০৯:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
৫৪০ কোটি টাকার ‘মাদক অর্থ’ পাচারে অভিযুক্ত বিক্রম সিং মজিঠিয়া উনসানে সমুদ্র সৈকতের রিসোর্ট উদ্বোধন: পর্যটনে বাজি ধরছে উত্তর কোরিয়া ওএমএস ও টিসিবি ডিলার নিয়োগে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধের আহ্বান এসএসসি টেস্টের দুই দিনে শ্রীলঙ্কার রাজত্ব রাসেল ভাইপারের হুমকি: শহরেও ঢুকছে বিপজ্জনক সাপ! মঙ্গল অভিযানের প্রস্তুতি: মহাকাশে পাঠানো হলো গাঁজা গাছের বীজ ২০২৫ সালের সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ দেশ আইসল্যান্ড, শীর্ষ দশে সিঙ্গাপুর নৌকার বাংলাদেশ: জেলা-জেলা ঘিরে এক ইতিহাস ও সংস্কৃতি ইউরেনিয়াম এনরিচমেন্ট বা পরমাণু সমৃদ্ধকরণ কী? কীভাবে এটি করা হয়? নেতানিয়াহুর বিচার বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের

মনসুন সক্রিয়, আজ রাতে ও আগামীকাল বৃষ্টিপাত ও বজ্রসহ ঝড়ের সম্ভাবনা বেশি

দেশের অধিকাংশ এলাকায় মনসুন প্রবাহ সক্রিয় থাকার কারণে আজ রাত (১ জুন, ২০২৫) থেকে আগামীকাল (২ জুন, ২০২৫) পর্যন্ত দেশের আকাশ আর্দ্র, মেঘলা ও বৃষ্টিপাতে ছেয়ে যাবে। সকাল ও দুপুরে রোদ উঠতে পারে, তবে বিকেল—সন্ধ্যায় হঠাৎ বজ্রঝড়ের সম্ভাবনা তুলনামূলক বেশি। রাতের দিকে আর্দ্রতা বাড়ার কারণে বাতাস অস্বস্তিকর হবে, ঘুমোবার আগে জানালায় জলাক্ত ফোঁটা দেখা যেতে পারে। নিচে বিভাগভিত্তিকভাবে আবহাওয়া তুলে ধরা হলো:

ঢাকা ও কেন্দ্রীয় বাংলাদেশ

ঢাকার আকাশ আজ সন্ধ্যার পর থেকে ধীরে ধীরে মেঘে ঢাকা থাকবে। রাতের শুরু থেকেই বজ্রঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে। মাঝে মাঝে মাঝারি থেকে হালকা বৃষ্টি হতে পারে। রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকবে প্রায় ২৭°C–২৮°C, আর্দ্রতা থাকবে ৭০%–৯৫% এর মধ্যে ওঠানামা, যার ফলে বাতাসে তেমন শীতল ভাব পাওয়া যাবে না। সড়ক-ঘাটে জল জমে যেতে পারে, তাই রাতে বাইরে বের হওয়ার সময় রেইনকোট ও ছাতা সঙ্গে রাখা বাঞ্চনীয়।

আগামীকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আকাশ মেঘলা থাকলেও বৃষ্টিপাতের মাত্রা কম থাকবে। তবে বিকেল থেকে সন্ধ্যার পর ঢাকাসহ আশপাশের কিছু এলাকায় বজ্রসহ মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠবে প্রায় ৩৫°C–৩৬°C, যা দুপুরে তীব্র গরম অনুভূত করবে। আর্দ্রতা থাকবে ৬০%–৮০%। বিকালে বের হতে চাইলে হালকা উর্তু বা ঢেউ পোশাক পরা ভাল, কারণ বজ্রঝড়ের সময় হঠাৎ ঝকঝকে বাতাস বইতে পারে।

ঢাকা শহরবাসীর জন্য পরামর্শ: সন্ধ্যার পর যদি গাড়ি বা যেকোনো যানবাহন ব্যবহার করেন, হঠাৎ বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট ফেনা হয়ে গেলে গতি কমিয়ে চালান। রাতের দিকে বজ্রঝড়ের সময় বিদ্যুৎ বিভ্রাট হতে পারে—সাবধান থাকুন।

