ইলন মাস্কের ১২৯ দিনের ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে থাকা সময়টিতে সরকারি ব্যয় কমানো এবং সরকারি কাজকর্মে পরিবর্তনের জন্য সাহসী উদ্যোগ নেওয়া হয়, যা বিতর্কের সঙ্গেই ওয়াশিংটনের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।
সরকারি ব্যয় কাটছাঁট
মাস্ক একটি বড় লক্ষ্য নিয়ে যুক্ত হন — ফেডারেল সরকারের ব্যয় কমানো। শুরুতে ২ ট্রিলিয়ন ডলারের কাটছাঁটের লক্ষ্য ধীরে ধীরে কমে ১৫০ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। শেষ পর্যন্ত সরকারি কর্মক্ষমতা বিভাগ (ডোজ) ১৭৫ বিলিয়ন ডলার সঞ্চয় দাবি করে, যা সম্পদ বিক্রি, অনুদান বাতিল, প্রতারণা দূরীকরণ ও সরকারি কর্মী কমানোর মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে। যদিও কিছু কর্মী ছাঁটাইয়ের বিরুদ্ধে আদালতে রক্ষাকবচ পায় ও পুনর্বহাল হয়, তবুও অর্থনৈতিক সাশ্রয়ের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকে।
বিতর্ক ও সংশোধন
বৃহৎ কর্মী ছাঁটাই ও কর্মসূচি বন্ধ করার ফলে বিতর্ক সৃষ্টি হয়, কিছু ভুল ঘটলেও মাস্ক তা দ্রুত সংশোধনের প্রতিশ্রুতি দেন। উদাহরণস্বরূপ, মোজাম্বিকের একটি অঞ্চলকে হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার সঙ্গে ভুল বোঝার পর ত্রাণ কর্মসূচি কাটছাঁটের ক্ষেত্রে সংশোধন করা হয়। এছাড়া, সংবেদনশীল তথ্য ব্যবস্থাপনায় প্রবেশাধিকারের বিষয়েওprivacy উদ্বেগ দেখা দেয়। তবু জনমত ব্যয় কমানোর পক্ষে দৃঢ়।
ব্যবসা ও জনসেবার সেতুবন্ধন
মাস্কের অবাধ নির্বাচিত নয় এমন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে অবস্থান এবং তার ব্যক্তিগত ব্যবসার সঙ্গে সরকারি চুক্তির সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বিশেষ করে তার স্পেসএক্স এবং স্টারলিংক সংস্থাগুলো সরকার এবং বিদেশি সরকারের সঙ্গে কাজ করে। কিছু পক্ষের সন্দেহ, মাস্কের সরকারি ভূমিকা তার ব্যবসায়িক প্রসারের সুযোগ দিয়েছে। মাস্ক ও ট্রাম্প উভয়েই এই অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং সরকারি দক্ষতা বৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরেন।
আন্তর্জাতিক প্রভাব
মাস্কের নেতৃত্বে ইউএসএআইডি প্রোগ্রামগুলোর ব্যাপক কাটছাঁট হয়, যা ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির অংশ। এতে সুদানের দুর্ভিক্ষ মোকাবেলা, আফগান শরণার্থী মহিলাদের বৃত্তি, ভারতের ট্রান্সজেন্ডার স্বাস্থ্যসেবা প্রভৃতি প্রকল্পে প্রভাব পড়ে। এ কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বজুড়ে প্রভাব পরিবর্তনের প্রশ্ন উঠেছে।
অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও বিতর্ক
জনসম্মুখে ঐক্যের কথা বলা হলেও মাস্কের কাজকালে ট্রাম্প প্রশাসনের ভেতরে বাজেট নিয়ে মতপার্থক্যের খবর এসেছে। ট্রাম্প মাস্কের কাজের প্রশংসা করলেও কিছু মন্ত্রিসভার সদস্য ব্যয় কাটছাঁট নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করেন। মাস্কের পদত্যাগের দিনেই তিনি নতুন বাজেট বিল নিয়ে তার অসন্তোষ প্রকাশ করেন, যা প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ায় এবং অর্থনৈতিক কাটছাঁটের লক্ষ্যকে ক্ষুণ্ণ করে।