সারাক্ষণ রিপোর্ট
প্রথম ত্রৈমাসিকে লোকসানের চিত্র
- ২০২৫ সালের জানুয়ারি-মার্চে চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্স ৭৪৭ মিলিয়ন ইউয়ান নেট লোকসান করেছে। এক বছর আগে প্রতিষ্ঠানটি ৭৫৬ মিলিয়ন ইউয়ানের মুনাফায় ছিল।
- আয় ২.৭ শতাংশ কমে ৪৩.৪ বিলিয়ন ইউয়ান হয়েছে।
- এয়ার চায়নার আয় প্রায় অপরিবর্তিত (৪০ বিলিয়ন ইউয়ান), কিন্তু নেট লোকসান ১.৬ বিলিয়ন থেকে ২ বিলিয়ন ইউয়ানে বেড়েছে।
- চায়না ইস্টার্ন সামান্য ০.৭ শতাংশ আয় বাড়িয়ে ৩৩.৪ বিলিয়ন ইউয়ান তুললেও লোকসান বেড়ে ৯৯৫ মিলিয়ন ইউয়ান হয়েছে।
লোকসানের কারণ
- ভ্রমণকারীদের চাহিদার বিন্যাস বদল, দ্রুতগতির রেলওয়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতা, বৈশ্বিক সরবরাহ-শৃঙ্খলের সীমাবদ্ধতা ও রেনমিনবির অবমূল্যায়ন—সব মিলিয়ে আয় চাপে পড়েছে।
- টিকিটের ঘরোয়া মূল্য কম থাকায় ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হচ্ছে।
- তিন কোম্পানিরই অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো দ্বি-অঙ্কে কমেছে; চায়না ইস্টার্নের ক্ষেত্রে প্রায় অর্ধেক হয়েছে।
অন্যান্য এয়ারলাইনের অবস্থা
- ক্ষুদ্রতর তালিকাভুক্ত বিমান সংস্থাগুলিও লাভে থাকলেও মুনাফা দ্রুত সঙ্কুচিত।
- হাইনান এয়ারলাইন্সের মুনাফা ৬০ শতাংশ কমে ২৭২ মিলিয়ন ইউয়ান; ব্যবসা ও সরকারি ভ্রমণের কমচাহিদাকে দায়ী করেছে।
- স্প্রিং এয়ারলাইন্স ও জুনেয়াও এয়ারলাইন্স আয় বাড়িয়েও যথাক্রমে ১৬ শতাংশ ও ৮ শতাংশ মুনাফা হারিয়েছে।
আঞ্চলিক প্রবণতা
- এশিয়া-প্যাসিফিকের সামগ্রিক চিত্র তুলনামূলক ভালো। মার্চে অঞ্চলের এয়ারলাইনগুলো ৩১ মিলিয়ন আন্তর্জাতিক যাত্রী পরিবহন করেছে—বছরওভার বছরে ৬.৯ শতাংশ বেশি।
- যাত্রী-কিলোমিটার (RPK) ৯ শতাংশ ও আসন-প্রাপ্যতা ১১ শতাংশ বেড়েছে।
- মালবাহী টন-কিলোমিটার (FTK) ৫.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে; ই-কমার্সের জোরালো চাহিদা ও ট্যারিফ আতঙ্কে আগাম চালানে এই প্রবৃদ্ধি।
ট্রাম্পের নতুন শুল্ক: সম্ভাব্য ধাক্কা
AAPA-র মহাপরিচালক সুবাস মেনন সতর্ক করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ট্যারিফ বাড়ালে ভোক্তা ও ব্যবসায়িক আস্থা কমে যাত্রী এবং কার্গো উভয় চাহিদাই নুইয়ে পড়তে পারে।
S&P গ্লোবাল রেটিংস-এর বিশ্লেষক র্যাচেল গেরিশও বলছেন, বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি মন্থর হলে আকাশপথের চাহিদা আরও কমে যেতে পারে।
বোয়িং ৭৩৭ MAX ফেরত
- বাণিজ্যযুদ্ধের উত্তেজনায় চীনা বিমান সংস্থাগুলো কিছু বোয়িং ৭৩৭ MAX বিমান ফেরত দিয়েছে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় স্বীকার করেছে।
- মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রকে ‘শুল্কের বড় ছুরি’ চালিয়ে বৈশ্বিক সরবরাহ-শৃঙ্খল ও আন্তর্জাতিক বিমানবাজারে ব্যাঘাত তৈরির জন্য দায়ী করেছে।
- তারা বলেছে, এতে চীনা বিমান সংস্থাগুলো ও বোয়িং—দু’পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সারসংক্ষেপ
করোনা-উত্তর কালেও চীনা রাষ্ট্রায়ত্ত তিন বৃহৎ এয়ারলাইন ধারাবাহিক লোকসানে আছে। ঘরোয়া ভাড়ার চাপ, বৈশ্বিক সরবরাহ-সংকট, মুদ্রার অবমূল্যায়ন ও ট্রাম্পের নতুন শুল্ক—সব মিলিয়ে তাদের ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হচ্ছে। আঞ্চলিক বাজারে যাত্রীর প্রবাহ বাড়লেও চাহিদা-মূল্য ভারসাম্য অর্জন না হলে শীঘ্রই লাভে ফেরা সম্ভব হবে না।