দিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত সাংবাদিক সম্মেলনে মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, “বাংলাদেশ সরকারকে আমি বলব তাদের দেশের গভর্ন্যান্স বা প্রশাসনিক ইস্যুগুলো সামলানোর দায়িত্ব কিন্তু তাদেরই।”
“এ ব্যাপারে আমরা যে ধরনের বক্তব্য দেখতে পাচ্ছি বা যে সব মন্তব্য আসছে, তা থেকে মনে হচ্ছে দায়টা যেন তারা অন্য কোনো দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।”
তিনি বাংলাদেশ সরকারকে উদ্দেশ্য করে আরও বলেন, “আপনাদের মনে করিয়ে দেব আপনাদের সামনে যে সব নিজস্ব চ্যালেঞ্জ আছে সেগুলো আপনাদেরই দেখতে হবে।”
“তার বদলে যদি বলেন বাইরের অমুক কারণে এই সংকট তৈরি হয়েছে, তাতে কিন্তু কোনো লাভ নেই – সমস্যার ওতে কোনো সমাধান হবে না!”
উল্লেখ করা যেতে পারে, গত রোববার (২৫শে মে) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে বেরিয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছিলেন, “প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ভারতীয় আধিপত্যবাদের কারণে দেশ বড় সংকটের মধ্যে রয়েছে। এ জন্য পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকা দরকার বলে প্রধান উপদেষ্টা মনে করছেন।”
রণধীর জয়সওয়াল (ফাইল ছবি)সেই মন্তব্যের পটভূমিতে এদিনের ব্রিফিংয়ে মি জয়সওয়ালকে প্রশ্ন করা হলে তিনি তার জবাবে ওই কথা বলেন।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রসঙ্গে
দিল্লিতে এদিন একজন সাংবাদিক জানতে চেয়েছিলেন, বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করতে চেয়েছেন এবং পরে সর্বদলীয় বৈঠকও করেছেন – এই পরিস্থিতিতে ভারত কি বিচলিত বোধ করছে?
জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, “আমরা দুই দেশের সম্পর্কটা যেভাবে দেখি – সেটা আমি আগেও অনেকবার বলেছি – যে আমরা একটা গঠনমূলক ও ইতিবাচক সম্পর্ক চাই!”
“কিন্তু সেই সম্পর্কটার ভিত্তি হতে হবে এমন – যাতে দুই দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও স্বার্থ সেখানে মিলিত হয়।”
তবে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ভারত কী ভাবছে, সে ব্যাপারে তিনি সরাসরি কোনও মন্তব্য করেননি।
রাখাইন মানবিক করিডর, নির্বাচন ইস্যু
বাংলাদেশ তাদের ভূখন্ডের ভেতর দিয়ে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের জন্য যে মানবিক করিডর দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে, সে ব্যাপারে ভারতের অবস্থান কী সেটাও জানতে চাওয়া হয়েছিল মুখপাত্রের কাছে।
বিএনপি নেতা তারেক রহমানও দাবি করেছেন ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে
জবাবে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “আমি আগেও অনেকবার বলেছি, এই ধরনের ডেভেলপমেন্টগুলো (যেটাতে নিরাপত্তাগত প্রশ্ন জড়িত থাকে) সেগুলোর দিকে সব সময়ই আমাদের সতর্ক নজর থাকে।”
ভারত বাংলাদেশে ‘তাড়াতাড়ি’ একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন দেখতে চায় বলেও এদিন আবারও মন্তব্য করেছেন মি. জয়সওয়াল।
বাংলাদেশে অনেকগুলো রাজনৈতিক দলই দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানাচ্ছে, সে ব্যাপারে মুখপাত্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, “আমরা বাংলাদেশে নির্বাচন আয়োজন নিয়ে বারবার একটা কথাই বলে আসছি – বাংলাদেশকে তাদের দেশের মানুষের রায় ও ম্যান্ডেট কী, সেটা যাচাই করতে হবে।
“আর সেটা করতে অন্তর্ভুক্তিমূলক, সুষ্ঠু ও অবাধ একটা নির্বাচনের মাধ্যমে – খুব তাড়াতাড়ি।”
বিবিসি নিউজ বাংলা
Sarakhon Report 



















