০১:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫
হবিগঞ্জে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে কলেজছাত্রী আটক চট্টগ্রামে ছুরিকাঘাতে এক ব্যক্তির মৃত্যু পাকিস্তানের জয়গান: আবরারের ঘূর্ণিতে বিধ্বস্ত দক্ষিণ আফ্রিকা, ২–১ ব্যবধানে সিরিজ জয় রমনা গির্জায় ককটেল হামলায় উদ্বেগ: খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান কেন পৃথিবী জুড়ে ঘূর্ণিঝড় আগের থেকে বেশি হচ্ছেঃ বাংলাদেশ, ফিলিপাইন ও জাপান বিপদের মুখে দক্ষিণ ব্রাজিলে ভয়াবহ টর্নেডোতে অন্তত ৬ জন নিহত, আহত শতাধিক ফিলিপাইনে সুপার টাইফুন ‘ফুং-ওয়ং’-এর আঘাত: কালমাগি’র ধ্বংসের পর নতুন বিপর্যয়ের আশঙ্কা সংযুক্ত আরব আমিরাত ও চীনের বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সহযোগিতায় নতুন দিগন্ত মার্ক উড আশ্বাস দিলেন, অস্ট্রেলিয়ান মিডিয়ার কটাক্ষ সত্ত্বেও আত্মবিশ্বাসী ইংল্যান্ড দল তাপ থেরাপিতে রক্তচাপ কমানোর আশার আলো: নতুন গবেষণায় চমকপ্রদ ফলাফল

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩০৮)

যাহা হউক, হেষ্টিংস দুই এক স্থান ভিন্ন, অধিকাংশ স্থলেই যে গঙ্গাগোবিন্দের দ্বারা উৎকোচ গ্রহণ করিতেন, তাহার যথেষ্ট প্রমাণ আছে। যে কয়েকজন দেশীয় লোক হেষ্টিংসের উৎকোচ সংগ্রহে নিযুক্ত ছিল, তন্মধ্যে গঙ্গাগোবিন্দ ও কান্ত বাবুই প্রধান। এই সকল লোকেরা ৯ লক্ষ টাকা উৎকোচ লয়। তন্মধ্যে পীড়াপীড়িতে কোম্পানীর কোষাগারে ৫৪০ লক্ষ প্রদান করার কথা জানা যায়; অবশিষ্ট টাকা হেষ্টিংস ও তাঁহার প্রিয় কর্মচারিগণ কর্তৃক যে আত্মসাৎ হইয়াছিল, তদ্বিষয়ে কোন সন্দেহ থাকিতে পারে না।

দেশীয় জমিদার ও ইজারদারদিগকে উৎকোচের জন্য আলাতন করিয়া, গঙ্গাগোবিন্দ যে হেষ্টিংস সাহেবের মনোরঞ্জনের চেষ্টা করিয়া-ছিলেন, ইহার যথাযথ বিবরণ আমরা পূর্ব্বে প্রদান করিয়াছি। উৎকোচ গ্রহণ করিয়া, দিন দিন তাঁহার অর্থলালসা আরও বৃদ্ধি পাইতে থাকে। তাহারই বশবর্তী হইয়া, অবশেষে তাঁহাকে কোম্পানীর রাজস্বেও হস্তক্ষেপ করিতে হয়। পূর্ব্বে যে তিন স্থান হইতে উৎকোচ লওয়ার বিবরণ উল্লিখিত হইয়াছে, সেই তিন স্থান অর্থাৎ দিনাজপুর, পাটনা ও নদীয়ার রাজস্বব্যাপারে দেওয়ানজীর নিকট অনেক টাঁকা পাওনা হইয়াছিল।

কেবল নদীয়ার টাকা তিনি ক্রফটস সাহেবের হস্তে প্রদান করিয়াছেন বলিয়া অবগত হওয়া যায়। কিন্তু দিনাজপুরের হিসাবের ১৭, ৬৬৩ টাকা ও পাটনার ২১,৮০১ টাকা তিনি প্রত্যর্পণ করেন নাই। হেষ্টিংস সাহেব ইহার জন্য গঙ্গাগোবিন্দের কৈফিয়ৎ তলব করিয়াছিলেন। দেওয়ানজী তাহার যে উত্তর প্রদান করেন, তাহাতে হেষ্টিংস সাহেব গন্তোষ লাভ করিতে পারেন নাই বলিয়া প্রকাশ করেন।

