০৬:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫
ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশন কী কাজ করবে, কেন কিছু দলের আপত্তি? অস্বাভাবিক মৃত্যুতে ময়নাতদন্ত বাধ্যতামূলক কেন: আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ ৪০ বছরের ব্যবসায় এমন সংকট দেখিনি: এ কে আজাদ আধুনিক সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব খোকার লাঠি পুরাতন ব্রহ্মপুত্র: ভূমিকম্পই যাকে পুরাতন করে দেয় ভারতের চাল রপ্তানি সীমিতকরণে বিশ্ব বাজারে মূল্যবৃদ্ধি: বাংলাদেশের ওপর কী প্রভাব পড়বে? উপকূলীয় পানির লবণাক্ততা সংকট নিরসনে তরুণদের উদ্ভাবনী দৌড় গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিদের প্রবেশ থেকে জিম্মিদের মৃত্যুর শেষ দৃশ্য বাংলাদেশে কাঁঠালের উৎপাদন বেশি হলেও রপ্তানি কেন নয়?

পাকিস্তানের আসল অস্তিত্বসংকট পানি নিরাপত্তা

  • Sarakhon Report
  • ০৯:০০:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫
  • 56

ডন এ প্রকাশিত প্রতিবেদন:

ইউসুফ নাজার

ভারত সম্প্রতি ইন্ডাস পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করার মাধ্যমে আঞ্চলিক রাজনীতিতে এক গুরুতর মোড় নিয়েছে এবং পাকিস্তানের জন্য দ্রুততম সময়ে নিজেদের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব সুরাহার প্রয়োজনীয়তা জরুরী হয়ে উঠেছে। বহিরাগত চাপে যখন যৌথ নদীর পানির প্রবাহ সংকুচিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দেয়ঠিক তখনই চোলিস্তান খাল প্রকল্প নিয়ে দেশের ভেতরের কোন্দল পাকিস্তানের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তোলে। জনগণের জীবনরক্ষাকারী পানি যখন জাতির টিকে থাকার প্রশ্নতখন পানির নীতি নিয়ে বিভক্ত থাকার অবকাশ নেই।

প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টোর বৈঠকের পর সরকার চোলিস্তান খাল নির্মাণ সাময়িকভাবে স্থগিত রেখে কাউন্সিল অব কমন ইন্টারেস্টস (সিসিআই)-এর ঐকমত্যের ওপর নির্ভর করেছেযা স্বস্তিদায়ক এক উদ্যোগ।

চোলিস্তান খাল প্রকল্পটি অপ্রয়োজনীয় রাজনৈতিক বিরোধ উসকে দিয়েছিলঅথচ পাকিস্তানের আসল অস্তিত্বসংকট আসন্ন পানিসংকটভঙ্গুর সেচব্যবস্থা ও ক্রমবর্ধমান জলবায়ু পরিবর্তনএসবই সবচেয়ে গুরুতর। বিশেষজ্ঞেরা মরুভুমিতে খাল নির্মাণের যৌক্তিকতাই প্রশ্নবিদ্ধ করছেনএটিকে অকার্যকর ও টেকসই নয় বলে আখ্যায়িত করছেন।

২০২৫ সালের প্রথম দিকে গ্রিন পাকিস্তান ইনিশিয়েটিভ’ অধীনে শুরু হওয়া প্রকল্পটি অনিয়মিত বন্যার পানির উপর নির্ভরশীলঅথচ দীর্ঘদিনের পানিসংকটে ভোগা সিন্ধু প্রদেশকে উপেক্ষা করেছে। কোট্রি ব্যারাজে প্রবাহ আগের ২৬.৮০৭ মিলিয়ন একর-ফুট থেকে কমে গড়ে ১৪.০৩৫ এমএএফ-এ নেমে এসেছে। ১৩ মার্চ তারবেলা জলাধারের পানি মৃত স্তরের সামান্য ওপরে থাকায় ইরসা রবি মৌসুমের শেষ ভাগে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত পানি ঘাটতির সতর্কবার্তা জারি করেছে।

