১১:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

স্মার্টফোন যুগের পতনঘণ্টা? আসছে বিকল্প

নতুন যুগের প্রযুক্তির সন্ধানে ৬.৪ বিলিয়ন ডলারের বাজি

গত সপ্তাহে ওপেনএআই ৬.৪ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে কিনেছে ব্রিটিশ ডিজাইনার স্যার জনি আইভের ডিজাইন হাউস ‘io’। যদিও এই প্রতিষ্ঠান এখনো কোনো পণ্য বাজারে আনেনিতবু এমন বিশাল অঙ্কের বিনিয়োগ প্রমাণ করেআইভের ওপর আস্থা অটুট। কারণতিনিই স্টিভ জবসের সঙ্গে মিলে আইফোনআইপ্যাড ও আইপডের মতো যুগান্তকারী পণ্যের রূপকার।

ওপেনএআই-এর প্রতিষ্ঠাতা স্যাম অল্টম্যান এখন আইভের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছেন একটি সম্পূর্ণ নতুন প্রযুক্তি ডিভাইস তৈরির লক্ষ্যেযার মাধ্যমে তারা স্মার্টফোনকে অপ্রাসঙ্গিক করে দিতে চান।

কী হবে এই নতুন ডিভাইস?

নতুন এই ডিভাইসটি সম্পর্কে এখনো কোনো নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। এটি দেখতে কেমন হবে বা কীভাবে কাজ করবেতা ধোঁয়াটে। তবে জনি আইভ এটিকে বর্ণনা করেছেন বিশ্বের সবচেয়ে দুর্দান্ত প্রযুক্তি” হিসেবে। উদ্দেশ্য একটাইএই ডিভাইস স্মার্টফোনের জায়গা দখল করবেযেটি আমরা প্রতিদিন সঙ্গে রাখি।

এই উদ্ভাবন যদি বাস্তবে রূপ নেয়তাহলে এটি স্মার্টফোন শিল্পের একটি বড় ধাক্কা হতে পারেএকটি খাতযার বৈশ্বিক বাজার প্রায় ৭০০ কোটির বেশি ফোন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

সমালোচনার ঝুঁকি এবং বাস্তবতা

অনেকে এই উদ্যোগকে অতিরঞ্জিত ভাবছেন। ওপেনএআই আগে কখনো কোনো হার্ডওয়্যার তৈরি করেনি। অন্যদিকেজনি আইভ বর্তমানে ৫৮ বছর বয়সীযেখানে আইফোন তৈরির সময় তিনি ছিলেন চল্লিশের কোঠার নিচে।

তবে ইতিহাস বলছেঅভিজ্ঞতা না থাকলেও আইভ-জবস যুগল মিলে আইফোনের মাধ্যমে প্রযুক্তির গতিপথ বদলে দিয়েছিলেন। সেই সময়ে অ্যাপলও ছিল ফোন নির্মাণে নবাগত। আজকের স্মার্টফোন বাজারও এমন এক স্থবিরতায় পৌঁছেছেযেখানে পরিবর্তনের জায়গা তৈরি হয়েছে।

স্মার্টফোন এখন আর উদ্ভাবনের প্রতীক নয়

গত এক দশকে স্মার্টফোনে তেমন কোনো মৌলিক পরিবর্তন আসেনি। প্রতিবছর গৎবাঁধা উন্নয়নআরও কিছু পিক্সেলসামান্য বেশি ব্যাটারিআর কিছু অ্যাপএই পর্যন্তই। নতুন ফোন কিনলেও সেটি আগেরটির চেয়ে খুব একটা আলাদা কিছু নয়।

এছাড়াস্মার্টফোন তৈরি হয়েছে মূলত মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য। এটি ইমেইল চেকছবি বিনিময় ও সামাজিক যোগাযোগে দারুণ হলেওএআই ব্যবহারের জন্য তা যথার্থ নয়।

জনি আইভ কি পারবে স্মার্টফোনকে হার মানাতে?

জনি আইভ ইতিমধ্যেই বুঝতে পেরেছেন যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নতুন ধরনের ডিভাইসের পথ খুলে দিয়েছে। এখন দরকার একজন বুদ্ধিদীপ্ত ডিজাইনারযিনি এর রূপ দিতে পারবেন।

এছাড়াস্মার্টফোনের নেতিবাচক দিকগুলোও সামনে আসছে। স্কুলে নিষেধাজ্ঞাকিশোরদের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তিতথ্য নিরাপত্তার ঝুঁকিসব মিলিয়ে এর বিকল্পের সময় এসেছে। এখনো যদি এই পরিবর্তন না হয়আগামী এক দশকে আমরা হয়তো নিজেদেরকেই প্রশ্ন করবোকীভাবে এতটা ক্ষমতা ফোনের হাতে দিয়েছিলাম?