চট্টগ্রাম ও পার্বত্য অঞ্চল

চট্টগ্রাম অঞ্চলের আকাশ আজ রাতে বেশিরভাগ সময় মেঘে ঢাকা থাকবে। মাঝে মাঝে হালকা বৃষ্টি হতে পারে, তবে রাত জুড়ে ভারি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা কম। রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকবে প্রায় ৩০°C–৩১°C, আর্দ্রতা থাকবে ৮০%–৮৮% অবধি ওঠানামা। পার্বত্য এলাকায় (কক্সবাজার—রাঙামাটি—চান্দগাঁও) হাওয়া তুলনামূলক ঠান্ডা থাকবে, তবে সমুদ্র নিকটবর্তী হওয়ার কারণে আর্দ্রতা আরও বেশি থাকবে—৮৫%–৯২% এর মধ্যে ওঠানামা করবে।

সপ্তাহের শুরুতেই মেঘলা আকাশ, শহরে ফের প্রবল ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা

আগামীকাল চট্টগ্রাম শহরে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মেঘলা আকাশের কারণে কখনো কখনো মৃদু আলো আসতে পারে। বিকেলের দিকে আষাঢ়ের গরম বাতাস অনুভূত হবে, সাথে বজ্রঝড়ের আভাসও থাকবে। শহরের কতিপয় এলাকায় হঠাৎ কালো মেঘ এসে বজ্র, দমকা বাতাস ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত রূপ নেবে। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হবে ৩০°C–৩১°C, আর্দ্রতা থাকবে ৮২%–৮৬%। পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিকাংশ স্থানে রবিবারের দিন হালকা থেকে মাঝারি হারে বৃষ্টি হবে; পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে ছোট ছোট নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে।

চট্টগ্রামবাসীর জন্য পরামর্শ: বজ্রসহ বৃষ্টি চলাকালে খোলা জায়গায় শিশুদের খেলতে বের হতে দেবেন না। ঘর—বাড়ির বাইরের চাল-ছাউনি বা খোলা টিনের ছাউনি ঝুঁকিপূর্ণ হলে সময়মতো সরিয়ে নিন। গাড়ি চালকরা সকালে ব্রেকসহ যন্ত্রপাতি ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা পরীক্ষা করে নিন।

সিলেট ও উত্তরাঞ্চল

সিলেট বিভাগের আকাশ আজ রাতে প্রথম দিকে মেঘলা থাকবে, মাঝেমধ্যে হালকা বৃষ্টি হবে। রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা প্রায় ২৮°C–২৯°C, আর্দ্রতা ৮৮%–৯২% এর মধ্যে ওঠানামা করবে। পাহাড়ি মালভূমির নিকটবর্তী এলাকায় বর্ষার গন্ধ অনুভূত হবে; চা বাগানে কাজ করে এমন শ্রমিকদের জন্য রাতের আর্দ্রতা বেশ ধকলের কারণ হবে।

আগামীকাল সিলেটে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মেঘলা আকাশ থাকবে, মাঝেমধ্যে মাঝারি থেকে হালকা ধরনের বৃষ্টি হবে। বিকেলে বজ্রঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে; বিশেষ করে পাহাড়ি ঢালে শিলা ফেটে পড়ার ঝুঁকি থাকতে পারে। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে ৩২°C–৩৩°C, আর্দ্রতা ৮৫%–৯০%। উত্তরাঞ্চলের অন্যান্য শহরে (রংপুর, ময়মনসিংহ) সকালেও হালকা বৃষ্টি হতে পারে, তবে বিকাল থেকে বজ্রবৃষ্টি বেশি মাত্রায় পড়তে শুরু করবে। রংপুরে আগামীকাল দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে ৩৪°C–৩৫°C, আর্দ্রতা ৮৫%–৮৭%; ময়মনসিংহে ৩৩°C–৩৪°C, আর্দ্রতা ৮৮%–৯০%।

উত্তরাঞ্চলবাসীর জন্য পরামর্শ: পাহাড়ি এলাকার তীব্র বৃষ্টি হলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে; ঘর থেকে বের হলে সব‌াই পানি প্রবাহে সতর্ক থাকুন। বীজ বপন বা ফসল তোলার কাজ করার আগে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখে নিন, যাতে প্রয়োজনে কাজ স্থগিত করা যায়।