সিন্ধু প্রদেশের নেতৃত্ব ফেডারেল সরকারকে ১৯৯১ সালের পানি বণ্টন চুক্তি একতরফাভাবে লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে। জবাবে পিএমএল-এন নেতারা পাঞ্জাবকে বড় ভাই’ হিসেবে উল্লেখ করে সব কারিগরি বাধা দূর করার অস্পষ্ট আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু সিসিআইকে পাশ কাটিয়ে ফেডারেল নেতৃত্ব প্রাদেশিক অবিশ্বাসই জোরদার করেছে। খাল উদ্বোধনের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সিন্ধু প্রাদেশিক পরিষদ সর্বসম্মত প্রস্তাবে প্রকল্পটির নিন্দা জানিয়ে এটিকে সিন্ধুর প্রাণরসায়নের জন্য হুমকি’ বলে উল্লেখ করেছে।

রাজনৈতিক নেতারা বিবাদে লিপ্ত থাকায় পাকিস্তান আমাদের সময়ের সবচেয়ে অস্তিত্বসংকটজনক ক্ষেত্রপানি নিরাপত্তাএ পিছিয়ে পড়ছে। চরম মাত্রার পানিচাপে থাকা দেশগুলোর কাতারে পাকিস্তান প্রতি বছর নিজস্ব প্রাপ্য পানির ৬০ শতাংশের বেশি উত্তোলন করেযা টেকসই সীমা ছাড়িয়ে যায়। জাতিসংঘের পানিবিষয়ক প্রতিবেদন বলছেদক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ায় পানিচাপ ২৫ শতাংশের ওপরেআর গ্লোবাল ক্লাইমেট রিস্ক ইনডেক্সে পাকিস্তান পঞ্চম সর্বাধিক জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ দেশক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা ও অনিয়মিত বর্ষা কৃষিজীবিকা ও উপকূলীয় জনগোষ্ঠীকে হুমকির মুখে ফেলেছে।

পাকিস্তানের সেচ নেটওয়ার্কবিশ্বের বৃহত্তম সন্নিহিত খালব্যবস্থারক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ও পলিমাটির কারণে ৩০৪০ শতাংশ পানি ক্ষয় হয়ফলে কৃষকরা ব্যয়বহুল নলকূপের ওপর নির্ভর করতে বাধ্যএতে গ্রামীণ দারিদ্র্য বাড়ে এবং ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যায়। তবু সরকার বিদ্যমান অবকাঠামো সংস্কারের চেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ নতুন প্রকল্পেই বেশি মনোযোগ দিচ্ছে।

২০২২ সালের বিভীষণ বন্যায় ৩ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলজলবায়ু পরিবর্তনের তীব্রতার স্পষ্ট ইঙ্গিত। বিতর্কিত খালপ্রকল্প অগ্রাধিকার পেয়ে ফেডারেল সরকার শুধু সিন্ধুকে বিচ্ছিন্ন করেনিবরং রাজনৈতিক পুঁজি নষ্ট করেছেযা দিয়ে নিম্নোক্ত সমাধানগুলো করা যেত:

·       ড্রিপ ও স্প্রিঙ্কলার সেচ পদ্ধতি পানি ব্যবহারে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত সাশ্রয় ঘটিয়ে ফলন বাড়াতে পারেপাঞ্জাব ও সিন্ধু উভয় প্রদেশেই দ্রুত সম্প্রসারণ সম্ভব।

·       শতবর্ষী খাল নেটওয়ার্কের পাকা প্রাচীর নির্মাণ ও পলি পরিষ্কারে ৩০ শতাংশ পরিবহনক্ষতি পুনরুদ্ধার করা যায়ফলে নিচের অংশের ন্যায্যতা নিশ্চিত হয়।

·       চোলিস্তানে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও ভূগর্ভস্থ পানি পুনরায় ভরাটের মাধ্যমে স্থানীয় মানুষ ও বন্যপ্রাণী বাঁচিয়ে রেখে নদীর প্রবাহে চাপ কমানো সম্ভব।

