সমকালের একটি শিরোনাম “ভারী বৃষ্টি, জোয়ারে উপকূলে দুর্যোগ”
বাড়িঘরে হাঁটু থেকে কোমরপানি। গ্রামীণ সব সড়ক, ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে পুকুর ও খামারের মাছ। ভেঙে গেছে বাঁধ। ভাঙছে নদী। বন্ধ নৌ চলাচল। বিদ্যুৎহীন লাখো মানুষ। সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে ভারী বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাসে এমন অবস্থা দেশের অন্তত উপকূলীয় ১৪ জেলার।
এসব জেলার লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি। বিপর্যস্ত উপকূলীয় এলাকার জনজীবন। উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপ আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় এটি পটুয়াখালীর খেপুপাড়া দিয়ে উপকূল অতিক্রম করেছে। অমাবস্যা ও গভীর নিম্নচাপে উপকূলীয় জেলাগুলোতে জলোচ্ছ্বাস হয়েছে।
বৃষ্টিতে রাজধানীতে সড়ক ডুবে যানজট তৈরি হয়। গতকাল রাত ২টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মিরপুর, মহাখালী, বিমানবন্দর সড়ক, শ্যামলী, গাবতলীসহ অনেক এলাকায় ব্যাপক যানজট ছিল।
গত মঙ্গলবার সৃষ্ট লঘুচাপটি গতকাল গভীর নিম্নচাপে রূপ নেয়। ভোর থেকে শুরু হয় ভারী বৃষ্টি। মাঝেমধ্যে ছিল ঝোড়ো হাওয়া। ফুঁসতে থাকে নদনদী। গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত বৃষ্টি আর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায় গ্রামের পর গ্রাম। জোয়ারে ডুবেছে চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরা। ১ থেকে ৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে এসব অঞ্চল।
আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ বলেছেন, নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় হওয়ার আশঙ্কা নেই। ২৪ মে টেকনাফ দিয়ে মৌসুমি বায়ুর প্রবেশ ঘটে। এটা অনেক সক্রিয়। এ সক্রিয়তা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হতে দেয়নি। তবে এমন বৃষ্টি থাকতে পারে শনিবার পর্যন্ত।
আজকের পত্রিকার একটি শিরোনাম “ডিসেম্বরে নির্বাচন চায় শুধু একটি দল, দাবি ড. ইউনূসের”
দেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকার আগামী বছরের জুনের মধ্যে সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু শুধু একটি রাজনৈতিক দল সেই পর্যন্ত অপেক্ষা না করে ডিসেম্বরে নির্বাচন চাইছে বলে দাবি করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ বৃহস্পতিবার জাপানের রাজধানী টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে ৩০তম নিক্কেই ফোরামে ‘ফিউচার অব এশিয়া’র উদ্বোধনী অধিবেশনের প্রশ্নোত্তর পর্বে বক্তব্যে তিনি এই দাবি করেন।
পরে ফোরামের প্রশ্নোত্তর পর্বের এই কথোপকথন রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বিটিভিতে প্রচার করা হয়েছে। প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার তিনটি লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। প্রথমটি হচ্ছে সংস্কার, দ্বিতীয়টি হলো যারা অপরাধ করেছে (জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে) তাদের বিচার এবং তৃতীয়টি হলো নির্বাচন।
ইউনূস বলেন, নির্বাচন এ বছরের শেষে ডিসেম্বরে অথবা সর্বোচ্চ আগামী বছরের জুনে অনুষ্ঠিত হবে। সংস্কার কতটা সম্পন্ন করা হচ্ছে, পুরোপুরি তার ওপর নির্বাচন নির্ভর করবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যদি দেশকে আগের অবস্থায়, প্রতিষ্ঠানগুলোকে আগের অবস্থায় রেখে যেতে চাই, তাহলে ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা বলতে পারি। আমরা যদি খুব তড়িঘড়ি করি, কিছু সংস্কার করি এবং অন্যান্য সংস্কারের জন্য অপেক্ষা করতে পারি, তাহলে আমরা এটা (নির্বাচন) ডিসেম্বরে করতে পারি। তবে আমাদের যদি ভালো সংস্কার দরকার হয়, তাহলে আমাদের আরও ছয় মাস অপেক্ষা করতে হবে।’
বণিকবার্তার একটি শিরোনাম “গণতন্ত্রের নিরবচ্ছিন্ন পদযাত্রা পদে পদে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে”
দেশে গণতন্ত্রের নিরবচ্ছিন্ন পদযাত্রা পদে পদে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত ওই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন খালেদা জিয়া। সেখানে তার ধারণকৃত বক্তব্য প্রচার করা হয়।
বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, ‘শহীদ জিয়ার শাহাদতবার্ষিকীতে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হোক আমাদের অঙ্গীকার।’ গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সুশৃঙ্খলভাবে এগিয়ে চলার জন্য বিএনপির সব পর্যায়ের নেতাকর্মী ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি। খালেদা জিয়া বলেন, ‘মনে রাখবেন, সবার জন্য গণতন্ত্র ও উন্নয়নের মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধানের যে রাজনীতি শহীদ জিয়া রেখে গেছেন, তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হবে। আমরা তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।’
