সারাক্ষণ রিপোর্ট
চাহিদা কমে ধীরগতি
২০২১ সালে দেশে প্রায় ৩৯ মিলিয়ন টন সিমেন্ট ব্যবহার হয়েছিল, যা ২০২৪ সালে নেমে এসেছে ৩৭.৬৬ মিলিয়নে। অবকাঠামো প্রকল্প কমে যাওয়া ও সামগ্রিক অর্থনৈতিক মন্থরতাই এই পতনের মূল কারণ।
উৎপাদন সক্ষমতার অর্ধেকই অব্যবহৃত
দেশি কারখানাগুলোর মোট কার্যকর সক্ষমতা এখন বছরে প্রায় ৮৩ মিলিয়ন টন—বাজার চাহিদার দ্বিগুণেরও বেশি। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল ও উড়াল এক্সপ্রেসওয়ের মতো মেগা প্রকল্পের আশায় গত দুই দশকে উৎপাদন বাড়ানো হলেও এখন সেই সক্ষমতার বড় অংশই খালি পড়ে আছে।
উচ্চ শুল্কে নির্মাতাদের কষ্ট
বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, কাঁচামাল ক্লিঙ্কারের ওপর ১৫ শতাংশ কাস্টমস শুল্ক আরোপিত—অন্য শিল্পখাতে যা মাত্র ৫ শতাংশ। পাশাপাশি ক্লিঙ্কারে ২ শতাংশ, স্ল্যাগে ৩ শতাংশ ও চুনাপাথরে ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর কাটা হয়, যা বেশির ভাগই ফেরত মেলে না।
কাস্টমসের অতিমূল্যায়ন আরও চাপ বাড়াচ্ছে
প্রতি টন ক্লিঙ্কারের প্রকৃত দাম ৪২ ডলার হলেও কাস্টমস তা ৬০ ডলার ধরে শুল্ক নেয়। স্ল্যাগ, ফ্লাই অ্যাশ ও জিপসামেও একই অবস্থা, ফলস্বরূপ উৎপাদন ব্যয় আরও বেড়ে যাচ্ছে।
কাঁচামালের দাম ২০ শতাংশ বেড়ে লাভ সংকুচিত
একটি ত্রৈমাসিকে বিভিন্ন কাঁচামালের গড় মূল্য ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে নির্মাতারা অতিরিক্ত খরচ পুরোপুরি পণ্যমূল্যে প্রতিফলিত করতে পারছেন না, ফলে মুনাফার মার্জিন ক্রমে সঙ্কুচিত হচ্ছে।
গ্রামীণ নির্মাণে কিছুটা ভরসা
সরকারি অবকাঠামোর কাজ কমলেও গ্রামীণ এলাকায় ব্যক্তি পর্যায়ের বাড়ি নির্মাণ ও ছোটখাটো প্রকল্পেই এখন সিমেন্টের বড় অংশ বিক্রি হচ্ছে।
শিল্পে কর্মসংস্থান ও কোম্পানির সংখ্যা
বর্তমানে প্রায় ৪০ টি সিমেন্ট কোম্পানি—এর মধ্যে ৭ টি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত—কার্যক্রম চালায়। খাতে সরাসরি প্রায় ৬০ হাজার ও পরোক্ষভাবে ১০ লাখেরও বেশি মানুষের কর্মসংস্থান রয়েছে।
Leave a Reply