০৫:৫৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫

বিচার বিভাগ শতভাগ স্বাধীনে কতটা আন্তরিক অন্তর্বর্তী সরকার?

  • Sarakhon Report
  • ০৫:৩০:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫
  • 10

বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে যে আশা তৈরি হয়েছিল সেটা কি আদৌ বাস্তবে রূপ নিয়েছে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনো অনেকটা পথ বাকি।

কেবল সরকার নয়, বিচারকের ওপরেও নির্ভর করে স্বাধীনতা

সাবেক জেলা জজ ও সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্টার জেনারেল ইকতেদার আহমেদ মনে করেন, বিচারকের নীতি ও ব্যক্তিত্বের ওপরও অনেকাংশে বিচারবিভাগের স্বাধীনতা নির্ভর করে।

ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, “সংবিধানে তো বলা আছে, বিচারকরা সম্পূর্ণ স্বাধীন। এই স্বাধীনতা কে কতটুকু ব্যবহার করবে সেটা ব্যক্তি বিচারকের উপর নির্ভর করে। কেউ যদি দুর্নীতিগ্রস্ত হয়, তাহলে সে তার দুর্নীতির মাধ্যমে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছায়। আর যারা সৎ, তারা তো সব সময় ন্যায়ের ধারক-বাহক। তারা তো আপস করেন না। এটা আসলে পুরোপুরি ব্যক্তির উপর নির্ভর করে। সরকার পরিবর্তন হলেও তো বিচারক পরিবর্তন হয়নি। আগেও যারা বিচারক ছিলেন, এখনও তারাই আছেন। সুতরাং ব্যক্তি বিচারকের চরিত্র বদল না হলে জনগণের যে আশঙ্কা সেটা তো দূর হবে না।”

প্রায় একই ধরনের মন্তব্য় করেছেন সাবেক জেলা জজ ও সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মাসদার হোসেনও। বিচারালয়ের স্বাধীনতার জন্য কেবল কর্তৃপক্ষকে দোষারোপ না করে, বিচারকের স্বাধীনচেতা হওয়ার ওপর গুরুত্ব দিতে চান তিনি।

ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, “প্রথমত, আমি মানুষ হিসেবে কতটুকু স্বাধীনচেতা, কতটুকু ন্যায়-নীতি বোধ আমার আছে- এর উপর নির্ভর করে ৯০ ভাগ। আর বাকি ১০ ভাগ হচ্ছে অথরিটির কারণে। একচেটিয়া অথরিটিকে দোষ দেওয়া হয়, এটা সত্যি না। কারণ, আমার যদি ব্যক্তিত্ব না থাকে, আমি যদি স্বচ্ছ না হই, তাহলে আমি কিভাবে চলবো?”

সুপ্রিম কোর্টের আরেক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা বলেন, “বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন, না পরাধীন এটা কিন্তু আলোচনার বিষয়। ধরেন, যেসব মামলায় খালাস হয়েছে, সেখানে কিন্তু অপরাধ আর অপরাধী পৃথক ধারণা। যে অপরাধটি ওই অপরাধী করেছেন বলে আদালতের কাছে মনে হয়েছে এবং তিনি সাজা দিয়েছেন। ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা বা ১০ ট্রাক অস্ত্রের মামলার কথা যদি বলি, সেখানে একটা আদালত বললো, আসামি অপরাধী। আবার উচ্চ আদালত একই স্বাক্ষ্য প্রমানের উপর ভিত্তি করে বলল, না, উনারা অপরাধী না। অপরাধ কিন্তু রয়ে গেল। কিন্তু অপরাধীদের ক্ষেত্রে দুই আদালত থেকে দুই ধরনের সিদ্ধান্ত এলো। উচ্চ আদালত কিন্তু অপরাধীদের দণ্ড মওকুফ করলেন কিন্তু অপরাধটাকে ট্র্যাশ করলেন না। আর স্বাধীনের ব্যপারটা এটা অনেকখানি ব্যক্তির উপর নির্ভর করে।

ডয়চে ভেলে বাংলা

বিচার বিভাগ শতভাগ স্বাধীনে কতটা আন্তরিক অন্তর্বর্তী সরকার?