·       লবণসহিষ্ণু ফসলের মাধ্যমে বায়োসেলাইন কৃষি অনুর্বর জমিতে জীবিকা নিশ্চিত করে মিষ্টি পানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে মরুভুমি সেচের টেকসই বিকল্প গড়ে তোলা যায়।

এই উদ্যোগগুলোর বাজেট মেগা-খাল প্রকল্পের তুলনায় নগণ্যতাৎক্ষণিকভাবে বাস্তবায়নযোগ্য এবং প্রদেশগুলোকে বিভক্ত না করে ঐক্যবদ্ধ করে।

খাল ঘিরে বিরোধ পাকিস্তানের ভেতরে অবিশ্বাস বাড়িয়েছে। কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন পিপিপি সমর্থন তুলে নেওয়ায় জোট সরকার পড়ে যেতে পারেআবার অনেকে মনে করছেন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গিয়ে পিপিপি কখনোই নৌকা নেড়ে সমর্থন প্রত্যাহার করবে না। আসন্ন সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে পিএমএল-এন ও পিপিপি উভয়ই খাল ইস্যুটিকে জাতীয় সংকটের বদলে রাজনৈতিক বাঁচা-মরার প্রশ্নে পরিণত করেছে।

চূড়ান্তভাবে পাকিস্তানের পরাজয় লুকিয়ে আছে তার পানি-ভবিষ্যৎ উপেক্ষার মধ্যেই। চোলিস্তান খালকে রাজনৈতিক ফুটবল বানিয়ে নেতারা তীব্র পানিচাপজরাজীর্ণ অবকাঠামো ও নাগরিকদের জীবন-ঝুঁকি ঢেকে রেখেছে। বাস্তু ও সামাজিক বিপর্যয় ঠেকাতে চাইলে পাকিস্তানকে বিভেদমূলক মেগা-প্রকল্প ছাড়িয়ে বৈজ্ঞানিক প্রমাণভিত্তিকঐকমত্য নির্ভর পানিব্যবস্থাপনায় ফিরে যেতে হবে।

১৯৯১ সালের পানি বণ্টন চুক্তি কঠোরভাবে অনুসরণস্বচ্ছ আন্তঃপ্রাদেশিক সংলাপ এবং বিজ্ঞানী-বিশেষজ্ঞদের সুপারিশকৃত কম-খরচঅধিক-প্রভাবময় সমাধান দ্রুত বাস্তবায়ন করেই ইন্দাস আমাদের যৌথ জীবনরেখা হয়ে থাকবেএবং সর্বাপেক্ষা জরুরি এই লড়াইয়ে পাকিস্তান প্রকৃত বিজয়ী হবে।

ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশন কী কাজ করবে, কেন কিছু দলের আপত্তি?

পাকিস্তানের আসল অস্তিত্বসংকট পানি নিরাপত্তা

০৯:০০:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

ডন এ প্রকাশিত প্রতিবেদন:

ইউসুফ নাজার

ভারত সম্প্রতি ইন্ডাস পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করার মাধ্যমে আঞ্চলিক রাজনীতিতে এক গুরুতর মোড় নিয়েছে এবং পাকিস্তানের জন্য দ্রুততম সময়ে নিজেদের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব সুরাহার প্রয়োজনীয়তা জরুরী হয়ে উঠেছে। বহিরাগত চাপে যখন যৌথ নদীর পানির প্রবাহ সংকুচিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দেয়ঠিক তখনই চোলিস্তান খাল প্রকল্প নিয়ে দেশের ভেতরের কোন্দল পাকিস্তানের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তোলে। জনগণের জীবনরক্ষাকারী পানি যখন জাতির টিকে থাকার প্রশ্নতখন পানির নীতি নিয়ে বিভক্ত থাকার অবকাশ নেই।

প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টোর বৈঠকের পর সরকার চোলিস্তান খাল নির্মাণ সাময়িকভাবে স্থগিত রেখে কাউন্সিল অব কমন ইন্টারেস্টস (সিসিআই)-এর ঐকমত্যের ওপর নির্ভর করেছেযা স্বস্তিদায়ক এক উদ্যোগ।

