১২:৪২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

রমনা বোমা হামলার মামলায় হাইকোর্টের রায়: সাজা কমেছে অধিকাংশ আসামির

  • Sarakhon Report
  • ০৬:১২:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
  • 46

সারাক্ষণ রিপোর্ট

২০০১ সালে রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনায় করা হত্যা মামলায় হাইকোর্ট গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছেন। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে এই মামলার অধিকাংশ আসামির সাজা কমানো হয়েছে।

হাইকোর্টের রায়: যাবজ্জীবন ও ১০ বছরের সাজা

মঙ্গলবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় ঘোষণা করেন। এতে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি মাওলানা তাজউদ্দিনের দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে রূপান্তর করা হয়। একইসঙ্গে, যাবজ্জীবন পাওয়া শাহাদাতউল্লাহ জুয়েলের সাজা বহাল রাখা হয়।

অন্যদিকে, আরও ৯ জন আসামির সাজা কমিয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়। এদের মধ্যে রয়েছেন:

  • মাওলানা আকবর হোসেন
  • আরিফ হাসান
  • হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর
  • আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার
  • আবদুল হাই
  • মাওলানা শফিকুর রহমান
  • সাব্বির
  • শেখ ফরিদ
  • আবু তাহের

যাদের বিচার কার্যক্রম থেকে বাদ দেওয়া হয়

  • মুফতি হান্নান, যিনি সিলেটে গ্রেনেড হামলার মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছেন
  • আব্দুর রউফ ও ইয়াহিয়া, যাদের মৃত্যু হওয়ায় বিচার কার্যক্রম থেকে বাদ দেওয়া হয়

মামলার পটভূমি

২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ছায়ানটের আয়োজনে রমনা বটমূলে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ভয়াবহ বোমা হামলা চালানো হয়। এতে নয়জন ঘটনাস্থলে ও পরবর্তীতে আরও একজন হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।

ওইদিনই নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল চন্দ্র চন্দ রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করেন।

বিচারিক কার্যক্রমের ইতিহাস

  • ২০০৮ সালের ৩০ নভেম্বর সিআইডি ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়
  • ২০১৪ সালের ২৩ জুন বিচারিক আদালত হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করে
  • মামলাটি পরে ডেথ রেফারেন্স, জেল আপিল এবং ফৌজদারি আপিল হিসেবে হাইকোর্টে আসে
  • বিস্ফোরক মামলাটি এখনো ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন

পূর্বের বিচারিক আদালতের রায়

বিচারিক আদালত হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষ নেতাসহ আটজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা ছিলেন:

  • মুফতি আব্দুল হান্নান (মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে)
  • মাওলানা আকবর হোসেন
  • আরিফ হাসান সুমন
  • মাওলানা তাজউদ্দিন
  • হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর
  • মাওলানা আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার
  • মাওলানা আবদুল হাই
  • মাওলানা শফিকুর রহমান

যাবজ্জীবনপ্রাপ্তরা ছিলেন:

  • শাহাদাতউল্লাহ জুয়েল
  • সাব্বির
  • শেখ ফরিদ
  • আবদুর রউফ (মৃত)
  • ইয়াহিয়া (মৃত)
  • আবু তাহের

আইনজীবীদের অংশগ্রহণ

  • আসামিপক্ষে ছিলেন: এস এম শাহজাহান, সরওয়ার আহমেদ ও মো. শিশির মনির
  • রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন: ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী

রায়ের সময়সীমা

  • ১৮ ফেব্রুয়ারি শুনানি শেষ হয়
  • ৮ মে রায়ের জন্য দিন ধার্য করা হয়
  • ১৩ মে মঙ্গলবার রায় ঘোষণা সম্পন্ন হয়

এই রায় বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিচারিক অধ্যায় হয়ে থাকবে, যেখানে দীর্ঘ দুই দশক পর বিচারিক প্রক্রিয়া চূড়ান্ত রূপ পেল।

রমনা বোমা হামলার মামলায় হাইকোর্টের রায়: সাজা কমেছে অধিকাংশ আসামির

০৬:১২:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

২০০১ সালে রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনায় করা হত্যা মামলায় হাইকোর্ট গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছেন। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে এই মামলার অধিকাংশ আসামির সাজা কমানো হয়েছে।

হাইকোর্টের রায়: যাবজ্জীবন ও ১০ বছরের সাজা

মঙ্গলবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় ঘোষণা করেন। এতে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি মাওলানা তাজউদ্দিনের দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে রূপান্তর করা হয়। একইসঙ্গে, যাবজ্জীবন পাওয়া শাহাদাতউল্লাহ জুয়েলের সাজা বহাল রাখা হয়।

অন্যদিকে, আরও ৯ জন আসামির সাজা কমিয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়। এদের মধ্যে রয়েছেন:

  • মাওলানা আকবর হোসেন
  • আরিফ হাসান
  • হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর
  • আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার
  • আবদুল হাই
  • মাওলানা শফিকুর রহমান
  • সাব্বির
  • শেখ ফরিদ
  • আবু তাহের

যাদের বিচার কার্যক্রম থেকে বাদ দেওয়া হয়

  • মুফতি হান্নান, যিনি সিলেটে গ্রেনেড হামলার মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছেন
  • আব্দুর রউফ ও ইয়াহিয়া, যাদের মৃত্যু হওয়ায় বিচার কার্যক্রম থেকে বাদ দেওয়া হয়

মামলার পটভূমি

২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ছায়ানটের আয়োজনে রমনা বটমূলে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ভয়াবহ বোমা হামলা চালানো হয়। এতে নয়জন ঘটনাস্থলে ও পরবর্তীতে আরও একজন হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।

ওইদিনই নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল চন্দ্র চন্দ রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করেন।

বিচারিক কার্যক্রমের ইতিহাস

  • ২০০৮ সালের ৩০ নভেম্বর সিআইডি ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়
  • ২০১৪ সালের ২৩ জুন বিচারিক আদালত হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করে
  • মামলাটি পরে ডেথ রেফারেন্স, জেল আপিল এবং ফৌজদারি আপিল হিসেবে হাইকোর্টে আসে
  • বিস্ফোরক মামলাটি এখনো ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন

পূর্বের বিচারিক আদালতের রায়

বিচারিক আদালত হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষ নেতাসহ আটজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা ছিলেন:

  • মুফতি আব্দুল হান্নান (মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে)
  • মাওলানা আকবর হোসেন
  • আরিফ হাসান সুমন
  • মাওলানা তাজউদ্দিন
  • হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর
  • মাওলানা আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার
  • মাওলানা আবদুল হাই
  • মাওলানা শফিকুর রহমান

যাবজ্জীবনপ্রাপ্তরা ছিলেন:

  • শাহাদাতউল্লাহ জুয়েল
  • সাব্বির
  • শেখ ফরিদ
  • আবদুর রউফ (মৃত)
  • ইয়াহিয়া (মৃত)
  • আবু তাহের

আইনজীবীদের অংশগ্রহণ

  • আসামিপক্ষে ছিলেন: এস এম শাহজাহান, সরওয়ার আহমেদ ও মো. শিশির মনির
  • রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন: ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী

রায়ের সময়সীমা

  • ১৮ ফেব্রুয়ারি শুনানি শেষ হয়
  • ৮ মে রায়ের জন্য দিন ধার্য করা হয়
  • ১৩ মে মঙ্গলবার রায় ঘোষণা সম্পন্ন হয়

এই রায় বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিচারিক অধ্যায় হয়ে থাকবে, যেখানে দীর্ঘ দুই দশক পর বিচারিক প্রক্রিয়া চূড়ান্ত রূপ পেল।