০৬:১০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার ডাক

সমকালের একটি শিরোনাম “নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার ডাক”

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে যাতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তার প্রস্তুতি নিতে শুরু করুন। প্রত্যেকে নিজ নিজ এলাকায় যান। জনগণের পাশে দাঁড়ান। জনগণের মন জয় করুন। সে অনুযায়ী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গতকাল বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির তিন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে নেতাকর্মীর উদ্দেশে এ কথা বলেন। বক্তৃতার এক পর্যায়ে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকেও ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান।

বেলা সাড়ে ৩টার দিকে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের যৌথ উদ্যোগে ঢাকা বিভাগীয় তারুণ্যের সমাবেশ শুরু হয়। তাতে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন তারেক রহমান।

তারেক রহমান বলেন, ‘ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে আমরা দ্রুত জনগণের সরাসরি ভোটে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ ও জবাবদিহিমূলক একটি সরকার দেখতে চাই।’ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। আমরা আবারও বলতে চাই, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’

এরপর সমাবেশের নেতাকর্মীদের নিয়ে স্লোগান ধরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘দিল্লি নয়, পিন্ডি নয়, নয় অন্য কোনো দেশ; সবার আগে বাংলাদেশ।’ এ কর্মসূচি ঘিরে সকাল ১০টা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে তিন সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী সমাবেশস্থলে জড়ো হতে থাকেন। নেতাকর্মীর স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে নয়াপল্টন। নেতাকর্মী ও সমর্থকদের উপস্থিতিতে নয়াপল্টন ও এর আশপাশের এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে একে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সমাবেশ বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা।

সবুজ, হলুদ ও লাল রঙের ক্যাপ ও টি-শার্ট পরে নেতাকর্মীরা সমাবেশে যোগ দেন। স্লোগান আর গান-নাচে প্রাণচঞ্চল হয়ে ওঠে নয়াপল্টনের পরিবেশ। মঞ্চে সংগীত পরিবেশন করেন জাতীয় পর্যায়ের শিল্পীরা।

 

আজকের পত্রিকার একটি শিরোনাম “অর্থনীতিতে পুনরুদ্ধারের লক্ষণ, রাজস্ব আদায় ও বিনিয়োগ বড় চ্যালেঞ্জ”

বিশ্বব্যাপী অস্থিরতা ও দেশীয় চ্যালেঞ্জের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধারের পথে এগোচ্ছে। রপ্তানি, রেমিট্যান্স, কৃষি ও শিল্প খাতসহ কিছু সূচকে বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। তবে সেই পুনরুদ্ধারের পথে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। কারণ দেশের ব্যাংকঋণ, নতুন বিনিয়োগ, রাজস্ব আদায়, উন্নয়ন ব্যয়সহ অর্থনীতির বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সূচকে এখনো পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে এলেও অর্থনীতির জন্য এখনো তা বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এমসিসিআই)।

গতকাল বুধবার এমসিসিআই প্রকাশিত চলতি অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত (জুলাই-মার্চ) অর্থনৈতিক পর্যালোচনা প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৭ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১০ দশমিক ৫২ শতাংশ বেশি। এই সময়ে রেমিট্যান্সপ্রবাহ ছিল ২১ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার, যা এক বছর আগের তুলনায় ২৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ বেশি। সর্বশেষ গত মার্চ মাসে রেমিট্যান্স ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে।

রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্সপ্রবাহ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল রাখতে এবং গ্রামীণ অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়তা করছে, যা সামগ্রিকভাবে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে।

এমসিসিআইয়ের প্রতিবেদন বলছে, ২০২৫ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতিও সামান্য পরিমাণে কমেছে। গত অর্থবছরের এই সময়ে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ১৫ হাজার ৭৫৫ মিলিয়ন ডলার, যা চলতি বছরের একই সময়ে ২ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ কমে ১৫ হাজার ৪৩১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে নেমেছে। যদিও ব্যাংকে অতিরিক্ত তারল্য রয়েছে, তবে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ৯ দশমিক ৮০ লক্ষ্যমাত্রার নিচে এখনো। উল্লেখিত সময় বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ। বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্প (এডিপি) বাস্তবায়ন গত ১২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন; এ সময় এডিপি বাস্তবায়ন প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এনবিআরের রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ শতাংশ পিছিয়ে আছে।

