেক্টর জমিতে কীটনাশক স্প্রে করতে পারে মাত্র ১০ ডলার খরচে। এ ছাড়া স্থানীয় কৃষকের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমিয়েছে, উন্নত সার ও নির্ধারিত মাত্রার কীটনাশক সরবরাহ করছে এবং নিয়মিত চীনা বিশেষজ্ঞ পাঠিয়ে স্থানীয় চাষিদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।

সার রোউন বলেন, চিনকুওইউয়ানের সহায়তায় তার খামারে ফলন ২০০ টন থেকে বেড়ে ৩০০ টনে পৌঁছেছে। কাঠলিচুর মানও অনেক ভালো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘চীনা কোম্পানির অংশীদারিত্বে আমরা এখন আর বাজার চাহিদা নিয়ে উদ্বিগ্ন নই। কারণ তাদের বাণিজ্যিক নেটওয়ার্ক অনেক বিস্তৃত।’

কম্বোডিয়ার কাস্টমস বিভাগের তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালে চীন-কম্বোডিয়া বাণিজ্যের পরিমাণ ১৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে—যা দেশটির মোট বাণিজ্যের প্রায় ৩০ শতাংশ।

কম্বোডিয়ার উন্নয়ন পরিষদের মতে, গত বছর প্রায় ৬.৯ বিলিয়ন ডলারের ৪১৪টি বিনিয়োগ প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে, যার অর্ধেকেরও বেশি ছিল চীনা বিনিয়োগ।

চীন-কম্বোডিয়ার কৃষি সহযোগিতা শুধু ফলনই বাড়ায়নি, বরং স্থানীয় কৃষকের জীবনে স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন এনেছে। পাইলিনের কাঠলিচু এখন কেবল একটি কৃষি পণ্য নয়—এটি দুই দেশের বন্ধুত্বেরও প্রতীক হয়েছে।

সিএমজি বাংলা

চীনের সহযোগিতায় কম্বোডিয়ার কাঠলিচু চাষিদের আয় বাড়ল যেভাবে

০৩:০০:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

কম্বোডিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে কার্ডামোম পর্বতমালার উত্তরের প্রদেশ পাইলিনে হাজার হাজার কাঠলিচু গাছ এখন ফুলে ভরা। এখানকার চাষি সার চাম রোউন জানান, এ বছরও বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।

৬৩ বছর বয়সী চাম রৌউন ১৯৯৭ সাল থেকে কাঠলিচু বা লংগান চাষ করছেন। তার পরিবারিক খামারটির তিন দশকের উন্নতির পেছনে রয়েছে চীনা প্রতিষ্ঠান ছোংছিং চিনকুওইউয়ান ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোম্পানির সক্রিয় অংশগ্রহণ। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৮২ সালে ছোংছিংয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং গত ১০ বছর ধরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে ফল রপ্তানির বাণিজ্য করে আসছে।

২০২২ সালে পাইলিনে প্রতিষ্ঠানটি একটি নিজস্ব বাণিজ্যিক সংস্থা চালু করে, যখন থেকে কম্বোডিয়ার কাঠলিচু চীনে সরাসরি রপ্তানির অনুমোদন পায়।

চিনকুয়োইউয়ানের স্থানীয় শাখা চিন আই এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি (কম্বোডিয়া) কোম্পানির নির্বাহী পরিচালক পু চিয়ানফেই জানান, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ফল উৎপাদনে সম্ভাবনা থাকলেও বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার অভাব ও প্রযুক্তিগত সহায়তার ঘাটতির কারণে কৃষকেরা চ্যালেঞ্জের মুখে থাকেন।

তিনি বলেন, ‘চীনের আধুনিক কৃষি দক্ষতা শুধু উৎপাদনই বাড়ায়নি, বরং কৃষককেও বিজ্ঞানভিত্তিক চাষে উদ্বুদ্ধ করেছে।’

প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে ড্রিপ সেচ পদ্ধতি চালু করেছে, কৃষিকাজে ড্রোন ব্যবহার করছে, যা এক ঘণ্টায় এক হেক্টর জমিতে কীটনাশক স্প্রে করতে পারে মাত্র ১০ ডলার খরচে। এ ছাড়া স্থানীয় কৃষকের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমিয়েছে, উন্নত সার ও নির্ধারিত মাত্রার কীটনাশক সরবরাহ করছে এবং নিয়মিত চীনা বিশেষজ্ঞ পাঠিয়ে স্থানীয় চাষিদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।

সার রোউন বলেন, চিনকুওইউয়ানের সহায়তায় তার খামারে ফলন ২০০ টন থেকে বেড়ে ৩০০ টনে পৌঁছেছে। কাঠলিচুর মানও অনেক ভালো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘চীনা কোম্পানির অংশীদারিত্বে আমরা এখন আর বাজার চাহিদা নিয়ে উদ্বিগ্ন নই। কারণ তাদের বাণিজ্যিক নেটওয়ার্ক অনেক বিস্তৃত।’

কম্বোডিয়ার কাস্টমস বিভাগের তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালে চীন-কম্বোডিয়া বাণিজ্যের পরিমাণ ১৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে—যা দেশটির মোট বাণিজ্যের প্রায় ৩০ শতাংশ।

কম্বোডিয়ার উন্নয়ন পরিষদের মতে, গত বছর প্রায় ৬.৯ বিলিয়ন ডলারের ৪১৪টি বিনিয়োগ প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে, যার অর্ধেকেরও বেশি ছিল চীনা বিনিয়োগ।

চীন-কম্বোডিয়ার কৃষি সহযোগিতা শুধু ফলনই বাড়ায়নি, বরং স্থানীয় কৃষকের জীবনে স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন এনেছে। পাইলিনের কাঠলিচু এখন কেবল একটি কৃষি পণ্য নয়—এটি দুই দেশের বন্ধুত্বেরও প্রতীক হয়েছে।

সিএমজি বাংলা