আইভ ও অল্টম্যানের এই যুগলবন্দি হয়তো অনেকের চোখে হাইপ’—তবে তাদের প্রচেষ্টা অমূল্য হতে পারে। বিশ্বের সবচেয়ে দারুণ প্রযুক্তি” বানানো সহজ কাজ নয়তবু এই শিল্প একদিন বদলাবেই। আর হয়তো সেই পরিবর্তনের নেতৃত্বে থাকবে সেই মানুষটিযিনি একসময় স্মার্টফোনকে সৃষ্টি করেছিলেন।

স্মার্টফোন যুগের পতনঘণ্টা? আসছে বিকল্প

১২:৩০:৪৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫

নতুন যুগের প্রযুক্তির সন্ধানে ৬.৪ বিলিয়ন ডলারের বাজি

গত সপ্তাহে ওপেনএআই ৬.৪ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে কিনেছে ব্রিটিশ ডিজাইনার স্যার জনি আইভের ডিজাইন হাউস ‘io’। যদিও এই প্রতিষ্ঠান এখনো কোনো পণ্য বাজারে আনেনিতবু এমন বিশাল অঙ্কের বিনিয়োগ প্রমাণ করেআইভের ওপর আস্থা অটুট। কারণতিনিই স্টিভ জবসের সঙ্গে মিলে আইফোনআইপ্যাড ও আইপডের মতো যুগান্তকারী পণ্যের রূপকার।

ওপেনএআই-এর প্রতিষ্ঠাতা স্যাম অল্টম্যান এখন আইভের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছেন একটি সম্পূর্ণ নতুন প্রযুক্তি ডিভাইস তৈরির লক্ষ্যেযার মাধ্যমে তারা স্মার্টফোনকে অপ্রাসঙ্গিক করে দিতে চান।

কী হবে এই নতুন ডিভাইস?

নতুন এই ডিভাইসটি সম্পর্কে এখনো কোনো নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। এটি দেখতে কেমন হবে বা কীভাবে কাজ করবেতা ধোঁয়াটে। তবে জনি আইভ এটিকে বর্ণনা করেছেন বিশ্বের সবচেয়ে দুর্দান্ত প্রযুক্তি” হিসেবে। উদ্দেশ্য একটাইএই ডিভাইস স্মার্টফোনের জায়গা দখল করবেযেটি আমরা প্রতিদিন সঙ্গে রাখি।

এই উদ্ভাবন যদি বাস্তবে রূপ নেয়তাহলে এটি স্মার্টফোন শিল্পের একটি বড় ধাক্কা হতে পারেএকটি খাতযার বৈশ্বিক বাজার প্রায় ৭০০ কোটির বেশি ফোন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

সমালোচনার ঝুঁকি এবং বাস্তবতা

অনেকে এই উদ্যোগকে অতিরঞ্জিত ভাবছেন। ওপেনএআই আগে কখনো কোনো হার্ডওয়্যার তৈরি করেনি। অন্যদিকেজনি আইভ বর্তমানে ৫৮ বছর বয়সীযেখানে আইফোন তৈরির সময় তিনি ছিলেন চল্লিশের কোঠার নিচে।

তবে ইতিহাস বলছেঅভিজ্ঞতা না থাকলেও আইভ-জবস যুগল মিলে আইফোনের মাধ্যমে প্রযুক্তির গতিপথ বদলে দিয়েছিলেন। সেই সময়ে অ্যাপলও ছিল ফোন নির্মাণে নবাগত। আজকের স্মার্টফোন বাজারও এমন এক স্থবিরতায় পৌঁছেছেযেখানে পরিবর্তনের জায়গা তৈরি হয়েছে।

স্মার্টফোন এখন আর উদ্ভাবনের প্রতীক নয়

গত এক দশকে স্মার্টফোনে তেমন কোনো মৌলিক পরিবর্তন আসেনি। প্রতিবছর গৎবাঁধা উন্নয়নআরও কিছু পিক্সেলসামান্য বেশি ব্যাটারিআর কিছু অ্যাপএই পর্যন্তই। নতুন ফোন কিনলেও সেটি আগেরটির চেয়ে খুব একটা আলাদা কিছু নয়।

এছাড়াস্মার্টফোন তৈরি হয়েছে মূলত মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য। এটি ইমেইল চেকছবি বিনিময় ও সামাজিক যোগাযোগে দারুণ হলেওএআই ব্যবহারের জন্য তা যথার্থ নয়।

জনি আইভ কি পারবে স্মার্টফোনকে হার মানাতে?

জনি আইভ ইতিমধ্যেই বুঝতে পেরেছেন যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নতুন ধরনের ডিভাইসের পথ খুলে দিয়েছে। এখন দরকার একজন বুদ্ধিদীপ্ত ডিজাইনারযিনি এর রূপ দিতে পারবেন।

এছাড়াস্মার্টফোনের নেতিবাচক দিকগুলোও সামনে আসছে। স্কুলে নিষেধাজ্ঞাকিশোরদের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তিতথ্য নিরাপত্তার ঝুঁকিসব মিলিয়ে এর বিকল্পের সময় এসেছে। এখনো যদি এই পরিবর্তন না হয়আগামী এক দশকে আমরা হয়তো নিজেদেরকেই প্রশ্ন করবোকীভাবে এতটা ক্ষমতা ফোনের হাতে দিয়েছিলাম?

আইভ ও অল্টম্যানের এই যুগলবন্দি হয়তো অনেকের চোখে হাইপ’—তবে তাদের প্রচেষ্টা অমূল্য হতে পারে। বিশ্বের সবচেয়ে দারুণ প্রযুক্তি” বানানো সহজ কাজ নয়তবু এই শিল্প একদিন বদলাবেই। আর হয়তো সেই পরিবর্তনের নেতৃত্বে থাকবে সেই মানুষটিযিনি একসময় স্মার্টফোনকে সৃষ্টি করেছিলেন।