রিয়্যানন গিডেন্স তাঁর কম্পিউটার স্ক্রিনে জুম‑এ ঢুকেই জানান, এ বছর তিনি কত নতুন প্রকল্প নিয়ে ছুটছেন। ডারহাম, নর্থ ক্যারোলিনা‑তে প্রথমবারের মতো আয়োজিত ‘বিস্কিটস অ্যান্ড ব্যাঞ্জোস’ উৎসবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কৃষ্ণাঙ্গ স্ট্রিং‑ব্যান্ড সমাবেশ গড়ে তুলতে চান। সেখানে বহু প্রতীক্ষিত ক্যারোলিনা চকোলেট ড্রপস‑এর পুনর্মিলনও ঘটছে। পাশাপাশি বেরোচ্ছে তাঁর নতুন অ্যালবাম ‘হোয়াট ডিড দ্য ব্ল্যাকবার্ড সে টু দ্য ক্রো’, যা মূলত ব্যাঞ্জো ও বেহালার নিরীক্ষাধর্মী সংলাপ।
মূলে ফেরার অ্যালবাম
এই রেকর্ডে গিডেন্স ব্যাঞ্জো, আর ক্যারোলিনা চকোলেট ড্রপস‑এর সহপ্রতিষ্ঠাতা জাস্টিন রবিনসন বেহালা বাজিয়েছেন। কোনো পার্কাশন বা গিটার নেই—শুধু দুই বন্ধু, পুরোনো লোকসঙ্গীতের তালে। গিডেন্সের কথায়, “অনেকে শুনে হয়তো বলবে, ‘এটা এত একঘেয়ে কেন?’ কিন্তু আবার কিছু মানুষ বলবে, ‘এমনটিই তো চেয়েছিলাম।’”
শিল্পবিরোধী, স্মৃতিবান্ধব
গিডেন্সের ধারণাটা তৈরি হয় এই আশঙ্কা থেকে—কাল তিনি না থাকলে তাঁদের গুরু জো থমসনের শেখানো বহু সুর হারিয়ে যাবে। তাই ঠিক করেন, আধুনিক সংগীতবাজারের কৃত্রিম বাগাড়ম্বরের বিপরীতে একেবারে ‘মৌলিক পুরোনো দিনের’ অ্যালবামই তিনি বড় লেবেলে প্রকাশ করবেন।
শিল্পী বনাম ইন্ডাস্ট্রি
ননসাচ রেকর্ডস তাঁর সৃষ্টিশীলতা মেনে নিলেও গিডেন্স স্বীকার করেন, পুরস্কার অনুষ্ঠান, মেকআপ—এসব ইন্ডাস্ট্রি‑সিদ্ধ রীতি তাঁকে মানতেই হয়, যেন আলোচনার কেন্দ্রে থেকে যায় সংগীত, সাজগোজ নয়।
কঠিন সময়ে সক্রিয়তাবাদ
গিডেন্স মনে করেন, সংকটকাল এলে দায়টা পড়ে সেই শিল্পীদের ওপর, যারা আগেই সোচ্চার ছিলেন। “যারা সবসময় চুপ ছিল, তাদেরও কি কিছু বলার সময় নয়?”—প্রশ্ন তোলেন তিনি।
কেনেডি সেন্টার অনুষ্ঠান বাতিল
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রতিষ্ঠানটির বোর্ড দখল করার পর গিডেন্স ২০২5‑এর কেনেডি সেন্টারের কনসার্ট বাতিল করে কাছের ‘দ্য অ্যান্থেম’ ক্লাবে নিয়ে যান। বসা-আসনের ফর্মাল শো থেকে ৫,০০০ জন ধারণক্ষমতা‑ওয়ালা স্ট্যান্ডিং ভেন্যুতে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হলেও তিনি চান, ওয়াশিংটনের দর্শকরা যেন স্বাচ্ছন্দ্যে তাঁর সঙ্গীত উপভোগ করতে পারেন।
বিয়ন্সের সঙ্গে ‘টেক্সাস হোল্ড ’এম’
বিয়ন্সের গানে ব্যাঞ্জো বাজানোর অভিজ্ঞতা গিডেন্সের কাছে মিশ্র। এতে ব্যাঞ্জো শেখার আগ্রহ বাড়লেও, ইন্ডাস্ট্রির ঊর্ধ্বমুখী বাণিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গি তাঁর ‘মিশন’‑এর সঙ্গে খাপ খায়নি। অর্থের জন্য নয়, সাংস্কৃতিক স্বীকৃতির আকাঙ্ক্ষায় তিনি এই কাজ করেন—এবং কৃষ্ণাঙ্গ সম্প্রদায়ের কাছ থেকে যে উষ্ণ গ্রহণযোগ্যতা পেলেন, তা তাঁকে আপ্লুত করেছে।
মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির লড়াই
গিডেন্স স্পষ্ট করে দেন, রূপ-সৌন্দর্যের মোড়কে তিনি সংগীত করেন না; করেন ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ন্যায়বোধের পক্ষে দাঁড়াতে। সেই আদর্শ যখন কেবল ‘লেনদেন’ হিসেবে দেখা হয়, তখনই তাঁর সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয়।