বৃষ্টি নিয়ে যে পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস

খুলোনাবরিশাল ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল

খুলনা, বরিশাল, বরগুনা, সুন্দরবনসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আজ রাতের দিকে আড়ালাভাবে মেঘ জমে থাকবে; রাতভর হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে। রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা প্রায় ২৭°C–২৮°C, আর্দ্রতা থাকবে ৮০%–৮৮% এর মধ্যে। সুন্দরবন এলাকায় নোনা জলবিন্দু নিয়ে বৃষ্টি হবে, যা মিঠা জলের সঙ্গে মিশে যাতায়াতের পথ আরও কঠিন করে তুলবে।

আগামীকাল সকাল থেকে মোটা মোটা মেঘ জমে থাকবে। বিকেলে কয়েকটি জায়গায় কালবৈশাখী ঝড়সহ বৃষ্টি হবে; প্রধানত খুলনা থেকে বরিশাল পর্যন্ত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আকাশ মেঘে ঢাকা থাকবে। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২°C–৩৩°C এর মধ্যে ওঠানামা করবে, আর্দ্রতা থাকবে ৮০%–৮৭%। বরিশালে নৌপথে দুর্বল ধারা সৃষ্টি হতে পারে; দ্রুত যাত্রীরা সতর্ক থাকুন।

দক্ষিণাঞ্চলবাসীর জন্য পরামর্শ: নদীমাতৃক এলাকার নৌকার চালকরা জলের তীব্র বৃদ্ধি বিবেচনায় জীবাণু রোধী জেলুটি সঙ্গে রাখুন। গবাদিপশু-পশু পালক, দুধ-দুগ্ধজাত কৃষকরা সাময়িকভাবে মাঠ পরিদর্শন সীমিত করুন বা গোয়ালঘরে অবস্থান করুন––বাড়ি-ঘরের আশেপাশে ভারী বৃষ্টির পর কয়েক দিন জলাবদ্ধতা থাকতে পারে।

রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চল

রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের আকাশ আজ রাতে আংশিক মেঘলা থেকে মেঘাচ্ছন্ন থাকবে। রংপুরের কিছু এলাকায় রাতের দিকে হালকা বৃষ্টির ফোঁটা পড়তে পারে, তবে গভীর বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা কম। রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা প্রায় ২৮°C–২৯°C, আর্দ্রতা ৮২%–৮৮% থাকবে। রাজশাহীতে সকালে মেঘে ঢাকা আবহাওয়ায় অল্প একটু রোদ দেখা যেতে পারে; বিকেলে মেঘ জমে যাওয়ার ফলে গরম অনুভূত হবে।

ঢাকাসহ চার বিভাগে ভারী বৃষ্টি হতে পারে

আগামী দিন দুপুরের পর বিকালে কয়েকটি জায়গায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে, বিশেষ করে রংপুরের আশপাশে। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রাজশাহীতে ৩৪°C–৩৫°C, রংপুরে ৩৪°C–৩৫°C; আর্দ্রতা থাকবে প্রায় ৮৪%–৮৭%। যে কোনো সময় বজ্রঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে; তাই মাঠে কাজ করার সময় ভারি মেশিনারি এড়িয়ে চলুন।

রাজশাহী—রংপুর অঞ্চলের জন্য পরামর্শ: সন্ধ্যার পর আকাশ মেঘে ঢাকা থাকবে এবং হালকা বৃষ্টি হতে পারে। বাড়ি—ঘরের ওপরে কোনো ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা থাকলে সরিয়ে নিন। কৃষকরা শাক-সবজি তুলতে গেলে হালকা উষ্ণ জামা ও ছাতা সঙ্গে রাখুন।

সার্বিক সতর্কীকরণ

বৃষ্টিস্নাত ও বজ্রঝড়: বিকেল—সন্ধ্যার পর বজ্রঝড় চলাকালে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও আকাশচুম্বি বজ্রপাতের ঝুঁকি থাকে। বাইরে কোনো উচ্চ কাঠামোর নীচে দাঁড়াবেন না।

সড়ক ও নদীপথে যাতায়াত: ভারি বৃষ্টিতে সড়ক ফেনা হয়ে যেতে পারে; ব্রেক ভালো মতো কাজ করছে কিনা পরীক্ষা করুন। ভোর বা দুপুরের পর নদীর জোয়ার বেড়ে পারে—নৌযাত্রীগণ সতর্ক থাকুন।