গঙ্গা-গোবিন্দের নিকট ঐ সমস্ত টাকা পাওনাও রহস্যময়। কারণ হেষ্টিংস সাহেব যখন জানিতে পারিয়াছিলেন যে, কোম্পানীর হিসাবপত্রে বাস্ত-বিকই গঙ্গাগোবিন্দের নামে যথেষ্ট টাকা পাওনা রহিয়াছে, তখন তিনি কেবল তাঁহার কৈফিয়ৎ তলব করিয়াই ক্ষান্ত হইয়াছিলেনএবং নিজেও যে তাঁহার উত্তরে সন্তুষ্ট হন নাই, তাহাও আমরা বলিয়াছি; তথাপি হোষ্টিংস সাহেব সে টাকা আদায়ের জন্য কখনও গঙ্গাগোবিন্দকে পীড়াপীড়ি করেন নাই।

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

হবিগঞ্জে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে কলেজছাত্রী আটক

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩০৮)

১১:০০:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫

যাহা হউক, হেষ্টিংস দুই এক স্থান ভিন্ন, অধিকাংশ স্থলেই যে গঙ্গাগোবিন্দের দ্বারা উৎকোচ গ্রহণ করিতেন, তাহার যথেষ্ট প্রমাণ আছে। যে কয়েকজন দেশীয় লোক হেষ্টিংসের উৎকোচ সংগ্রহে নিযুক্ত ছিল, তন্মধ্যে গঙ্গাগোবিন্দ ও কান্ত বাবুই প্রধান। এই সকল লোকেরা ৯ লক্ষ টাকা উৎকোচ লয়। তন্মধ্যে পীড়াপীড়িতে কোম্পানীর কোষাগারে ৫৪০ লক্ষ প্রদান করার কথা জানা যায়; অবশিষ্ট টাকা হেষ্টিংস ও তাঁহার প্রিয় কর্মচারিগণ কর্তৃক যে আত্মসাৎ হইয়াছিল, তদ্বিষয়ে কোন সন্দেহ থাকিতে পারে না।

দেশীয় জমিদার ও ইজারদারদিগকে উৎকোচের জন্য আলাতন করিয়া, গঙ্গাগোবিন্দ যে হেষ্টিংস সাহেবের মনোরঞ্জনের চেষ্টা করিয়া-ছিলেন, ইহার যথাযথ বিবরণ আমরা পূর্ব্বে প্রদান করিয়াছি। উৎকোচ গ্রহণ করিয়া, দিন দিন তাঁহার অর্থলালসা আরও বৃদ্ধি পাইতে থাকে। তাহারই বশবর্তী হইয়া, অবশেষে তাঁহাকে কোম্পানীর রাজস্বেও হস্তক্ষেপ করিতে হয়। পূর্ব্বে যে তিন স্থান হইতে উৎকোচ লওয়ার বিবরণ উল্লিখিত হইয়াছে, সেই তিন স্থান অর্থাৎ দিনাজপুর, পাটনা ও নদীয়ার রাজস্বব্যাপারে দেওয়ানজীর নিকট অনেক টাঁকা পাওনা হইয়াছিল।

কেবল নদীয়ার টাকা তিনি ক্রফটস সাহেবের হস্তে প্রদান করিয়াছেন বলিয়া অবগত হওয়া যায়। কিন্তু দিনাজপুরের হিসাবের ১৭, ৬৬৩ টাকা ও পাটনার ২১,৮০১ টাকা তিনি প্রত্যর্পণ করেন নাই। হেষ্টিংস সাহেব ইহার জন্য গঙ্গাগোবিন্দের কৈফিয়ৎ তলব করিয়াছিলেন। দেওয়ানজী তাহার যে উত্তর প্রদান করেন, তাহাতে হেষ্টিংস সাহেব গন্তোষ লাভ করিতে পারেন নাই বলিয়া প্রকাশ করেন।

গঙ্গা-গোবিন্দের নিকট ঐ সমস্ত টাকা পাওনাও রহস্যময়। কারণ হেষ্টিংস সাহেব যখন জানিতে পারিয়াছিলেন যে, কোম্পানীর হিসাবপত্রে বাস্ত-বিকই গঙ্গাগোবিন্দের নামে যথেষ্ট টাকা পাওনা রহিয়াছে, তখন তিনি কেবল তাঁহার কৈফিয়ৎ তলব করিয়াই ক্ষান্ত হইয়াছিলেনএবং নিজেও যে তাঁহার উত্তরে সন্তুষ্ট হন নাই, তাহাও আমরা বলিয়াছি; তথাপি হোষ্টিংস সাহেব সে টাকা আদায়ের জন্য কখনও গঙ্গাগোবিন্দকে পীড়াপীড়ি করেন নাই।