নাগার্জুন ভারতের ইতিহাসে এক অদ্ভুত চরিত্র। ভারতবর্ষে, চীনে ও মহাযানী সাহিত্যে ইনি একজন অদ্ভুত প্রতিভাসম্পন্ন, সমস্ত শাস্ত্রে ও বিস্তায় অসাধারণ পণ্ডিত বলে বর্ণিত হয়েছেন। তাঁর সম্বন্ধে বহু অলৌকিক আখ্যায়িকাও প্রচলিত আছে।
তিনি দ্বিতীয় ও তৃতীয় শতাব্দীর লোক ছিলেন। বিদর্ভ তাঁর জন্মভূমি ছিল, কিন্তু কনিষ্কের সভায় আর নালন্দাতেও অনেক সময় থাকতেন। মহাযানী ‘মাধ্যমিক’ মতের তিনিই প্রতিষ্ঠাতা।
কথিত আছে, দাক্ষিণাত্যের অরু একজন মহাযানী পণ্ডিত আর্যদের মৈত্রেয়নাথ নাগার্জুনকে তর্কযুদ্ধে আহ্বান করতে এসে উদ্ধতভাবে তাঁর দ্বারে করাঘাত করেন।
আর্যদেব এসেছেন শুনে নাগার্জুন তাঁকে সসম্মানে ভিতরে আসতে আহ্বান করলেন। তখন আর্যদের শুধু নাগার্জুনের অদ্ভুত প্রতিভামণ্ডিত মুণের দিকে চেয়েই বিস্ময়ে নির্বাক হন আর তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন।
নাগার্জুনের লিখিত আর চীনা ভাষায় অনূদিত আঠারো-উনিশ খানা পাণ্ডিত্যপূর্ণ গ্রন্থ ও কবিতা আজও সে দেশে পড়া হয়। জ্যোতিষ, পরীক্ষামূলক রসায়ন ও চিকিৎসা শাস্ত্রেও তাঁর প্রতিভা ছিল।
তাঁর লেখা নানা রোগের প্রেপসন, বিশেষতঃ চক্ষুরোগের চিকিৎসা সম্বন্ধে গ্রন্থ চীন ভাষায় অনুদিত হয়েছিল। পাশ্চাত্য পণ্ডিতদের মধ্যে কেবল লেওনার্ডে-ডা-ভিঞ্চি কতকটা এ’র সঙ্গে তুলনীয়।
(চলবে)