০৫:৩০:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫

বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে যে আশা তৈরি হয়েছিল সেটা কি আদৌ বাস্তবে রূপ নিয়েছে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনো অনেকটা পথ বাকি।

কেবল সরকার নয়, বিচারকের ওপরেও নির্ভর করে স্বাধীনতা

সাবেক জেলা জজ ও সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্টার জেনারেল ইকতেদার আহমেদ মনে করেন, বিচারকের নীতি ও ব্যক্তিত্বের ওপরও অনেকাংশে বিচারবিভাগের স্বাধীনতা নির্ভর করে।

ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, “সংবিধানে তো বলা আছে, বিচারকরা সম্পূর্ণ স্বাধীন। এই স্বাধীনতা কে কতটুকু ব্যবহার করবে সেটা ব্যক্তি বিচারকের উপর নির্ভর করে। কেউ যদি দুর্নীতিগ্রস্ত হয়, তাহলে সে তার দুর্নীতির মাধ্যমে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছায়। আর যারা সৎ, তারা তো সব সময় ন্যায়ের ধারক-বাহক। তারা তো আপস করেন না। এটা আসলে পুরোপুরি ব্যক্তির উপর নির্ভর করে। সরকার পরিবর্তন হলেও তো বিচারক পরিবর্তন হয়নি। আগেও যারা বিচারক ছিলেন, এখনও তারাই আছেন। সুতরাং ব্যক্তি বিচারকের চরিত্র বদল না হলে জনগণের যে আশঙ্কা সেটা তো দূর হবে না।”

প্রায় একই ধরনের মন্তব্য় করেছেন সাবেক জেলা জজ ও সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মাসদার হোসেনও। বিচারালয়ের স্বাধীনতার জন্য কেবল কর্তৃপক্ষকে দোষারোপ না করে, বিচারকের স্বাধীনচেতা হওয়ার ওপর গুরুত্ব দিতে চান তিনি।

ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, “প্রথমত, আমি মানুষ হিসেবে কতটুকু স্বাধীনচেতা, কতটুকু ন্যায়-নীতি বোধ আমার আছে- এর উপর নির্ভর করে ৯০ ভাগ। আর বাকি ১০ ভাগ হচ্ছে অথরিটির কারণে। একচেটিয়া অথরিটিকে দোষ দেওয়া হয়, এটা সত্যি না। কারণ, আমার যদি ব্যক্তিত্ব না থাকে, আমি যদি স্বচ্ছ না হই, তাহলে আমি কিভাবে চলবো?”

সুপ্রিম কোর্টের আরেক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা বলেন, “বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন, না পরাধীন এটা কিন্তু আলোচনার বিষয়। ধরেন, যেসব মামলায় খালাস হয়েছে, সেখানে কিন্তু অপরাধ আর অপরাধী পৃথক ধারণা। যে অপরাধটি ওই অপরাধী করেছেন বলে আদালতের কাছে মনে হয়েছে এবং তিনি সাজা দিয়েছেন। ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা বা ১০ ট্রাক অস্ত্রের মামলার কথা যদি বলি, সেখানে একটা আদালত বললো, আসামি অপরাধী। আবার উচ্চ আদালত একই স্বাক্ষ্য প্রমানের উপর ভিত্তি করে বলল, না, উনারা অপরাধী না। অপরাধ কিন্তু রয়ে গেল। কিন্তু অপরাধীদের ক্ষেত্রে দুই আদালত থেকে দুই ধরনের সিদ্ধান্ত এলো। উচ্চ আদালত কিন্তু অপরাধীদের দণ্ড মওকুফ করলেন কিন্তু অপরাধটাকে ট্র্যাশ করলেন না। আর স্বাধীনের ব্যপারটা এটা অনেকখানি ব্যক্তির উপর নির্ভর করে।

ডয়চে ভেলে বাংলা