সারাক্ষণ রিপোর্ট
মঙ্গলবার পাহালগামে ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হবার পর কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে—প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সৌদি আরব সফর কেটে দেশে ফিরেছেন, গৃহমন্ত্রী অমিত শাহ ঘটনার তদারকিতে সরাসরি কাশ্মীরে পৌঁছেছেন, আর বিরোধীদলনেতা রাহুল গাঁধীও ফোনে পরিস্থিতি নিয়ে যোগাযোগ করেছেন।
মোদি সৌদি সফর সংক্ষিপ্ত
মঙ্গলবার পাহালগামে ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যুর খবর পেয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি সৌদি আরব সফর থামিয়ে বুধবার সকালে দিল্লিতে অবতরণ করেন।
বিমানবন্দরে জরুরি ব্রীফিং
সৌদি সফর থেকে ফেরার পর বিমানবন্দরে পৌঁছে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রকের সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেন মোদি, পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করতে।
অমিত শাহ কাশ্মীরে
ঘটনার পরই মঙ্গলবারই গৃহমন্ত্রী অমিত শাহ কাশ্মীরে যান। পৌঁছামাত্র জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের ডিজি নলিন প্রভাত তাকে ব্রিফ করেন; সেখানে যৌথভাবে উপস্থিত ছিলেন লেফট্যান্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা, সিএম ওমর আবদুল্লাহ, কেন্দ্রীয় গৃহসচিব গোবিন্দ মোহন ও ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর পরিচালক তাপন ডেকে।
রাহুল গাঁধীর যোগাযোগ
বুধবার সকালে বিরোধী দলনেতা রাহুল গাঁধী ফোন করে অমিত শাহ, সিএম ওমর আবদুল্লাহ ও কংগ্রেসের কাশ্মীর এককাংশের সভাপতি তরিক কারার সঙ্গে কথা বলেন, নিহতদের পরিবারকে ন্যায়বিচার ও পূর্ণ সহায়তা নিশ্চিত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
খড়্গের কড়া অবস্থান
কংগ্রেস সভাপতি মাল্লিকার্জুন খড়্গেও মঙ্গলবার রাতে অমিত শাহকে ফোন করেন এবং “নিরপরাধ মানুষের ওপর চালানো এই বর্বর হামলার প্রতিবাদ” জানান। তিনি দোষীদের কঠোর শাস্তি ও নিহতদের ন্যায্য ন্যায়বিচার দাবি করেন।
নির্মলা সীতারামণের সফর সংক্ষিপ্ত
পাহালগাম হামলার পর কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণকেও যুক্তরাষ্ট্র ও পেরু সফর মাঝখানেই বন্ধ করে দেশে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়। তিনি আমেরিকায় ছয় দিনের সরকারি সফরে যান, তারপর পেরুতে পাঁচ দিনের সফরে যাওয়ার কথা ছিল।
বিশ্ব নেতাদের সমর্থন
ট্রাম্প, পুতিন ও কিয়ার স্টারমারের মতো বিশ্বনেতারা হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ভারতকে সম্পূর্ণ সমর্থন প্রকাশ করেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প মোদি এবং “অসাধারণ ভারতবাসী”দের প্রতি তাঁর গভীর সমবেদনা জানান।
হামলার সময় ও স্থান
হামলা ঘটে দুপুরে প্রায় ৩টার দিকে, কাশ্মীরের প্রখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র বায়সরানে—যা ‘মিনি সুইজারল্যান্ড’ নামে পরিচিত, ঘন পাইনবনে ঘেরা এক বিশাল মেঠে। হামলাকারীরা ভিন রাজ্য থেকে আসা পর্যটকদের লক্ষ্য করে ফায়ারিং শুরু করে, যারা ইটিন-খাওয়া, ঘোড়ার সওয়ারি বা পিকনিক উপভোগ করছিল।
TRF-র দায় স্বীকার
The Resistance Front (TRF) পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-এ-তৈবার সঙ্গে যুক্ত একটি সংগঠন—হামলার দায় স্বীকার করে।কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, হামলাকারীরা কিশ্তওয়ার দিয়ে অনুপ্রবেশ করে বায়সরানে ঢোকে।
হতাহতদের সংখ্যা
বুধবার সকালে সব ২৬ জন নিহত পর্যটকের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। নিহতদের মধ্যে কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশ ছাড়াও গুজরাট ও তামিলনাড়ুর কয়েকজন ছিলেন; কিছু আহতের মধ্যে মহারাষ্ট্র থেকেও রয়েছেন।
Leave a Reply