সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারসংক্ষেপ
কেন কমছে যন্ত্রপাতির এলসি
বাংলাদেশের শিল্প-কারখানায় লাগে আমদানিনির্ভর মূলধনি যন্ত্রপাতি। তিন বছর আগে যেখানে এক অর্থবছরে ৬ বিলিয়ন ডলারের এলসি খোলা হয়েছিল, এবার সেই অঙ্ক ১ বিলিয়নের ঘরে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, ২০২৩-২৪-এ ২৪ শতাংশ কমার পরও ওই সময়ের আট মাসে ১ ৬৫ কোটি ডলারের এলসি খোলা হয়েছিল; চলতি অর্থবছরে সেই অঙ্ক ৩০ .১০ শতাংশ কমে গেছে।
ঋণ প্রবৃদ্ধির নিম্নগতি
ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ৬ .৮২ শতাংশে নেমেছে, যা ২০০৪ সালের পর সর্বনিম্ন। মুদ্রানীতিতে ধরা ৯ .৮০ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রাও অধরা। ঋণ প্রবৃদ্ধি কমায় বিনিয়োগ ও নতুন কর্মসংস্থান দুই-ই থমকে আছে।
ব্যাংকারদের উদ্বেগ
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি ব্যাংকের এমডি বলেন , এলসি ও ঋণ দুটিই ৩০ শতাংশের বেশি কমেছে—এটি অর্থনীতির জন্য তীব্র সতর্ক সংকেত। ইতিবাচক গতিপথে ফিরতে হলে এই দুই খাতে দ্রুত প্রবৃদ্ধি ফেরানো জরুরি।
উচ্চ সুদ ও অনিশ্চয়তার চাপ
ব্যাংক ঋণের সুদহার এখন প্রায় ১৫ শতাংশে; রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিনিয়োগকারীদের ‘অপেক্ষা-দেখি’-তে ঠেলে দিয়েছে। অন্তত দুই ডজন ব্যাংক তারল্য সংকটে ভুগছে, ফলে বিনিয়োগে অর্থ জোগানও কঠিন।
শ্রমবাজার ও দারিদ্র্য: বিশ্বব্যাংকের সতর্কতা
‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ৪ শতাংশ শ্রমিক কাজ হারিয়েছে; উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে মজুরি কমেছে। বিশ্বব্যাংক আশঙ্কা করছে, আরও ৩০ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যের ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
সামনে কী
ব্যবসায়ীরা বলছেন, অর্থনীতি ও রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা আসলেই বিনিয়োগ গতি পাবে। এখন দরকার সুদহার, ডলার জোগান ও নীতিগত স্পষ্টতার দ্রুত সমাধান—যাতে শিল্প উদ্যোক্তারা নিশ্চিত হয়ে নতুন প্রকল্পে হাত দিতে পারেন, আর কর্মসংস্থানও বাড়ে।
Leave a Reply