০৯:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
৫৪০ কোটি টাকার ‘মাদক অর্থ’ পাচারে অভিযুক্ত বিক্রম সিং মজিঠিয়া উনসানে সমুদ্র সৈকতের রিসোর্ট উদ্বোধন: পর্যটনে বাজি ধরছে উত্তর কোরিয়া ওএমএস ও টিসিবি ডিলার নিয়োগে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধের আহ্বান এসএসসি টেস্টের দুই দিনে শ্রীলঙ্কার রাজত্ব রাসেল ভাইপারের হুমকি: শহরেও ঢুকছে বিপজ্জনক সাপ! মঙ্গল অভিযানের প্রস্তুতি: মহাকাশে পাঠানো হলো গাঁজা গাছের বীজ ২০২৫ সালের সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ দেশ আইসল্যান্ড, শীর্ষ দশে সিঙ্গাপুর নৌকার বাংলাদেশ: জেলা-জেলা ঘিরে এক ইতিহাস ও সংস্কৃতি ইউরেনিয়াম এনরিচমেন্ট বা পরমাণু সমৃদ্ধকরণ কী? কীভাবে এটি করা হয়? নেতানিয়াহুর বিচার বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের

ঢাকায় আসছে টানা বৃষ্টি, বজ্রঝড় ও সতর্কতার সময়

আশঙ্কার আকাশ

ঢাকার আকাশ কিছুদিন ধরেই ভারী হয়ে আছে। মেঘ জমছে, বাতাসে আর্দ্রতা বাড়ছে, আর পথঘাটে মানুষের চোখে এক ধরনের অস্থিরতা। কারণ, আবহাওয়াবিদদের মতে, রাজধানী ঢাকায় আসছে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি, বজ্রঝড় এবং সেই সঙ্গে জীবনযাত্রায় নানা বিঘ্নের সম্ভাবনা।

আগামী ২০ থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত প্রতিদিনই থাকবে রোদের চেয়ে মেঘ বেশি। কখনো হালকা, কখনো মাঝারি, কখনোবা তুমুল বৃষ্টি। এর সঙ্গে কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার পূর্বাভাসও দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

ঝড় কখন কিভাবে আসবে?

ঢাকায় ঝড়-বৃষ্টির মূল ধারা শুরু হবে শুক্রবার, ২০ জুন থেকে।

  • ২০২১ জুন: সকাল ও দুপুরের দিকে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি, বিকেল ও সন্ধ্যার দিকে বজ্রঝড়ের সম্ভাবনা বেশি।
  • ২২২৪ জুন: প্রতিদিনই থেমে থেমে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। মেঘে ঢাকা থাকবে আকাশ, সূর্য দেখা যাবে না বললেই চলে।
  • ২৫ জুন: বৃষ্টির তীব্রতা কিছুটা কমলেও থাকবে ধারাবাহিকতা।
  • ২৬ জুন: আবারো হালকা ঝড়ো হাওয়া ও গরম-আর্দ্র পরিবেশে হঠাৎ বৃষ্টি নামতে পারে।

এসব দিনে তাপমাত্রা থাকবে ৩০–৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে। তবে উচ্চ আর্দ্রতা ও কম বায়ুপ্রবাহের কারণে গরম অনুভূত হবে ৩৬ ডিগ্রি বা তার বেশি।

নগরজীবনে ঝড়ের প্রভাব

সড়কপথ ও যানজট

ঝড়বৃষ্টির প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে রাজধানীর সড়কপথে। বিভিন্ন জায়গায় জলাবদ্ধতা দেখা দিতে পারে—বিশেষ করে পুরান ঢাকা, মিরপুর, বাড্ডা, মৌচাক ও যাত্রাবাড়ীর নিম্নাঞ্চলগুলোতে। অফিসগামী মানুষকে অতিরিক্ত সময় হাতে নিয়ে বের হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন নগর বিশেষজ্ঞরা।

বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক

বজ্রপাতের কারণে কোথাও কোথাও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হতে পারে। দুর্বল গ্রিড এলাকায় ফ্লাকচুয়েশন বা বিদ্যুৎ ভোল্টেজ ওঠানামাও ঘটবে। অনেক এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট গতিও কমে যেতে পারে।

শিক্ষা ও অফিস কার্যক্রম

বৃষ্টির কারণে স্কুল-কলেজে উপস্থিতি কমে যেতে পারে। বিশেষ করে সকালের শিফটের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টিতে ভিজে যেতে পারে অথবা দেরি করে পৌঁছাবে। অফিসেও হয়তো অনেক কর্মী হোম অফিস বেছে নেবেন। ইতিমধ্যে বেশ কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও স্কুল বৃষ্টির কারণে ভার্চুয়াল ক্লাসে ফিরছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৮৪ কর্মচারীকে বদলি