চোলিস্তান খাল প্রকল্পটি অপ্রয়োজনীয় রাজনৈতিক বিরোধ উসকে দিয়েছিলঅথচ পাকিস্তানের আসল অস্তিত্বসংকট আসন্ন পানিসংকটভঙ্গুর সেচব্যবস্থা ও ক্রমবর্ধমান জলবায়ু পরিবর্তনএসবই সবচেয়ে গুরুতর। বিশেষজ্ঞেরা মরুভুমিতে খাল নির্মাণের যৌক্তিকতাই প্রশ্নবিদ্ধ করছেনএটিকে অকার্যকর ও টেকসই নয় বলে আখ্যায়িত করছেন।

২০২৫ সালের প্রথম দিকে গ্রিন পাকিস্তান ইনিশিয়েটিভ’ অধীনে শুরু হওয়া প্রকল্পটি অনিয়মিত বন্যার পানির উপর নির্ভরশীলঅথচ দীর্ঘদিনের পানিসংকটে ভোগা সিন্ধু প্রদেশকে উপেক্ষা করেছে। কোট্রি ব্যারাজে প্রবাহ আগের ২৬.৮০৭ মিলিয়ন একর-ফুট থেকে কমে গড়ে ১৪.০৩৫ এমএএফ-এ নেমে এসেছে। ১৩ মার্চ তারবেলা জলাধারের পানি মৃত স্তরের সামান্য ওপরে থাকায় ইরসা রবি মৌসুমের শেষ ভাগে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত পানি ঘাটতির সতর্কবার্তা জারি করেছে।

সিন্ধু প্রদেশের নেতৃত্ব ফেডারেল সরকারকে ১৯৯১ সালের পানি বণ্টন চুক্তি একতরফাভাবে লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে। জবাবে পিএমএল-এন নেতারা পাঞ্জাবকে বড় ভাই’ হিসেবে উল্লেখ করে সব কারিগরি বাধা দূর করার অস্পষ্ট আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু সিসিআইকে পাশ কাটিয়ে ফেডারেল নেতৃত্ব প্রাদেশিক অবিশ্বাসই জোরদার করেছে। খাল উদ্বোধনের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সিন্ধু প্রাদেশিক পরিষদ সর্বসম্মত প্রস্তাবে প্রকল্পটির নিন্দা জানিয়ে এটিকে সিন্ধুর প্রাণরসায়নের জন্য হুমকি’ বলে উল্লেখ করেছে।

রাজনৈতিক নেতারা বিবাদে লিপ্ত থাকায় পাকিস্তান আমাদের সময়ের সবচেয়ে অস্তিত্বসংকটজনক ক্ষেত্রপানি নিরাপত্তাএ পিছিয়ে পড়ছে। চরম মাত্রার পানিচাপে থাকা দেশগুলোর কাতারে পাকিস্তান প্রতি বছর নিজস্ব প্রাপ্য পানির ৬০ শতাংশের বেশি উত্তোলন করেযা টেকসই সীমা ছাড়িয়ে যায়। জাতিসংঘের পানিবিষয়ক প্রতিবেদন বলছেদক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ায় পানিচাপ ২৫ শতাংশের ওপরেআর গ্লোবাল ক্লাইমেট রিস্ক ইনডেক্সে পাকিস্তান পঞ্চম সর্বাধিক জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ দেশক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা ও অনিয়মিত বর্ষা কৃষিজীবিকা ও উপকূলীয় জনগোষ্ঠীকে হুমকির মুখে ফেলেছে।

পাকিস্তানের সেচ নেটওয়ার্কবিশ্বের বৃহত্তম সন্নিহিত খালব্যবস্থারক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ও পলিমাটির কারণে ৩০৪০ শতাংশ পানি ক্ষয় হয়ফলে কৃষকরা ব্যয়বহুল নলকূপের ওপর নির্ভর করতে বাধ্যএতে গ্রামীণ দারিদ্র্য বাড়ে এবং ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যায়। তবু সরকার বিদ্যমান অবকাঠামো সংস্কারের চেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ নতুন প্রকল্পেই বেশি মনোযোগ দিচ্ছে।

