স্বাধীনতার পরও বেশ কিছুদিন ক্বাসিদার চল ছিল। এখন তা বিলুপ্ত। কারণ, পুরনো মহল্লাগুলি নেই।
বাইরের মহল্লার সঙ্গে আমাদের মহল্লার কাসিদার প্রতিযোগিতা হতো। বাইরে যারা আসত ওরা খবর দিয়ে আসত আজ আমরা আসব, তোমাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার জন্য।
আমাদের মহল্লায় দুটো দল হতো-একটা বড়দের, আরেকটা ছোটদের। বড়দের দলের নেতা ছিলেন আমার দাদাভাই নাজির হোসেন, আর ছোটদের। দলের নেতা ছিলাম আমি। আমরা বাড়ি বাড়ি যেতাম, কাসিদা গেয়ে একটাকা বা আটআনা বা চারআনা চাঁদা তুলতাম।
পরে সে-টাকা দিয়ে আবার সাতাশ রমজানের রাতে পোলাও রান্না করে নিজেরা খেতাম, মহল্লায়। বিলাতাম। মহল্লায় পুরো মাস ঘুরে ঘুরে চলত। আমাদের এই চাঁদা সংগ্রহের অভিযান।
আমাদের মতো আরেক ধরনের লোক ছিল যারা মহল্লার মধ্যে ঘুরে ঘুরে ‘উঠো রোজদারো, সেহরিকা ওয়াক্ত হো গিয়া’, ‘উঠো রোজদারো, চার বাজ গায়া’, কিংবা ‘উঠো রোজদারো, সেহেরিকা ওয়াক্ত খাতাম হো নে চালা’, বলে চেঁচিয়ে ঘুম থেকে তুলত লোকদের। ওদের হাতে থাকত টিনের একটা চোঙ। গ্রামগঞ্জে অনেক লোককে এরকম চোঙ হাতে নিয়ে ওষুধ বিক্রি করতে দেখা যায় এখনো।”
স্বাধীনতার পরও বেশ কিছুদিন ক্বাসিদার চল ছিল। এখন তা বিলুপ্ত। কারণ, পুরনো মহল্লাগুলি নেই। কৃৎকৌশল উন্নতির কারণে বাইরে থেকে ডেকে কাউকে আর জাগিয়ে দিতে হয় না।
(চলবে)
মুনতাসীর মামুন 



















