সম্প্রতি একটি এনজিও পরিচালিত জরিপে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর জনপ্রিয়তা নির্ণয়ের জন্য দুই হাজার তরুণের মতামত সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে এ জরিপে অংশগ্রহণকারী বয়সসীমা ১৫ থেকে ৩৫ বছর নির্ধারণকে নিয়ে, যেহেতু সংবিধান অনুযায়ী ভোটার হওয়ার ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর। ফলে প্রশ্ন ওঠেছে, ভোটারের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য নয় এমন অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে এই জরিপের উদ্দেশ্য কী?
এনজিওটির ব্যাখ্যা
এনজিওর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তরুণ প্রজন্মের রাজনৈতিক পছন্দ এবং ভবিষ্যৎ ভোটারদের মনোভাব বোঝার উদ্দেশ্যেই তারা ১৫ বছর বয়স থেকে জরিপ পরিচালনা করেছে। তাদের দাবি, কিশোর ও তরুণদের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি করাই মূল লক্ষ্য ছিল।
সরকার এবং এনজিও সংযোগ
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিভিন্ন এনজিও কর্মী ও প্রতিনিধিদের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হচ্ছে বলে আলোচনা হওয়ায়, এনজিও পরিচালিত এই জরিপ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক কিনা সে বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা সন্দিহান হয়েছেন। অনেকেই মনে করছেন, জরিপে বয়সসীমা কমিয়ে এনে ভবিষ্যতে ভোটার হওয়ার ন্যূনতম বয়স পরিবর্তনের পক্ষে জনমত গঠন করা হচ্ছে।
কিংস পার্টির দাবি
ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থক ছাত্র সংগঠন “কিংস পার্টি” ইতোমধ্যেই দাবি তুলেছে ভোটদানের ন্যূনতম বয়স ১৫ বা ১৬ বছর করা উচিত। তাদের যুক্তি, বর্তমান ১৫–১৬ বছর বয়সী তরুণরাও রাজনৈতিকভাবে সচেতন এবং ভোট দানে সক্ষম।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের একজন অধ্যাপক বলেছেন, “ নিম্মবয়সসীমার তরুণদের নিয়ে এমন জরিপ পরিচালনা নিঃসন্দেহে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সংবিধান অনুযায়ী ভোটার হওয়ার ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর; এর নিচে জরিপ পরিচালনা করে ভোটার বয়সসীমা কমানোর ইঙ্গিত দেওয়া ঘাটতি বিশ্লেষণ করা উচিত।”
এনজিও পরিচালিত এই জরিপ ভোটার বয়সসীমাকে নিয়ে নতুন বিতর্কের সূত্রপাত করেছে। রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে এর গ্রহণযোগ্যতা ও উদ্দেশ্য নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি ভিত্তিতে পর্যালোচনা ও পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি করা হয়েছে।