১১:২২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫

বাংলাদেশে ভারতের কাঁচা মরিচ আমদানি: দাম কমবে নাকি অস্থিরতা চলবেই?

গত দুই সপ্তাহে বাংলাদেশ ভারতের বাজার থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কাঁচা মরিচ আমদানি করেছে। বাজারে টানা কয়েক সপ্তাহের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে আনতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে সরকারি ও বেসরকারি উভয় পক্ষের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তবে প্রশ্ন উঠেছেএই আমদানিতে কি সত্যিই সবুজ মরিচের দাম নিয়ন্ত্রণে আসবেনাকি অস্থিরতা চলতেই থাকবে?

দাম বৃদ্ধির পেছনের কারণ

দেশীয় উৎপাদনশীলতা হঠাৎ কমে যাওয়াআবহাওয়া জনিত সমস্যায় ফলন নষ্ট হওয়া এবং সরবরাহ ব্যবস্থায় অসাধু মজুতদারদের দৌরাত্ম্যএই তিনটি প্রধান কারণকে দায়ী করা হচ্ছে চলতি মরিচের দামের উর্ধ্বগতির জন্য। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন খুচরা বাজারে সবুজ মরিচের দাম ৩৫০৪৫০ টাকা কেজি পর্যন্ত পৌঁছে যায়। সাধারণ ক্রেতাদের ওপর এর প্রভাব ছিল খুবই নেতিবাচক।

ভারতীয় মরিচের আমদানি পরিকল্পনা

সরকার দ্রুত পরিস্থিতি সামাল দিতে ভারত থেকে মরিচ আমদানির অনুমোদন দেয়। বেসরকারি আমদানিকারকেরা দুই সপ্তাহে কয়েক শ টন মরিচ সীমান্ত দিয়ে দেশে এনেছেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছেএ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বাজারে সরবরাহ বাড়িয়ে দাম সহনীয় রাখতে।

মূল্য নিয়ন্ত্রণ হবে কি?

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেনসীমিত সময়ের জন্য আমদানি করা মরিচ সাময়িকভাবে বাজারে চাপ কমাতে পারে। পাইকারি বাজারে কিছু জায়গায় দাম কমার ইঙ্গিতও মিলেছেযেখানে ৩০০ টাকার নিচে দাম নেমেছে। তবে সমস্যার স্থায়ী সমাধান একমাত্র দেশীয় উৎপাদন বাড়ানো এবং সরবরাহ ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনা।

একজন সবজি আড়তদার বলেন, “আমদানি করা মরিচের মান কিছুটা ভিন্ন। কিছু ক্রেতা কিনতে আগ্রহী নয়। তবে যারা কিনছেতাদের জন্য বিকল্প তৈরি হয়েছেএতে দাম কিছুটা ঠেকানো যাচ্ছে।

ভোক্তাদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া

কিছু ক্রেতা বলছেনভারতীয় মরিচ আসায় বাজারে বিকল্প তৈরি হয়েছেযার কারণে অতিমূল্য কমেছে। অন্যদিকে কেউ কেউ বলছেনভারতীয় মরিচের স্বাদ ও তাজা ভাব আলাদা হওয়ায় তারা স্বদেশি মরিচের দাম কমার অপেক্ষায় আছেন।

দীর্ঘমেয়াদী সমাধান কি?

কৃষি বিশেষজ্ঞরা মনে করেনমরিচ উৎপাদন পরিকল্পনায় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিকৃষকদের প্রণোদনাবীজ উন্নয়ন এবং সঠিক সময়ে সেচ-সার সরবরাহ নিশ্চিত না করলে একই সংকট আবার ফিরে আসবে। সরকারের উচিত স্থানীয় উৎপাদকদের আরও উৎসাহ দেওয়া এবং বাজার ব্যবস্থাপনা কঠোর করা যাতে মজুতদাররা কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে না পারে।

স্বল্পমেয়াদে ভারতের মরিচ আমদানি কিছুটা দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক হলেওবাংলাদেশে সবুজ মরিচের বাজার স্থিতিশীল রাখতে হলে স্থানীয় উৎপাদন ব্যবস্থায় টেকসই পরিবর্তন আনতে হবে। বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়।

বাংলাদেশে ভারতের কাঁচা মরিচ আমদানি: দাম কমবে নাকি অস্থিরতা চলবেই?

