০৬:০৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

ইউক্রেন আপস করবে না, কারণ তারা হারছে না

শান্তির আশায় বিভ্রান্তি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসন শুরু থেকেই বিশ্বে ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তির আশায় এক ধরনের মায়া সৃষ্টি হয়। ট্রাম্প নিজেকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তুলে ধরলেও, তিনি ইউক্রেনকে দোষারোপ করে রাশিয়ার প্রতি নরম অবস্থান নেন। ইউক্রেনকে চাপ দিয়ে রাশিয়াকে সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা ছিল তাঁর কৌশল, যা ব্যর্থ হয়।

যুদ্ধ থামানোর কোনো প্রণোদনা নেই

রাশিয়া এখন একটি যুদ্ধকালীন অর্থনীতি তৈরি করেছে। অপরদিকে ইউক্রেনের মনোবল অটুট এবং তারা সার্বভৌমত্বে আপস করতে নারাজ। যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাবনা তাই এখন নেই।

পশ্চিমাদের বিভক্ত দৃষ্টিভঙ্গি

কিছু পশ্চিমা বিশ্বাস করেন, পুতিন সীমিত লক্ষ্যেই যুদ্ধ করছেন। অন্যরা বলেন, রাশিয়া ইউক্রেনের সার্বভৌম অস্তিত্ব মেনে নেয় না। পুতিনের ভাষণে তিনি বারবার বলেন, ‘মূল কারণ সমাধান’ না হলে শান্তি আসবে না—অর্থাৎ ইউক্রেনের স্বাধীনতা বিলুপ্ত করতে হবে।

ইউক্রেনের হিসাব

ট্রাম্প মনে করেন, ইউক্রেনের হাতে ভালো কার্ড নেই। কিন্তু বাস্তবে, ইউক্রেন এখনও প্রতিরোধ গড়ছে এবং কূটনৈতিকভাবে সময় নিচ্ছে। ২০২৩ সালে রাশিয়া ৪২,০০০ বর্গমাইল দখলে রাখলেও ২০২৫ সালের মে পর্যন্ত তা মাত্র ১,৬৫০ বর্গমাইল বেড়েছে।

সম্ভাব্য চাপে ইউক্রেন আপস করতে পারে

যদি ইউরোপ থেকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ হয়, মার্কিন প্যাক-৩ ক্ষেপণাস্ত্র না আসে, বা রাশিয়ার হামলায় গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস হয়, তবেই ইউক্রেন কিছুটা নমনীয় হতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা টিকে আছে।

ইউরোপে নতুন যুদ্ধের শঙ্কা

ট্রাম্পের রাশিয়া ঘেঁষা নীতির কারণে ইউরোপ আরও ঝুঁকিতে পড়েছে। পুতিন এখন ফিনল্যান্ড, নরওয়ে এবং বাল্টিক অঞ্চলে তৎপরতা বাড়াচ্ছেন। তিনি চাইছেন ইউরোপ ও ন্যাটোর দুর্বলতা ফাঁস করতে।

রাশিয়ার যুদ্ধ অর্থনীতি ও ভবিষ্যৎ

রাশিয়ার তেল বিক্রি এখন যুদ্ধ তহবিলের মূল উৎস। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এতে বড় প্রভাব ফেলছে না। মূল পরিবর্তন আনতে হলে যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, ভারত এবং চীনের সক্রিয় ভূমিকাই পারে রাশিয়াকে আর্থিকভাবে দুর্বল করতে। কিন্তু ট্রাম্প, ভারত ও সৌদি আরব কেউই এ ধরনের উদ্যোগ নিতে আগ্রহী নন।

শান্তির ইঙ্গিত নয়অশান্তির ভবিষ্যৎ

পুতিন যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন এবং জেলেনস্কি বিশ্বাস করেন যে একাংশ ছাড় দিলে সব হারাতে হবে। তাই এই যুদ্ধ বন্ধের আলো আসলে সামনে আসা ট্রেনের আলো—যা ধ্বংস ডেকে আনতে পারে। ইউরোপের করণীয় এখন ইউক্রেন ও নিজেদের প্রতিরক্ষা জোরদার করা।

ইউক্রেন আপস করবে না, কারণ তারা হারছে না

১০:০০:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫

শান্তির আশায় বিভ্রান্তি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসন শুরু থেকেই বিশ্বে ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তির আশায় এক ধরনের মায়া সৃষ্টি হয়। ট্রাম্প নিজেকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তুলে ধরলেও, তিনি ইউক্রেনকে দোষারোপ করে রাশিয়ার প্রতি নরম অবস্থান নেন। ইউক্রেনকে চাপ দিয়ে রাশিয়াকে সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা ছিল তাঁর কৌশল, যা ব্যর্থ হয়।

যুদ্ধ থামানোর কোনো প্রণোদনা নেই

রাশিয়া এখন একটি যুদ্ধকালীন অর্থনীতি তৈরি করেছে। অপরদিকে ইউক্রেনের মনোবল অটুট এবং তারা সার্বভৌমত্বে আপস করতে নারাজ। যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাবনা তাই এখন নেই।

পশ্চিমাদের বিভক্ত দৃষ্টিভঙ্গি

কিছু পশ্চিমা বিশ্বাস করেন, পুতিন সীমিত লক্ষ্যেই যুদ্ধ করছেন। অন্যরা বলেন, রাশিয়া ইউক্রেনের সার্বভৌম অস্তিত্ব মেনে নেয় না। পুতিনের ভাষণে তিনি বারবার বলেন, ‘মূল কারণ সমাধান’ না হলে শান্তি আসবে না—অর্থাৎ ইউক্রেনের স্বাধীনতা বিলুপ্ত করতে হবে।

ইউক্রেনের হিসাব

ট্রাম্প মনে করেন, ইউক্রেনের হাতে ভালো কার্ড নেই। কিন্তু বাস্তবে, ইউক্রেন এখনও প্রতিরোধ গড়ছে এবং কূটনৈতিকভাবে সময় নিচ্ছে। ২০২৩ সালে রাশিয়া ৪২,০০০ বর্গমাইল দখলে রাখলেও ২০২৫ সালের মে পর্যন্ত তা মাত্র ১,৬৫০ বর্গমাইল বেড়েছে।

সম্ভাব্য চাপে ইউক্রেন আপস করতে পারে

যদি ইউরোপ থেকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ হয়, মার্কিন প্যাক-৩ ক্ষেপণাস্ত্র না আসে, বা রাশিয়ার হামলায় গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস হয়, তবেই ইউক্রেন কিছুটা নমনীয় হতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা টিকে আছে।

ইউরোপে নতুন যুদ্ধের শঙ্কা

ট্রাম্পের রাশিয়া ঘেঁষা নীতির কারণে ইউরোপ আরও ঝুঁকিতে পড়েছে। পুতিন এখন ফিনল্যান্ড, নরওয়ে এবং বাল্টিক অঞ্চলে তৎপরতা বাড়াচ্ছেন। তিনি চাইছেন ইউরোপ ও ন্যাটোর দুর্বলতা ফাঁস করতে।

রাশিয়ার যুদ্ধ অর্থনীতি ও ভবিষ্যৎ

রাশিয়ার তেল বিক্রি এখন যুদ্ধ তহবিলের মূল উৎস। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এতে বড় প্রভাব ফেলছে না। মূল পরিবর্তন আনতে হলে যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, ভারত এবং চীনের সক্রিয় ভূমিকাই পারে রাশিয়াকে আর্থিকভাবে দুর্বল করতে। কিন্তু ট্রাম্প, ভারত ও সৌদি আরব কেউই এ ধরনের উদ্যোগ নিতে আগ্রহী নন।

শান্তির ইঙ্গিত নয়অশান্তির ভবিষ্যৎ

পুতিন যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন এবং জেলেনস্কি বিশ্বাস করেন যে একাংশ ছাড় দিলে সব হারাতে হবে। তাই এই যুদ্ধ বন্ধের আলো আসলে সামনে আসা ট্রেনের আলো—যা ধ্বংস ডেকে আনতে পারে। ইউরোপের করণীয় এখন ইউক্রেন ও নিজেদের প্রতিরক্ষা জোরদার করা।