The sudden rise in lightening incidents sparks concern | Sangbad Pratidin

জলাবদ্ধতা: গলি—মহল্লার নিম্নস্থানে জল জমে যেতে পারে; পানিবাহিত রোগের ঝুঁকি থাকে। বাড়ির আশেপাশে পানি জমলে দ্রুত নিষ্কাশন ব্যবস্থা করুন এবং গর্ত ঢেকে দিন।

কৃষিজমি ও পশুপালন: জমিতে অতিরিক্ত পানি জমলে বীজ বপন বা তরিতরকারি বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ অঞ্চলে নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে; গোয়ালঘর ও ছাগলখানায় পানি জমছে কিনা দেখে নিন।

স্বাস্থ্যজনিত সতর্কতা: আর্দ্রতা বাড়ার কারণে দাগা পড়ে যাওয়া, ফাঙ্গাস—এই ধরনের ত্বকগত সমস্যা হতে পারে। বয়স্ক ও শিশুদের শ্বাসকষ্ট হলে দ্রুত শীতল পরিবেশে নিয়ে যান অথবা প্রয়োজনমতো হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।

বিদ্যুৎ বিভ্রাট: বজ্রঝড়ের সময় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সম্ভাবনা থাকে। জরুরি ফোন চার্জার ও পোর্টেবল ল্যাম্প সঙ্গে রাখুন।

বাংলাদেশে আজ রাত (১ জুন) ও আগামীকাল (২ জুন) আবহাওয়া মার্জিত মনসুনের ছোঁয়া নিয়ে বৃষ্টি ও বজ্রঝড়ের মিশ্র চিত্র দেখাবে। ঢাকাসহ কেন্দ্রীয় শহরগুলোতে সন্ধ্যার পর বজ্রঝড়ের সম্ভাবনা, চট্টগ্রাম—সিলেট—ময়মনসিংহ অঞ্চলে বিকেলে বৃষ্টি, খুলনা—বরিশাল—সুন্দরবনাঞ্চলে কালবৈশাখী ঝড়ের আভাস, এবং উত্তরাঞ্চলে হালকা বৃষ্টি স্থিতিশীল থাকতে পারে। রাতের আর্দ্রতা বেশি থাকবে, দিনের তাপমাত্রা ৩০°C–৩৫°C এর মধ্যে ওঠানামা করবে। কৃষি, পরিবহন ও জনস্বাস্থ্যের দিক থেকে সতর্কতা অবলম্বন করে সবাই যেন ঝামেলা এড়িয়ে নিরাপদে চলাচল ও কাজ করতে পারে—এটাই মূল চ্যালেঞ্জ। উক্ত আবহাওয়ার হালচাল জানতে নিয়মিত স্থানীয় আবহাওয়া অফিস ও সংবাদমাধ্যমের আপডেট দেখুন, যাতে প্রয়োজনমতো পূর্বসতর্কতা নেওয়া যায়।

৫৪০ কোটি টাকার ‘মাদক অর্থ’ পাচারে অভিযুক্ত বিক্রম সিং মজিঠিয়া

মনসুন সক্রিয়, আজ রাতে ও আগামীকাল বৃষ্টিপাত ও বজ্রসহ ঝড়ের সম্ভাবনা বেশি

০৭:২৪:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫

দেশের অধিকাংশ এলাকায় মনসুন প্রবাহ সক্রিয় থাকার কারণে আজ রাত (১ জুন, ২০২৫) থেকে আগামীকাল (২ জুন, ২০২৫) পর্যন্ত দেশের আকাশ আর্দ্র, মেঘলা ও বৃষ্টিপাতে ছেয়ে যাবে। সকাল ও দুপুরে রোদ উঠতে পারে, তবে বিকেল—সন্ধ্যায় হঠাৎ বজ্রঝড়ের সম্ভাবনা তুলনামূলক বেশি। রাতের দিকে আর্দ্রতা বাড়ার কারণে বাতাস অস্বস্তিকর হবে, ঘুমোবার আগে জানালায় জলাক্ত ফোঁটা দেখা যেতে পারে। নিচে বিভাগভিত্তিকভাবে আবহাওয়া তুলে ধরা হলো:

ঢাকা ও কেন্দ্রীয় বাংলাদেশ

ঢাকার আকাশ আজ সন্ধ্যার পর থেকে ধীরে ধীরে মেঘে ঢাকা থাকবে। রাতের শুরু থেকেই বজ্রঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে। মাঝে মাঝে মাঝারি থেকে হালকা বৃষ্টি হতে পারে। রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকবে প্রায় ২৭°C–২৮°C, আর্দ্রতা থাকবে ৭০%–৯৫% এর মধ্যে ওঠানামা, যার ফলে বাতাসে তেমন শীতল ভাব পাওয়া যাবে না। সড়ক-ঘাটে জল জমে যেতে পারে, তাই রাতে বাইরে বের হওয়ার সময় রেইনকোট ও ছাতা সঙ্গে রাখা বাঞ্চনীয়।

আগামীকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আকাশ মেঘলা থাকলেও বৃষ্টিপাতের মাত্রা কম থাকবে। তবে বিকেল থেকে সন্ধ্যার পর ঢাকাসহ আশপাশের কিছু এলাকায় বজ্রসহ মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠবে প্রায় ৩৫°C–৩৬°C, যা দুপুরে তীব্র গরম অনুভূত করবে। আর্দ্রতা থাকবে ৬০%–৮০%। বিকালে বের হতে চাইলে হালকা উর্তু বা ঢেউ পোশাক পরা ভাল, কারণ বজ্রঝড়ের সময় হঠাৎ ঝকঝকে বাতাস বইতে পারে।

ঢাকা শহরবাসীর জন্য পরামর্শ: সন্ধ্যার পর যদি গাড়ি বা যেকোনো যানবাহন ব্যবহার করেন, হঠাৎ বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট ফেনা হয়ে গেলে গতি কমিয়ে চালান। রাতের দিকে বজ্রঝড়ের সময় বিদ্যুৎ বিভ্রাট হতে পারে—সাবধান থাকুন।

চট্টগ্রাম ও পার্বত্য অঞ্চল

চট্টগ্রাম অঞ্চলের আকাশ আজ রাতে বেশিরভাগ সময় মেঘে ঢাকা থাকবে। মাঝে মাঝে হালকা বৃষ্টি হতে পারে, তবে রাত জুড়ে ভারি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা কম। রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকবে প্রায় ৩০°C–৩১°C, আর্দ্রতা থাকবে ৮০%–৮৮% অবধি ওঠানামা। পার্বত্য এলাকায় (কক্সবাজার—রাঙামাটি—চান্দগাঁও) হাওয়া তুলনামূলক ঠান্ডা থাকবে, তবে সমুদ্র নিকটবর্তী হওয়ার কারণে আর্দ্রতা আরও বেশি থাকবে—৮৫%–৯২% এর মধ্যে ওঠানামা করবে।

সপ্তাহের শুরুতেই মেঘলা আকাশ, শহরে ফের প্রবল ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা

আগামীকাল চট্টগ্রাম শহরে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মেঘলা আকাশের কারণে কখনো কখনো মৃদু আলো আসতে পারে। বিকেলের দিকে আষাঢ়ের গরম বাতাস অনুভূত হবে, সাথে বজ্রঝড়ের আভাসও থাকবে। শহরের কতিপয় এলাকায় হঠাৎ কালো মেঘ এসে বজ্র, দমকা বাতাস ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত রূপ নেবে। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হবে ৩০°C–৩১°C, আর্দ্রতা থাকবে ৮২%–৮৬%। পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিকাংশ স্থানে রবিবারের দিন হালকা থেকে মাঝারি হারে বৃষ্টি হবে; পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে ছোট ছোট নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে।

চট্টগ্রামবাসীর জন্য পরামর্শ: বজ্রসহ বৃষ্টি চলাকালে খোলা জায়গায় শিশুদের খেলতে বের হতে দেবেন না। ঘর—বাড়ির বাইরের চাল-ছাউনি বা খোলা টিনের ছাউনি ঝুঁকিপূর্ণ হলে সময়মতো সরিয়ে নিন। গাড়ি চালকরা সকালে ব্রেকসহ যন্ত্রপাতি ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা পরীক্ষা করে নিন।

সিলেট ও উত্তরাঞ্চল

সিলেট বিভাগের আকাশ আজ রাতে প্রথম দিকে মেঘলা থাকবে, মাঝেমধ্যে হালকা বৃষ্টি হবে। রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা প্রায় ২৮°C–২৯°C, আর্দ্রতা ৮৮%–৯২% এর মধ্যে ওঠানামা করবে। পাহাড়ি মালভূমির নিকটবর্তী এলাকায় বর্ষার গন্ধ অনুভূত হবে; চা বাগানে কাজ করে এমন শ্রমিকদের জন্য রাতের আর্দ্রতা বেশ ধকলের কারণ হবে।

