দাক্ষিণাত্য
তাম্রলিপ্তি থেকে হিউএনচাঙ হীনযানাশ্রয়ী দেশগুলির মধ্যে প্রধান সিংহল দ্বীপে যাওয়ার জন্যেই বেশী ব্যগ্র হয়েছিলেন। এমন কি প্রত্যহ রাত্রে তিনি কল্পনায় যেন সিংহল দ্বীপের ‘দন্তস্তূপ’ দেখতে পেতেন।
কিন্তু দক্ষিণদেশ থেকে আগত কতকগুলি ভিক্ষু তাঁকে বললেন যে, বহুদিনব্যাপী বিপদসঙ্কুল সমুদ্রযাত্রা না করে ডাঙাপথে ভারতবর্ষের দক্ষিণ সীমা পর্যন্ত গিয়ে তার পর মাত্র তিনদিন সমুদ্র-যাত্রা করে সিংহলে নিরাপদে পৌছন যায়।
এই উপদেশ গ্রাহ্য করে হিউ এনচাঙ দাক্ষিণাত্যের পূর্ব উপকূল দিয়ে দক্ষিণে যেতে লাগলেন। ওড্রদেশ ও কলিঙ্গ দিয়ে যেতে যেতে দেখলেন যে, বৌদ্ধধর্ম থেকে ব্রাহ্মণ্য ধমই এ প্রদেশে অনেকে বেশী প্রচলিত। অবশ্য উড়িষ্যার বিখ্যাত মন্দিরগুলির বেশীর ভাগই তখনও তৈরি হয় নি; তবু ভূবনেশ্বরের মুক্তেশ্বর মন্দির বোধ হয় তখনও ছিল।
কলিঙ্গ থেকে হিউ এনচাঙ বিখ্যাত মহাযানী নাগার্জুনের স্মৃতিজড়িত দেশ দেখবার জন্যে উত্তর-পশ্চিমে গোণ্ড ইত্যাদি আদিম অধিবাসী দ্বার। অধ্যুষিত, পর্বতসংকুল প্রদেশ পার হয়ে কলিঙ্গ থেকে প্রায় ৩৬০ মাইল ঘুরে দক্ষিণ-কোশলে এলেন। বিদর্ভ দেশে আধুনিক ছত্তিশগড় অঞ্চলেরই নাম সে সময়ে দক্ষিণ কোশল ছিল।
(চলবে)