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার লড়াইয়ে জিয়াউর রহমান শাহাদতবরণ করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সে গণতন্ত্রের নিরবচ্ছিন্ন পদযাত্রা আজ পদে পদে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’ খুব শিগগির বাংলাদেশে গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা দেখতে পাবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যোগ দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি প্রস্তাবিত সংস্কার শেষ করে, যদি তাদের ইনটেনশন সঠিক থাকে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেবেন। তবে ডিসেম্বরের আগেও নির্বাচন দেয়া সম্ভব।’ এ সরকার ১০ মাসেও জাতীয় নির্বাচনের তারিখ দেয়নি। ফলে রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
মানবজমিনের একটি শিরোনাম “বাংলাদেশে দ্রুততম সময়ে নির্বাচন চায় ভারত”
বাংলাদেশে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচন দেখতে চায় ভারত। বৃহস্পতিবার দিল্লির বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধির জয়সওয়াল সাউথ ব্লকের রেগুলার মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ অভিমত ব্যক্ত করেন। নয়াদিল্লির মুখপাত্র বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছা ও ম্যান্ডেট নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচন ছাড়াও বাংলাদেশ-মিয়ানমার মধ্যকার মানবিক করিডোর, নয়াদিল্লির সঙ্গে ঢাকার বাণিজ্যিক সম্পর্ক বিষয়ক প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। মানস নামের এক সাংবাদিক জয়সওয়ালের কাছে জানতে চান, আমরা ঢাকায় নতুন করে প্রতিবাদের ঢেউ দেখতে পাচ্ছি। নির্বাচনের দাবিতে সোচ্চার হয়েছে বাংলাদেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দল। তারা সরকারের কাছে নির্দিষ্ট সময়সীমার দাবি জানিয়েছে। এ বছরের শেষে অথবা একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে তারা। কিন্তু এই প্রশ্নের উত্তর দেয়ার পরিবর্তে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মোহাম্মদ ইউনূস ভারতকে দোষারোপ করার চেষ্টা করছেন। বর্তমান সংকট নাকি ভারতীয় আধিপত্য প্রতিষ্ঠার এক ধরনের ষড়যন্ত্রের ফসল! এক্ষেত্রে আপনি এসব ঘটনাবলী এবং অন্তর্বর্তী সরকারের অভিযোগগুলোকে কীভাবে দেখেন? জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশ ইস্যুতে আমরা আমাদের অবস্থান খুব স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেছি। বিশেষ করে সেখানকার নির্বাচন নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা ধারাবাহিকভাবে এগুলো বলে যাচ্ছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছা ও ম্যান্ডেট নিশ্চিত করতে হবে। ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের গুঞ্জন নিয়ে প্রশ্ন আসে। ভারতীয় এক সাংবাদিক বলেন- বাংলাদেশে এখন অনিশ্চয়তা এবং অস্থিতিশীলতা চলছে। সেখানে অধ্যাপক ড. ইউনূসের পদত্যাগের কথা শোনা যাচ্ছে। ওই গুঞ্জনের মধ্যেই তিনি সর্বদলীয় বৈঠক আহ্বান করেন। ভারতের জন্য এ বিষয়টি কি উদ্বেগের? জবাবে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, আপনি জানেন আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে, আমরা এ বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে একটি ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক চাই। এমন একটি সম্পর্ক যা উভয় পক্ষের জনগণের আকাঙ্ক্ষা এবং স্বার্থ পূরণ করবে। এরপর আরেক সাংবাদিক ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ভারতের সঙ্গে ১৮০ মিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা চুক্তি বাতিল করেছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে আপনার কাছে কি কোনো আপডেট তথ্য আছে? জয়সওয়াল বলেন, দেখুন ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি সহযোগিতামূলক চুক্তি চলমান রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে যেমনটি আপনি উল্লেখ করলেন। ব্রিফিং শেষে আমি এ বিষয়ে আপনার সঙ্গে আলাপ করবো। বাংলাদেশ-মিয়ানমার করিডোর ইস্যুতেও প্রশ্ন করেন ভারতীয় দুই সাংবাদিক। তারা বলেন- এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, মিয়ানমারের সঙ্গে মানবিক করিডোর করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আপনি জানেন এখানে নিরাপত্তার বিষয় জড়িত। এ বিষয়টি কতোটা গুরুত্বপূর্ণ এবং ভারত তা কীভাবে দেখছে? প্রশ্নটি গ্রহণ করলেও নয়াদিল্লি মুখপাত্র এর সরাসরি জবাব দেননি।