আগামীকাল সিলেটে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মেঘলা আকাশ থাকবে, মাঝেমধ্যে মাঝারি থেকে হালকা ধরনের বৃষ্টি হবে। বিকেলে বজ্রঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে; বিশেষ করে পাহাড়ি ঢালে শিলা ফেটে পড়ার ঝুঁকি থাকতে পারে। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে ৩২°C–৩৩°C, আর্দ্রতা ৮৫%–৯০%। উত্তরাঞ্চলের অন্যান্য শহরে (রংপুর, ময়মনসিংহ) সকালেও হালকা বৃষ্টি হতে পারে, তবে বিকাল থেকে বজ্রবৃষ্টি বেশি মাত্রায় পড়তে শুরু করবে। রংপুরে আগামীকাল দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে ৩৪°C–৩৫°C, আর্দ্রতা ৮৫%–৮৭%; ময়মনসিংহে ৩৩°C–৩৪°C, আর্দ্রতা ৮৮%–৯০%।

উত্তরাঞ্চলবাসীর জন্য পরামর্শ: পাহাড়ি এলাকার তীব্র বৃষ্টি হলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে; ঘর থেকে বের হলে সব‌াই পানি প্রবাহে সতর্ক থাকুন। বীজ বপন বা ফসল তোলার কাজ করার আগে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখে নিন, যাতে প্রয়োজনে কাজ স্থগিত করা যায়।

বৃষ্টি নিয়ে যে পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস

খুলোনাবরিশাল ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল

খুলনা, বরিশাল, বরগুনা, সুন্দরবনসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আজ রাতের দিকে আড়ালাভাবে মেঘ জমে থাকবে; রাতভর হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে। রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা প্রায় ২৭°C–২৮°C, আর্দ্রতা থাকবে ৮০%–৮৮% এর মধ্যে। সুন্দরবন এলাকায় নোনা জলবিন্দু নিয়ে বৃষ্টি হবে, যা মিঠা জলের সঙ্গে মিশে যাতায়াতের পথ আরও কঠিন করে তুলবে।

আগামীকাল সকাল থেকে মোটা মোটা মেঘ জমে থাকবে। বিকেলে কয়েকটি জায়গায় কালবৈশাখী ঝড়সহ বৃষ্টি হবে; প্রধানত খুলনা থেকে বরিশাল পর্যন্ত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আকাশ মেঘে ঢাকা থাকবে। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২°C–৩৩°C এর মধ্যে ওঠানামা করবে, আর্দ্রতা থাকবে ৮০%–৮৭%। বরিশালে নৌপথে দুর্বল ধারা সৃষ্টি হতে পারে; দ্রুত যাত্রীরা সতর্ক থাকুন।

দক্ষিণাঞ্চলবাসীর জন্য পরামর্শ: নদীমাতৃক এলাকার নৌকার চালকরা জলের তীব্র বৃদ্ধি বিবেচনায় জীবাণু রোধী জেলুটি সঙ্গে রাখুন। গবাদিপশু-পশু পালক, দুধ-দুগ্ধজাত কৃষকরা সাময়িকভাবে মাঠ পরিদর্শন সীমিত করুন বা গোয়ালঘরে অবস্থান করুন––বাড়ি-ঘরের আশেপাশে ভারী বৃষ্টির পর কয়েক দিন জলাবদ্ধতা থাকতে পারে।

রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চল

রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের আকাশ আজ রাতে আংশিক মেঘলা থেকে মেঘাচ্ছন্ন থাকবে। রংপুরের কিছু এলাকায় রাতের দিকে হালকা বৃষ্টির ফোঁটা পড়তে পারে, তবে গভীর বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা কম। রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা প্রায় ২৮°C–২৯°C, আর্দ্রতা ৮২%–৮৮% থাকবে। রাজশাহীতে সকালে মেঘে ঢাকা আবহাওয়ায় অল্প একটু রোদ দেখা যেতে পারে; বিকেলে মেঘ জমে যাওয়ার ফলে গরম অনুভূত হবে।

ঢাকাসহ চার বিভাগে ভারী বৃষ্টি হতে পারে

আগামী দিন দুপুরের পর বিকালে কয়েকটি জায়গায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে, বিশেষ করে রংপুরের আশপাশে। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রাজশাহীতে ৩৪°C–৩৫°C, রংপুরে ৩৪°C–৩৫°C; আর্দ্রতা থাকবে প্রায় ৮৪%–৮৭%। যে কোনো সময় বজ্রঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে; তাই মাঠে কাজ করার সময় ভারি মেশিনারি এড়িয়ে চলুন।

