সারাক্ষণ রিপোর্ট
২৩ এপ্রিলের পাহেলগাম সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ পর্যটক নিহত হওয়ার পর দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা কয়েক ধাপ এগিয়ে যায়। ৯ মে রাতে পাকিস্তানের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ২৬টি স্থানে আঘাত করলে ভারত তা প্রতিহত করে এবং ১০ মে ভোরে পাল্টা অভিযানে নামে।
ভারতের পাল্টা অভিযান: লক্ষ্য ও ক্ষয়ক্ষতি
● ভোররাতে রাফিকি, মুরিদ, চকলা, রহিম ইয়ার খান, সুক্কুর ও চুনিয়ান ঘাঁটিতে নির্ভুল গোলাবর্ষণ ও যুদ্ধবিমান হামলা চালানো হয়।
● পাসরুরের রাডার কেন্দ্র ও সিয়ালকোটের বিমানঘাঁটিও টার্গেট হয়।
● অভিযানে ন্যূনতম বেসামরিক ক্ষতি নিশ্চিত করা হয়েছে বলে ভারতীয় বাহিনীর দাবি।
পাকিস্তানের দাবি ও ভারতের প্রতিক্রিয়া
পাকিস্তান নূর খান, মুরিদ ও রাফিকি ঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা বললেও প্রমাণ উপস্থাপন করেনি। ‘আফগানিস্তানে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করেছে’—এই দাবিকে পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি ‘কল্পনাপ্রসূত’ বলে উল্লেখ করেন এবং বিগত দেড় বছরে আফগান বেসামরিক স্থাপনায় একাধিকবার পাকিস্তানের হামলার কথা স্মরণ করিয়ে দেন।
যুদ্ধক্ষেত্রের বর্তমান অবস্থা
উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংহ জানান, পাকিস্তান সামরিক বাহিনী সীমান্তের সামনে সারিতে এগোচ্ছে; ভারতীয় বাহিনী উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। কর্নেল সোফিয়া কুরেশি জানান, পাকিস্তান শ্রীনগর, আওয়ানতিপুর ও উদমপুর ঘাঁটিতে হাসপাতাল ও বিদ্যালয়ের অংশে হামলা চালিয়ে ‘অপেশাদারি আচরণ’ করেছে।
বেসামরিক সতর্কতা ও বিমান চলাচল
● রাজস্থান‑এর বারমের, শ্রীগঙ্গানগর ও জোধপুরে রেড অ্যালার্ট; বাসিন্দাদের ঘরে ফেরার নির্দেশ।
● পাকিস্তান ৩:১৫ টায় সব অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ করে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত আকাশসীমা বন্ধ রাখে।
● ভারতের ৩২টি উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলীয় বিমানবন্দর ১৫ মে পর্যন্ত বেসামরিক উড়ান বন্ধ রেখেছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
জি‑৭ পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা পাহেলগাম হামলার নিন্দা জানিয়ে দুই পক্ষকে ‘সর্বোচ্চ সংযম’ দেখাতে ও সরাসরি সংলাপে বসতে আহ্বান করেছেন। তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন—আরও সামরিক উন্মত্ততা দক্ষিণ‑এশিয়ার স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি।
কাশ্মীরে বিস্ফোরণ ও বেসামরিক প্রাণহানি
শনিবার ভোর থেকে শ্রীনগর, জম্মু, রাজৌরি ও উদমপুর‑সহ নানা শহরে গোলাবর্ষণে তীব্র শব্দ শোনা যায়। রাজৌরির অতিরিক্ত জেলা উন্নয়ন কমিশনার রাজ কুমার ঠাপ্পা নিজ বাড়িতে পাকিস্তানের গোলায় নিহত হন।
অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা
● হরিয়ানার সিরসায় পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী গুলি করে ভূপাতিত করে; ধ্বংসাবশেষ শহর সদর থেকে ২ কিমি দূরে পড়ে।
● ভোর ৫ টার দিকে অমৃতসরের খাসা ক্যান্টের আকাশে একাধিক সশস্ত্র ড্রোন গুলি করে ধ্বংস করা হয়।
● আন্তর্জাতিক সীমান্তে বিএসএফ ‘লুনি’ এলাকায় সন্ত্রাসী লঞ্চ প্যাড ধ্বংস করে।
দৃঢ় অবস্থান
ভারতীয় সেনাবাহিনীর ভাষ্য, শত্রুপক্ষের প্রত্যেক আগ্রাসন অনুপাতে এবং দ্রুত জবাব দেওয়া হয়েছে; দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সংকল্প অটুট।