 স্বাস্থ্যঝুঁকি ও রোগবিস্তার

বৃষ্টির সঙ্গে আসে পানি জমা, আর তার সঙ্গে আসে ডেঙ্গু, ডায়রিয়া ও চর্মরোগের মতো সমস্যা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ইতোমধ্যে সতর্কতা জারি করেছে—বিশুদ্ধ পানি পান, ভেজা জামাকাপড় এড়িয়ে চলা এবং মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

 মানসিক চাপ ও উদ্বেগ

টানা বৃষ্টির কারণে জনজীবনে এক ধরনের ক্লান্তি ও উদ্বেগ তৈরি হয়। দোকানপাটে ক্রেতা কমে যায়, অনলাইন ডেলিভারিতে দেরি হয়, এবং অনেকেরই দৈনন্দিন রুটিন ভেঙে পড়ে। শিশু ও বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে বিষণ্ণতা ও শরীর দুর্বল হয়ে পড়ার ঝুঁকি বাড়ে।

নাগরিকদের জন্য করণীয়

  • বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখে নিন।
  • ছাতারেইনকোট ও জলরোধী ব্যাগ সঙ্গে রাখুন।

বরগুনায় টানা বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, জনজীবন বিপর্যস্ত

  • বিদ্যুৎ সরঞ্জাম ব্যবহারে সতর্ক থাকুনভেজা হাতে সুইচ বা প্লাগ ধরবেন না।
  • যেসব এলাকায় ড্রেনেজ দুর্বলসেখানে চলাচলে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করুন।
  • বৃষ্টির সময় খোলা জায়গায় না দাঁড়িয়ে ঘরে অবস্থান করুনবিশেষ করে বজ্রপাত চলাকালে।
  • বাসা ও অফিসে জরুরি বাতিচার্জার লাইটপাওয়ার ব্যাংক প্রস্তুত রাখুন।
  • জরুরি নম্বর (ফায়ার সার্ভিসসিটি করপোরেশনবিদ্যুৎ অফিস) সংরক্ষণ করে রাখুন।

বৃষ্টি মানেই স্থবিরতা নয়

ঢাকাবাসীর বৃষ্টি মানেই শুধু দুর্ভোগ নয়। কারও কাছে এটা প্রেম, কারও কাছে স্বস্তির নিঃশ্বাস। কিন্তু সঠিক প্রস্তুতি ও সচেতনতা ছাড়া এই বৃষ্টি হয়ে উঠতে পারে জীবনবিনাশীও।

আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা আমাদের নিয়ন্ত্রণে না থাকলেও, তার প্রভাব কতটা কমিয়ে আনা যায় তা নির্ভর করে আমাদের প্রস্তুতির ওপর। শহরের বিপুল জনগোষ্ঠীর জন্য এই দিনগুলো হতে পারে বড় ধরনের পরীক্ষা—মানসিক সহনশীলতা, সামাজিক সহাবস্থান এবং সচেতন নাগরিকত্বের।

৫৪০ কোটি টাকার ‘মাদক অর্থ’ পাচারে অভিযুক্ত বিক্রম সিং মজিঠিয়া

ঢাকায় আসছে টানা বৃষ্টি, বজ্রঝড় ও সতর্কতার সময়

০৩:৫৭:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

আশঙ্কার আকাশ

ঢাকার আকাশ কিছুদিন ধরেই ভারী হয়ে আছে। মেঘ জমছে, বাতাসে আর্দ্রতা বাড়ছে, আর পথঘাটে মানুষের চোখে এক ধরনের অস্থিরতা। কারণ, আবহাওয়াবিদদের মতে, রাজধানী ঢাকায় আসছে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি, বজ্রঝড় এবং সেই সঙ্গে জীবনযাত্রায় নানা বিঘ্নের সম্ভাবনা।

আগামী ২০ থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত প্রতিদিনই থাকবে রোদের চেয়ে মেঘ বেশি। কখনো হালকা, কখনো মাঝারি, কখনোবা তুমুল বৃষ্টি। এর সঙ্গে কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার পূর্বাভাসও দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

ঝড় কখন কিভাবে আসবে?

ঢাকায় ঝড়-বৃষ্টির মূল ধারা শুরু হবে শুক্রবার, ২০ জুন থেকে।

  • ২০২১ জুন: সকাল ও দুপুরের দিকে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি, বিকেল ও সন্ধ্যার দিকে বজ্রঝড়ের সম্ভাবনা বেশি।
  • ২২২৪ জুন: প্রতিদিনই থেমে থেমে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। মেঘে ঢাকা থাকবে আকাশ, সূর্য দেখা যাবে না বললেই চলে।
  • ২৫ জুন: বৃষ্টির তীব্রতা কিছুটা কমলেও থাকবে ধারাবাহিকতা।
  • ২৬ জুন: আবারো হালকা ঝড়ো হাওয়া ও গরম-আর্দ্র পরিবেশে হঠাৎ বৃষ্টি নামতে পারে।

এসব দিনে তাপমাত্রা থাকবে ৩০–৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে। তবে উচ্চ আর্দ্রতা ও কম বায়ুপ্রবাহের কারণে গরম অনুভূত হবে ৩৬ ডিগ্রি বা তার বেশি।

নগরজীবনে ঝড়ের প্রভাব

সড়কপথ ও যানজট

ঝড়বৃষ্টির প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে রাজধানীর সড়কপথে। বিভিন্ন জায়গায় জলাবদ্ধতা দেখা দিতে পারে—বিশেষ করে পুরান ঢাকা, মিরপুর, বাড্ডা, মৌচাক ও যাত্রাবাড়ীর নিম্নাঞ্চলগুলোতে। অফিসগামী মানুষকে অতিরিক্ত সময় হাতে নিয়ে বের হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন নগর বিশেষজ্ঞরা।

বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক

বজ্রপাতের কারণে কোথাও কোথাও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হতে পারে। দুর্বল গ্রিড এলাকায় ফ্লাকচুয়েশন বা বিদ্যুৎ ভোল্টেজ ওঠানামাও ঘটবে। অনেক এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট গতিও কমে যেতে পারে।

শিক্ষা ও অফিস কার্যক্রম

বৃষ্টির কারণে স্কুল-কলেজে উপস্থিতি কমে যেতে পারে। বিশেষ করে সকালের শিফটের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টিতে ভিজে যেতে পারে অথবা দেরি করে পৌঁছাবে। অফিসেও হয়তো অনেক কর্মী হোম অফিস বেছে নেবেন। ইতিমধ্যে বেশ কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও স্কুল বৃষ্টির কারণে ভার্চুয়াল ক্লাসে ফিরছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৮৪ কর্মচারীকে বদলি

 স্বাস্থ্যঝুঁকি ও রোগবিস্তার

বৃষ্টির সঙ্গে আসে পানি জমা, আর তার সঙ্গে আসে ডেঙ্গু, ডায়রিয়া ও চর্মরোগের মতো সমস্যা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ইতোমধ্যে সতর্কতা জারি করেছে—বিশুদ্ধ পানি পান, ভেজা জামাকাপড় এড়িয়ে চলা এবং মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

 মানসিক চাপ ও উদ্বেগ

টানা বৃষ্টির কারণে জনজীবনে এক ধরনের ক্লান্তি ও উদ্বেগ তৈরি হয়। দোকানপাটে ক্রেতা কমে যায়, অনলাইন ডেলিভারিতে দেরি হয়, এবং অনেকেরই দৈনন্দিন রুটিন ভেঙে পড়ে। শিশু ও বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে বিষণ্ণতা ও শরীর দুর্বল হয়ে পড়ার ঝুঁকি বাড়ে।

নাগরিকদের জন্য করণীয়

  • বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখে নিন।
  • ছাতারেইনকোট ও জলরোধী ব্যাগ সঙ্গে রাখুন।

বরগুনায় টানা বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, জনজীবন বিপর্যস্ত

  • বিদ্যুৎ সরঞ্জাম ব্যবহারে সতর্ক থাকুনভেজা হাতে সুইচ বা প্লাগ ধরবেন না।
  • যেসব এলাকায় ড্রেনেজ দুর্বলসেখানে চলাচলে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করুন।
  • বৃষ্টির সময় খোলা জায়গায় না দাঁড়িয়ে ঘরে অবস্থান করুনবিশেষ করে বজ্রপাত চলাকালে।
  • বাসা ও অফিসে জরুরি বাতিচার্জার লাইটপাওয়ার ব্যাংক প্রস্তুত রাখুন।
  • জরুরি নম্বর (ফায়ার সার্ভিসসিটি করপোরেশনবিদ্যুৎ অফিস) সংরক্ষণ করে রাখুন।

বৃষ্টি মানেই স্থবিরতা নয়

ঢাকাবাসীর বৃষ্টি মানেই শুধু দুর্ভোগ নয়। কারও কাছে এটা প্রেম, কারও কাছে স্বস্তির নিঃশ্বাস। কিন্তু সঠিক প্রস্তুতি ও সচেতনতা ছাড়া এই বৃষ্টি হয়ে উঠতে পারে জীবনবিনাশীও।

আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা আমাদের নিয়ন্ত্রণে না থাকলেও, তার প্রভাব কতটা কমিয়ে আনা যায় তা নির্ভর করে আমাদের প্রস্তুতির ওপর। শহরের বিপুল জনগোষ্ঠীর জন্য এই দিনগুলো হতে পারে বড় ধরনের পরীক্ষা—মানসিক সহনশীলতা, সামাজিক সহাবস্থান এবং সচেতন নাগরিকত্বের।