রাজশাহী—রংপুর অঞ্চলের জন্য পরামর্শ: সন্ধ্যার পর আকাশ মেঘে ঢাকা থাকবে এবং হালকা বৃষ্টি হতে পারে। বাড়ি—ঘরের ওপরে কোনো ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা থাকলে সরিয়ে নিন। কৃষকরা শাক-সবজি তুলতে গেলে হালকা উষ্ণ জামা ও ছাতা সঙ্গে রাখুন।

সার্বিক সতর্কীকরণ

বৃষ্টিস্নাত ও বজ্রঝড়: বিকেল—সন্ধ্যার পর বজ্রঝড় চলাকালে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও আকাশচুম্বি বজ্রপাতের ঝুঁকি থাকে। বাইরে কোনো উচ্চ কাঠামোর নীচে দাঁড়াবেন না।

সড়ক ও নদীপথে যাতায়াত: ভারি বৃষ্টিতে সড়ক ফেনা হয়ে যেতে পারে; ব্রেক ভালো মতো কাজ করছে কিনা পরীক্ষা করুন। ভোর বা দুপুরের পর নদীর জোয়ার বেড়ে পারে—নৌযাত্রীগণ সতর্ক থাকুন।

The sudden rise in lightening incidents sparks concern | Sangbad Pratidin

জলাবদ্ধতা: গলি—মহল্লার নিম্নস্থানে জল জমে যেতে পারে; পানিবাহিত রোগের ঝুঁকি থাকে। বাড়ির আশেপাশে পানি জমলে দ্রুত নিষ্কাশন ব্যবস্থা করুন এবং গর্ত ঢেকে দিন।

কৃষিজমি ও পশুপালন: জমিতে অতিরিক্ত পানি জমলে বীজ বপন বা তরিতরকারি বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ অঞ্চলে নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে; গোয়ালঘর ও ছাগলখানায় পানি জমছে কিনা দেখে নিন।

স্বাস্থ্যজনিত সতর্কতা: আর্দ্রতা বাড়ার কারণে দাগা পড়ে যাওয়া, ফাঙ্গাস—এই ধরনের ত্বকগত সমস্যা হতে পারে। বয়স্ক ও শিশুদের শ্বাসকষ্ট হলে দ্রুত শীতল পরিবেশে নিয়ে যান অথবা প্রয়োজনমতো হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।

বিদ্যুৎ বিভ্রাট: বজ্রঝড়ের সময় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সম্ভাবনা থাকে। জরুরি ফোন চার্জার ও পোর্টেবল ল্যাম্প সঙ্গে রাখুন।

বাংলাদেশে আজ রাত (১ জুন) ও আগামীকাল (২ জুন) আবহাওয়া মার্জিত মনসুনের ছোঁয়া নিয়ে বৃষ্টি ও বজ্রঝড়ের মিশ্র চিত্র দেখাবে। ঢাকাসহ কেন্দ্রীয় শহরগুলোতে সন্ধ্যার পর বজ্রঝড়ের সম্ভাবনা, চট্টগ্রাম—সিলেট—ময়মনসিংহ অঞ্চলে বিকেলে বৃষ্টি, খুলনা—বরিশাল—সুন্দরবনাঞ্চলে কালবৈশাখী ঝড়ের আভাস, এবং উত্তরাঞ্চলে হালকা বৃষ্টি স্থিতিশীল থাকতে পারে। রাতের আর্দ্রতা বেশি থাকবে, দিনের তাপমাত্রা ৩০°C–৩৫°C এর মধ্যে ওঠানামা করবে। কৃষি, পরিবহন ও জনস্বাস্থ্যের দিক থেকে সতর্কতা অবলম্বন করে সবাই যেন ঝামেলা এড়িয়ে নিরাপদে চলাচল ও কাজ করতে পারে—এটাই মূল চ্যালেঞ্জ। উক্ত আবহাওয়ার হালচাল জানতে নিয়মিত স্থানীয় আবহাওয়া অফিস ও সংবাদমাধ্যমের আপডেট দেখুন, যাতে প্রয়োজনমতো পূর্বসতর্কতা নেওয়া যায়।