২০২২ সালের বিভীষণ বন্যায় ৩ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলজলবায়ু পরিবর্তনের তীব্রতার স্পষ্ট ইঙ্গিত। বিতর্কিত খালপ্রকল্প অগ্রাধিকার পেয়ে ফেডারেল সরকার শুধু সিন্ধুকে বিচ্ছিন্ন করেনিবরং রাজনৈতিক পুঁজি নষ্ট করেছেযা দিয়ে নিম্নোক্ত সমাধানগুলো করা যেত:

·       ড্রিপ ও স্প্রিঙ্কলার সেচ পদ্ধতি পানি ব্যবহারে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত সাশ্রয় ঘটিয়ে ফলন বাড়াতে পারেপাঞ্জাব ও সিন্ধু উভয় প্রদেশেই দ্রুত সম্প্রসারণ সম্ভব।

·       শতবর্ষী খাল নেটওয়ার্কের পাকা প্রাচীর নির্মাণ ও পলি পরিষ্কারে ৩০ শতাংশ পরিবহনক্ষতি পুনরুদ্ধার করা যায়ফলে নিচের অংশের ন্যায্যতা নিশ্চিত হয়।

·       চোলিস্তানে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও ভূগর্ভস্থ পানি পুনরায় ভরাটের মাধ্যমে স্থানীয় মানুষ ও বন্যপ্রাণী বাঁচিয়ে রেখে নদীর প্রবাহে চাপ কমানো সম্ভব।

·       লবণসহিষ্ণু ফসলের মাধ্যমে বায়োসেলাইন কৃষি অনুর্বর জমিতে জীবিকা নিশ্চিত করে মিষ্টি পানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে মরুভুমি সেচের টেকসই বিকল্প গড়ে তোলা যায়।

এই উদ্যোগগুলোর বাজেট মেগা-খাল প্রকল্পের তুলনায় নগণ্যতাৎক্ষণিকভাবে বাস্তবায়নযোগ্য এবং প্রদেশগুলোকে বিভক্ত না করে ঐক্যবদ্ধ করে।

খাল ঘিরে বিরোধ পাকিস্তানের ভেতরে অবিশ্বাস বাড়িয়েছে। কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন পিপিপি সমর্থন তুলে নেওয়ায় জোট সরকার পড়ে যেতে পারেআবার অনেকে মনে করছেন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গিয়ে পিপিপি কখনোই নৌকা নেড়ে সমর্থন প্রত্যাহার করবে না। আসন্ন সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে পিএমএল-এন ও পিপিপি উভয়ই খাল ইস্যুটিকে জাতীয় সংকটের বদলে রাজনৈতিক বাঁচা-মরার প্রশ্নে পরিণত করেছে।

চূড়ান্তভাবে পাকিস্তানের পরাজয় লুকিয়ে আছে তার পানি-ভবিষ্যৎ উপেক্ষার মধ্যেই। চোলিস্তান খালকে রাজনৈতিক ফুটবল বানিয়ে নেতারা তীব্র পানিচাপজরাজীর্ণ অবকাঠামো ও নাগরিকদের জীবন-ঝুঁকি ঢেকে রেখেছে। বাস্তু ও সামাজিক বিপর্যয় ঠেকাতে চাইলে পাকিস্তানকে বিভেদমূলক মেগা-প্রকল্প ছাড়িয়ে বৈজ্ঞানিক প্রমাণভিত্তিকঐকমত্য নির্ভর পানিব্যবস্থাপনায় ফিরে যেতে হবে।

১৯৯১ সালের পানি বণ্টন চুক্তি কঠোরভাবে অনুসরণস্বচ্ছ আন্তঃপ্রাদেশিক সংলাপ এবং বিজ্ঞানী-বিশেষজ্ঞদের সুপারিশকৃত কম-খরচঅধিক-প্রভাবময় সমাধান দ্রুত বাস্তবায়ন করেই ইন্দাস আমাদের যৌথ জীবনরেখা হয়ে থাকবেএবং সর্বাপেক্ষা জরুরি এই লড়াইয়ে পাকিস্তান প্রকৃত বিজয়ী হবে।