 

বণিকবার্তার একটি শিরোনাম “টানাপড়েন ও বয়কটের আহ্বান সত্ত্বেও ভারতের পণ্য আমদানি কমেনি বাংলাদেশে”

বৈরী এ সম্পর্কে চাপে পড়েছে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও উভয় দেশের ব্যবসা। তবে এর মধ্যেও বাংলাদেশে কমেনি ভারতের পণ্য রফতানি। চলতি ২০২৪-২৫ ভারতীয় অর্থবছরেও (এপ্রিল-মার্চ) প্রতিবেশী দেশটি থেকে ১ হাজার ১৪৫ কোটি ৫৯ লাখ ডলারের পণ্য আমদানি করা হয়েছে। তার আগের অর্থবছরে আনা হয়েছিল ১ হাজার ১০৬ কোটি ৫৮ লাখ ডলারের পণ্য। এ আমদানির বিপরীতে রফতানির পরিমাণ কম। ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাণিজ্য বিভাগের পরিসংখ্যানে এ চিত্র প্রকাশ পেয়েছে।

বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য গত পাঁচ দশকে ক্রমেই বড় হয়েছে। পণ্য আমদানিতে চীনের পরই বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎস দেশ ভারত। ফলে দেশটিরও পণ্য রফতানির শীর্ষ গন্তব্যের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। দুই দেশের মোট বাণিজ্যের ৮৫ শতাংশই ভারতের পণ্য রফতানি। এসব কারণেই গত বছর শুরু হওয়া সম্পর্কের তিক্ততা অর্থনৈতিক সম্পর্কের এ বাস্তবতায় এখন পর্যন্ত প্রভাব ফেলতে পারেনি বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। তবে শঙ্কা প্রকাশ করে ব্যবসায়ীরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদে রাজনৈতিক সরকারের অনুপস্থিতি একপর্যায়ে অর্থনৈতিক সম্পর্কেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

শেখ হাসিনা সরকার গত আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে তিক্ত হয়ে ওঠে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক। প্রথম কয়েক মাসে তিক্ততার প্রতিফলন সীমাবদ্ধ ছিল বাগযুদ্ধে। সম্প্রতি দুই দেশ একে অন্যের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। যদিও এ রাজনৈতিক টানাপড়েনের মধ্যেও বাংলাদেশে কমেনি ভারতের পণ্য রফতানি।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ব জনগোষ্ঠী যে একটা আন্তঃনির্ভরশীল বিশ্বে বাস করে, তারই প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে দুই দেশের বাণিজ্যে। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সঙ্গে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পর্যায়ে সম্পর্কের টানাপড়েন তৈরি হলেও কিন্তু ওই দুই দেশের বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক খুব একটা প্রভাবিত হয়নি। একই বিষয় ভারত ও চীনের ক্ষেত্রেও। আবার চীন ও জাপানের মধ্যেও এমন চিত্র। রাজনীতির বাস্তবতা, কূটনীতির বাস্তবতা ও অর্থনীতির বাস্তবতার মধ্যে মূলত বড় ধরনের ফারাক। গত তিন বা চার দশকের আন্তর্জাতিক সম্পর্কে এটা বেশ ভালোভাবেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

 

মানবজমিনের একটি শিরোনাম “অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা”

বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সহসভাপতি মো. রিপনুল হাসানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ঢাকাসহ সারা দেশের সব জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। এর আগে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রাজধানীর তাঁতীবাজার নিজ ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন বাজুসের সহসভাপতি মো. রিপনুল হাসান।

বাজুসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রিপনুল হাসানকে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আজ থেকে ঢাকাসহ সারা দেশের সব জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। একই সঙ্গে বাজুসের সহসভাপতিকে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় গ্রেপ্তারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বাজুসের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গুলজার আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক বাদল চন্দ্র রায়সহ কেন্দ্রীয় নেতারা।

 

নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার ডাক

০৯:০১:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

সমকালের একটি শিরোনাম “নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার ডাক”

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে যাতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তার প্রস্তুতি নিতে শুরু করুন। প্রত্যেকে নিজ নিজ এলাকায় যান। জনগণের পাশে দাঁড়ান। জনগণের মন জয় করুন। সে অনুযায়ী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গতকাল বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির তিন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে নেতাকর্মীর উদ্দেশে এ কথা বলেন। বক্তৃতার এক পর্যায়ে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকেও ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান।

বেলা সাড়ে ৩টার দিকে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের যৌথ উদ্যোগে ঢাকা বিভাগীয় তারুণ্যের সমাবেশ শুরু হয়। তাতে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন তারেক রহমান।

তারেক রহমান বলেন, ‘ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে আমরা দ্রুত জনগণের সরাসরি ভোটে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ ও জবাবদিহিমূলক একটি সরকার দেখতে চাই।’ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। আমরা আবারও বলতে চাই, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’

এরপর সমাবেশের নেতাকর্মীদের নিয়ে স্লোগান ধরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘দিল্লি নয়, পিন্ডি নয়, নয় অন্য কোনো দেশ; সবার আগে বাংলাদেশ।’ এ কর্মসূচি ঘিরে সকাল ১০টা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে তিন সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী সমাবেশস্থলে জড়ো হতে থাকেন। নেতাকর্মীর স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে নয়াপল্টন। নেতাকর্মী ও সমর্থকদের উপস্থিতিতে নয়াপল্টন ও এর আশপাশের এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে একে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সমাবেশ বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা।

সবুজ, হলুদ ও লাল রঙের ক্যাপ ও টি-শার্ট পরে নেতাকর্মীরা সমাবেশে যোগ দেন। স্লোগান আর গান-নাচে প্রাণচঞ্চল হয়ে ওঠে নয়াপল্টনের পরিবেশ। মঞ্চে সংগীত পরিবেশন করেন জাতীয় পর্যায়ের শিল্পীরা।

 

আজকের পত্রিকার একটি শিরোনাম “অর্থনীতিতে পুনরুদ্ধারের লক্ষণ, রাজস্ব আদায় ও বিনিয়োগ বড় চ্যালেঞ্জ”

বিশ্বব্যাপী অস্থিরতা ও দেশীয় চ্যালেঞ্জের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধারের পথে এগোচ্ছে। রপ্তানি, রেমিট্যান্স, কৃষি ও শিল্প খাতসহ কিছু সূচকে বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। তবে সেই পুনরুদ্ধারের পথে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। কারণ দেশের ব্যাংকঋণ, নতুন বিনিয়োগ, রাজস্ব আদায়, উন্নয়ন ব্যয়সহ অর্থনীতির বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সূচকে এখনো পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে এলেও অর্থনীতির জন্য এখনো তা বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এমসিসিআই)।

গতকাল বুধবার এমসিসিআই প্রকাশিত চলতি অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত (জুলাই-মার্চ) অর্থনৈতিক পর্যালোচনা প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৭ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১০ দশমিক ৫২ শতাংশ বেশি। এই সময়ে রেমিট্যান্সপ্রবাহ ছিল ২১ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার, যা এক বছর আগের তুলনায় ২৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ বেশি। সর্বশেষ গত মার্চ মাসে রেমিট্যান্স ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে।

রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্সপ্রবাহ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল রাখতে এবং গ্রামীণ অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়তা করছে, যা সামগ্রিকভাবে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে।

এমসিসিআইয়ের প্রতিবেদন বলছে, ২০২৫ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতিও সামান্য পরিমাণে কমেছে। গত অর্থবছরের এই সময়ে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ১৫ হাজার ৭৫৫ মিলিয়ন ডলার, যা চলতি বছরের একই সময়ে ২ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ কমে ১৫ হাজার ৪৩১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে নেমেছে। যদিও ব্যাংকে অতিরিক্ত তারল্য রয়েছে, তবে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ৯ দশমিক ৮০ লক্ষ্যমাত্রার নিচে এখনো। উল্লেখিত সময় বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ। বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্প (এডিপি) বাস্তবায়ন গত ১২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন; এ সময় এডিপি বাস্তবায়ন প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এনবিআরের রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ শতাংশ পিছিয়ে আছে।