০৫:০২:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫

গত দুই সপ্তাহে বাংলাদেশ ভারতের বাজার থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কাঁচা মরিচ আমদানি করেছে। বাজারে টানা কয়েক সপ্তাহের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে আনতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে সরকারি ও বেসরকারি উভয় পক্ষের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তবে প্রশ্ন উঠেছেএই আমদানিতে কি সত্যিই সবুজ মরিচের দাম নিয়ন্ত্রণে আসবেনাকি অস্থিরতা চলতেই থাকবে?

দাম বৃদ্ধির পেছনের কারণ

দেশীয় উৎপাদনশীলতা হঠাৎ কমে যাওয়াআবহাওয়া জনিত সমস্যায় ফলন নষ্ট হওয়া এবং সরবরাহ ব্যবস্থায় অসাধু মজুতদারদের দৌরাত্ম্যএই তিনটি প্রধান কারণকে দায়ী করা হচ্ছে চলতি মরিচের দামের উর্ধ্বগতির জন্য। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন খুচরা বাজারে সবুজ মরিচের দাম ৩৫০৪৫০ টাকা কেজি পর্যন্ত পৌঁছে যায়। সাধারণ ক্রেতাদের ওপর এর প্রভাব ছিল খুবই নেতিবাচক।

ভারতীয় মরিচের আমদানি পরিকল্পনা

সরকার দ্রুত পরিস্থিতি সামাল দিতে ভারত থেকে মরিচ আমদানির অনুমোদন দেয়। বেসরকারি আমদানিকারকেরা দুই সপ্তাহে কয়েক শ টন মরিচ সীমান্ত দিয়ে দেশে এনেছেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছেএ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বাজারে সরবরাহ বাড়িয়ে দাম সহনীয় রাখতে।

মূল্য নিয়ন্ত্রণ হবে কি?

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেনসীমিত সময়ের জন্য আমদানি করা মরিচ সাময়িকভাবে বাজারে চাপ কমাতে পারে। পাইকারি বাজারে কিছু জায়গায় দাম কমার ইঙ্গিতও মিলেছেযেখানে ৩০০ টাকার নিচে দাম নেমেছে। তবে সমস্যার স্থায়ী সমাধান একমাত্র দেশীয় উৎপাদন বাড়ানো এবং সরবরাহ ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনা।

একজন সবজি আড়তদার বলেন, “আমদানি করা মরিচের মান কিছুটা ভিন্ন। কিছু ক্রেতা কিনতে আগ্রহী নয়। তবে যারা কিনছেতাদের জন্য বিকল্প তৈরি হয়েছেএতে দাম কিছুটা ঠেকানো যাচ্ছে।

ভোক্তাদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া

কিছু ক্রেতা বলছেনভারতীয় মরিচ আসায় বাজারে বিকল্প তৈরি হয়েছেযার কারণে অতিমূল্য কমেছে। অন্যদিকে কেউ কেউ বলছেনভারতীয় মরিচের স্বাদ ও তাজা ভাব আলাদা হওয়ায় তারা স্বদেশি মরিচের দাম কমার অপেক্ষায় আছেন।

দীর্ঘমেয়াদী সমাধান কি?

কৃষি বিশেষজ্ঞরা মনে করেনমরিচ উৎপাদন পরিকল্পনায় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিকৃষকদের প্রণোদনাবীজ উন্নয়ন এবং সঠিক সময়ে সেচ-সার সরবরাহ নিশ্চিত না করলে একই সংকট আবার ফিরে আসবে। সরকারের উচিত স্থানীয় উৎপাদকদের আরও উৎসাহ দেওয়া এবং বাজার ব্যবস্থাপনা কঠোর করা যাতে মজুতদাররা কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে না পারে।

স্বল্পমেয়াদে ভারতের মরিচ আমদানি কিছুটা দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক হলেওবাংলাদেশে সবুজ মরিচের বাজার স্থিতিশীল রাখতে হলে স্থানীয় উৎপাদন ব্যবস্থায় টেকসই পরিবর্তন আনতে হবে। বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়।