সারাক্ষণ রিপোর্ট
সফরের উদ্দেশ্য
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স চার দিনের ভারত সফরে রয়েছেন প্রধানত দুটো বড় ইস্যু তুলতে: ওয়াশিংটন-দিল্লির বর্তমান ‘পারস্পরিক’ বাণিজ্য শুল্ক এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ভূ‑রাজনৈতিক উত্তেজনা। এসব বিষয়ের ওপর মোদির সঙ্গে বিস্তারিত মতবিনিময় তাদের প্রাথমিক উদ্দেশ্য।
সফরসূচী
- নয়াদিল্লি: পরিবার–স্ত্রী উষা (প্রথম ভারতীয়‑আমেরিকান হিন্দু যিনি যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস‑প্রেসিডেন্টের সহধর্মিণী) ও তিন সন্তান।
- মোদির সঙ্গে বৈঠক: সফরের প্রথম দিন নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হবে।
- আগ্রা ও জয়পুর: বৈঠকের পর ভ্যান্সরা দর্শন করবেন আগ্রার প্রতীকী তাজমহল ও ‘পিঙ্ক সিটি’ জয়পুর—ঐতিহাসিক ভবনের উজ্জ্বল রঙ‑ধামায় খ্যাত শহর।
বাণিজ্য ও শুল্ক যুদ্ধের প্রেক্ষাপট
- ফেব্রুয়ারিতে মোদি-ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আকার ২০০ বিলিয়ন ডলার থেকে বাড়িয়ে ৫০০ বিলিয়নে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
- ‘প্রথম ধাপের’ বাণিজ্য চুক্তিতে পণ্য আমদানি-রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ, পরবর্তী পর্যায়ে প্রযুক্তি স্থানান্তরসহ অন্যান্য বিষয় আলোচনা হবে।
- তীব্র শুল্ক যুদ্ধের কারণে হোয়াইট হাউসের ঘোষণা অনুযায়ী চীনের কিছু আমদানিতে ২৪৫% সর্বোচ্চ শুল্ক ধার্য হতে পারে; গত ২ এপ্রিল ভারতে রপ্তানিতে ২৭% শুল্ক আরোপের হুমকিও দেওয়া হয়েছিল, যা পরবর্তীতে ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কৌশলগত গুরুত্ব
- ভ্যান্সের সফর ট্রাম্প প্রশাসনকে এশিয়ার বড় এক শক্তির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজেদের কৌশলগত উদ্ভাবক ও চুক্তি‑সাধক হিসেবে উপস্থাপনের সুযোগ দিচ্ছে। একই সঙ্গে এতে চীনের ওপর অগ্রাধিকার চাপ প্রয়োগের সংকেত দেয়।
- পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রন্ধীর জৈস্বাল জানিয়েছেন, বৈঠকটি শুধু শুল্ক নিয়ে নয়, দুই দেশের সমগ্র দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পর্যালোচনার মঞ্চ হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
- প্রেরণা গান্ধি (বিবেকানন্দ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন): “শুল্ক অস্থিরতার মাঝে এই সফর ট্রাম্প প্রশাসনকে এ অঞ্চলে সাফল্যের পল্পতে শক্তিশালী করে তুলবে, অন্যদিকে অন্য শক্তিকে ভাবিয়ে রাখবে।”
- শামশাদ আহমদ খান (BITS পিলানি‑ডুবাই ক্যাম্পাস): “মোদির ওয়াশিংটন সফরে প্রকাশিত যৌথ বিবৃতির অগ্রগতি, প্রতিরক্ষা ও জ্বালানি নিরাপত্তা বিষয়ে সম্পর্ক আরও ঘন হতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতিও আলোচনায় আসবে।”
ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ ও প্রত্যাশা
- শুল্ক বিরোধ সমাধান দ্রুত না হলে আগামী পাঁচ বছরে ট্রেড দ্বিগুণের লক্ষ্যে বাধা সৃষ্টি হতে পারে।
- অর্থনৈতিক সম্পর্ক দুর্বল হলে তা ঐক্যবদ্ধ কৌশলগত অবস্থাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবে—এই উদ্বেগ মাথায় রেখে ভারতকে উপযুক্ত ছাড় দাবি করা উচিত বলে বিশেষজ্ঞেরা মনে করেন।
- চীনের আগ্রাসী নীতির প্রেক্ষাপটে ভারত ‘ইন্দো‑প্যাসিফিক’ কৌশলে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে; কোয়াড জোটে (অস্ট্রেলিয়া, জাপান, ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) অংশগ্রহণ ভারতের কৌশলগত গুরুত্ব আরও বাড়াবে।