 

বণিকবার্তার একটি শিরোনাম “টানাপড়েন ও বয়কটের আহ্বান সত্ত্বেও ভারতের পণ্য আমদানি কমেনি বাংলাদেশে”

বৈরী এ সম্পর্কে চাপে পড়েছে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও উভয় দেশের ব্যবসা। তবে এর মধ্যেও বাংলাদেশে কমেনি ভারতের পণ্য রফতানি। চলতি ২০২৪-২৫ ভারতীয় অর্থবছরেও (এপ্রিল-মার্চ) প্রতিবেশী দেশটি থেকে ১ হাজার ১৪৫ কোটি ৫৯ লাখ ডলারের পণ্য আমদানি করা হয়েছে। তার আগের অর্থবছরে আনা হয়েছিল ১ হাজার ১০৬ কোটি ৫৮ লাখ ডলারের পণ্য। এ আমদানির বিপরীতে রফতানির পরিমাণ কম। ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাণিজ্য বিভাগের পরিসংখ্যানে এ চিত্র প্রকাশ পেয়েছে।

বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য গত পাঁচ দশকে ক্রমেই বড় হয়েছে। পণ্য আমদানিতে চীনের পরই বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎস দেশ ভারত। ফলে দেশটিরও পণ্য রফতানির শীর্ষ গন্তব্যের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। দুই দেশের মোট বাণিজ্যের ৮৫ শতাংশই ভারতের পণ্য রফতানি। এসব কারণেই গত বছর শুরু হওয়া সম্পর্কের তিক্ততা অর্থনৈতিক সম্পর্কের এ বাস্তবতায় এখন পর্যন্ত প্রভাব ফেলতে পারেনি বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। তবে শঙ্কা প্রকাশ করে ব্যবসায়ীরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদে রাজনৈতিক সরকারের অনুপস্থিতি একপর্যায়ে অর্থনৈতিক সম্পর্কেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

শেখ হাসিনা সরকার গত আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে তিক্ত হয়ে ওঠে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক। প্রথম কয়েক মাসে তিক্ততার প্রতিফলন সীমাবদ্ধ ছিল বাগযুদ্ধে। সম্প্রতি দুই দেশ একে অন্যের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। যদিও এ রাজনৈতিক টানাপড়েনের মধ্যেও বাংলাদেশে কমেনি ভারতের পণ্য রফতানি।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ব জনগোষ্ঠী যে একটা আন্তঃনির্ভরশীল বিশ্বে বাস করে, তারই প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে দুই দেশের বাণিজ্যে। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সঙ্গে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পর্যায়ে সম্পর্কের টানাপড়েন তৈরি হলেও কিন্তু ওই দুই দেশের বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক খুব একটা প্রভাবিত হয়নি। একই বিষয় ভারত ও চীনের ক্ষেত্রেও। আবার চীন ও জাপানের মধ্যেও এমন চিত্র। রাজনীতির বাস্তবতা, কূটনীতির বাস্তবতা ও অর্থনীতির বাস্তবতার মধ্যে মূলত বড় ধরনের ফারাক। গত তিন বা চার দশকের আন্তর্জাতিক সম্পর্কে এটা বেশ ভালোভাবেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

 

মানবজমিনের একটি শিরোনাম “অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা”

বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সহসভাপতি মো. রিপনুল হাসানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ঢাকাসহ সারা দেশের সব জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। এর আগে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রাজধানীর তাঁতীবাজার নিজ ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন বাজুসের সহসভাপতি মো. রিপনুল হাসান।

বাজুসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রিপনুল হাসানকে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আজ থেকে ঢাকাসহ সারা দেশের সব জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। একই সঙ্গে বাজুসের সহসভাপতিকে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় গ্রেপ্তারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বাজুসের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গুলজার আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক বাদল চন্দ্র রায়সহ কেন্দ্রীয় নেতারা।