০৩:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ইশতেহারে শিশু নিরাপত্তা জোরদারের প্রতিশ্রুতি ভারতের স্পষ্ট বার্তা: যেখানেই হোক, সন্ত্রাস দমনে অভিযান চালানোর পূর্ণ অধিকার আছে ইভি আর স্মার্ট গ্যাজেটের জোরে দ্বিগুণের বেশি মুনাফা দেখাল শাওমি ভারতের রেড ফোর্ট হামলার উদ্ধার হওয়া ভিডিও: আত্মঘাতী হামলার সাফাই দিচ্ছিলেন উমর উন-নবী ইন্দোনেশিয়ার শিশুদের ভিডিও গেমে জঙ্গি প্রভাব: পুলিশ গাজীপুরে কয়েল কারখানায় ভয়াবহ আগুনঃ আশে পাশের মানুষ সরিয়ে নিয়েছে প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্র-চীন উত্তেজনায় এখন শুধু ‘ট্যাকটিক্যাল বিরতি’,সতর্ক করল সিঙ্গাপুর গানপাউডার–পেট্রোল দিয়ে ময়মনসিংহে ট্রেন বগিতে আগুন ধামরাইয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের শাখায় পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ শীতেও কমছে না দাম: খুলনার কাঁচা বাজারে নতুন করে দাম বেড়েছে

বাঁধ ভাঙনের আতঙ্কে পাইকগাছার ১৩ গ্রামের ১৫ হাজার মানুষ

  • Sarakhon Report
  • ১১:৫০:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫
  • 59

ভদ্রা নদীর বাঁধে নতুন ভাঙন

খুলনার পাইকগাছার ভদ্রা নদীর কালিনগর ওয়াপদার বাঁধে বড় ধরনের ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে দেলুটি ইউনিয়নের ১৩টি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নতুন করে প্লাবনের আতঙ্কে রয়েছেন।

গত দুই দশকে এই এলাকায় অব্যাহত ভাঙনে হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমি ও অসংখ্য ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বলে জানান ক্ষতিগ্রস্তরা। পূর্বে লবণপানি ঢুকে দীর্ঘ জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছিল। এবারও এক কিলোমিটার দূরে প্রায় ৪০০ মিটার বাঁধে ফাটল ও ভাঙন ধরা পড়েছে।

গত বছরের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা

গত বছর একই এলাকায় বাঁধ ভেঙে দেলুটি ইউনিয়নের ১৩ গ্রামের মানুষ লবণ পানিতে বন্দি হয়েছিলেন। পানির তোড়ে মাছের ঘের, মাটির ঘর, ধান, সবজি ও বিভিন্ন ফসল ভেসে গিয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল কালীনগর, দারুল মল্লিক, হরিণখোলা, সৈয়দখালি, সেনেরবেড়, গোপীপাগলা, খেজুরতলা, তেলিখালী, হাটবাড়ী, ফুলবাড়ি, বিগরদানা, দুর্গাপুর ও নোয়াই গ্রামের মানুষ।

নতুন আতঙ্ক ও স্থানীয়দের প্রতিবাদ

চলতি বছরের আগস্টেও আবার নতুন ভাঙন দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, যেকোনও মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হতে পারে। ২০ আগস্ট দুপুরে তারা বাঁধের ওপর দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করেন।

বর্তমানে কালিনগর সাধুঘাটের অমল কবিরাজের বাড়ি থেকে প্রভাষ মণ্ডলের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ৪০০ মিটার বাঁধে ফাটল ও ভাঙন হয়েছে। এতে পুরো এলাকায় নতুন করে প্লাবনের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসী দ্রুত ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ফেলার পাশাপাশি টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মতামত

দেলুটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সমরেশ হালদার বলেন, প্রতিবছরই বাঁধ ভাঙছে। ফলে লবণপানির কারণে কৃষিপ্রধান এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সঠিক নদীশাসন না করে অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ নির্মাণ করায় তা টেকসই হচ্ছে না। তাই এখনই স্থায়ী বাঁধ জরুরি।

বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সুকুমার কবিরাজ জানান, দেলুটি ইউনিয়নের উত্তরে মরা ভদ্রা নদী, দক্ষিণে শিপসা নদী এবং পূর্বে ভদ্রা নদী রয়েছে। ২২ নম্বর পোল্ডারের আওতায় থাকা পাঁচটি ওয়ার্ডের ১৩টি গ্রামে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার তরমুজসহ নানা ফসল উৎপাদিত হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের আশ্বাস

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম জানিয়েছেন, কালিনগরে বাঁধের ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়া পুরো পোল্ডারের জন্য টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের একটি বড় প্রকল্প ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ইশতেহারে শিশু নিরাপত্তা জোরদারের প্রতিশ্রুতি

বাঁধ ভাঙনের আতঙ্কে পাইকগাছার ১৩ গ্রামের ১৫ হাজার মানুষ

১১:৫০:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫

ভদ্রা নদীর বাঁধে নতুন ভাঙন

খুলনার পাইকগাছার ভদ্রা নদীর কালিনগর ওয়াপদার বাঁধে বড় ধরনের ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে দেলুটি ইউনিয়নের ১৩টি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নতুন করে প্লাবনের আতঙ্কে রয়েছেন।

গত দুই দশকে এই এলাকায় অব্যাহত ভাঙনে হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমি ও অসংখ্য ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বলে জানান ক্ষতিগ্রস্তরা। পূর্বে লবণপানি ঢুকে দীর্ঘ জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছিল। এবারও এক কিলোমিটার দূরে প্রায় ৪০০ মিটার বাঁধে ফাটল ও ভাঙন ধরা পড়েছে।

গত বছরের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা

গত বছর একই এলাকায় বাঁধ ভেঙে দেলুটি ইউনিয়নের ১৩ গ্রামের মানুষ লবণ পানিতে বন্দি হয়েছিলেন। পানির তোড়ে মাছের ঘের, মাটির ঘর, ধান, সবজি ও বিভিন্ন ফসল ভেসে গিয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল কালীনগর, দারুল মল্লিক, হরিণখোলা, সৈয়দখালি, সেনেরবেড়, গোপীপাগলা, খেজুরতলা, তেলিখালী, হাটবাড়ী, ফুলবাড়ি, বিগরদানা, দুর্গাপুর ও নোয়াই গ্রামের মানুষ।

নতুন আতঙ্ক ও স্থানীয়দের প্রতিবাদ

চলতি বছরের আগস্টেও আবার নতুন ভাঙন দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, যেকোনও মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হতে পারে। ২০ আগস্ট দুপুরে তারা বাঁধের ওপর দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করেন।

বর্তমানে কালিনগর সাধুঘাটের অমল কবিরাজের বাড়ি থেকে প্রভাষ মণ্ডলের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ৪০০ মিটার বাঁধে ফাটল ও ভাঙন হয়েছে। এতে পুরো এলাকায় নতুন করে প্লাবনের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসী দ্রুত ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ফেলার পাশাপাশি টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মতামত

দেলুটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সমরেশ হালদার বলেন, প্রতিবছরই বাঁধ ভাঙছে। ফলে লবণপানির কারণে কৃষিপ্রধান এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সঠিক নদীশাসন না করে অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ নির্মাণ করায় তা টেকসই হচ্ছে না। তাই এখনই স্থায়ী বাঁধ জরুরি।

বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সুকুমার কবিরাজ জানান, দেলুটি ইউনিয়নের উত্তরে মরা ভদ্রা নদী, দক্ষিণে শিপসা নদী এবং পূর্বে ভদ্রা নদী রয়েছে। ২২ নম্বর পোল্ডারের আওতায় থাকা পাঁচটি ওয়ার্ডের ১৩টি গ্রামে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার তরমুজসহ নানা ফসল উৎপাদিত হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের আশ্বাস

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম জানিয়েছেন, কালিনগরে বাঁধের ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়া পুরো পোল্ডারের জন্য টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের একটি বড় প্রকল্প ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে।