দক্ষিণ এশিয়ার জন্য সংকেত কী
চীনা প্রযুক্তি কোম্পানি শাওমি জানিয়েছে, সর্বশেষ প্রান্তিকে তাদের নেট মুনাফা দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে স্মার্ট টিভি, ওয়্যারেবল, হোম গ্যাজেটসহ “ইন্টারনেট অব থিংস” পণ্যের বিস্তৃতি এবং নতুন ইলেকট্রিক গাড়ি ব্যবসা। কোম্পানি বলছে, বহু বছর ধরে গড়ে তোলা “স্মার্ট ইকোসিস্টেম” কৌশল এখন ফল দিচ্ছে; একই ব্যবহারকারী একসঙ্গে ফোন, ঘরের গ্যাজেট আর ভবিষ্যতে গাড়িও শাওমির ইকোসিস্টেমে বেঁধে ফেলছেন। স্মার্টফোন বিক্রি তুলনামূলক স্থিতিশীল থাকলেও এখনো এশিয়ার বাজারে শাওমি ব্র্যান্ডের মূল ভরসা এটিই।
দক্ষিণ এশিয়ায়, বিশেষ করে বাংলাদেশের বাজারে, মধ্যম দামের শাওমি ফোনের উপস্থিতি বেশ শক্ত। ফলে এই মুনাফা–উদ্বৃত্ত থেকে কোম্পানি যদি আরও কিছুটা দাম কমানো বা অফার চালু রাখতে পারে, তা সরাসরি প্রভাব ফেলবে স্থানীয় ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের উপর। বিশ্লেষকদের মতে, ইভি ও উচ্চমূল্যের গ্যাজেট থেকে পাওয়া বাড়তি আয়ের একটা অংশ কমদামি ফোন সেগমেন্টে ভর্তুকি হিসেবে ব্যবহার করলে প্রতিযোগিতা আরও কঠিন হবে। এতে ছোট ব্র্যান্ডগুলো টিকিয়ে রাখা কঠিন হতে পারে এবং কয়েক বছরের মধ্যে বাজেট সেগমেন্টে একীভবনের ঢেউ দেখা যেতে পারে।
ব্যবহারকারীর লাভ-ক্ষতির হিসাব
ভোক্তার দৃষ্টিতে দেখলে, ভালো খবর হচ্ছে একই দামে আরও স্মার্ট ও ফিচারসমৃদ্ধ ফোন পাওয়ার সুযোগ বাড়বে। ফোন, টিভি, স্মার্টব্যান্ড, ইয়ারবাড থেকে শুরু করে ভবিষ্যতের ইলেকট্রিক গাড়ি—সব মিলিয়ে এক ধরনের “ওয়ান–ব্র্যান্ড লাইফস্টাইল” গড়ে ওঠার ইঙ্গিতও এখানে আছে। তবে ঝুঁকিটাও সেখানেই: ইকোসিস্টেম যত বন্ধ হবে, ব্যবহারকারীর পক্ষে অন্য ব্র্যান্ডে সরে যাওয়া তত কঠিন হয়ে পড়বে।
দক্ষিণ এশিয়ায় অনেক গ্রাহক বড় ফ্ল্যাগশিপ না নিয়ে ধীরে ধীরে, টুকরো টুকরো আপগ্রেডে অভ্যস্ত। তাদের জন্য বছরে একবার করে একটু ভালো ক্যামেরা, একটু বেশি ব্যাটারি আর কিছু এআই ফিচারসহ নতুন শাওমি ফোনই হয়তো যুক্তিযুক্ত আপডেট হবে। এর ফলে এলাকায় শাওমির উপস্থিতি আরও স্থায়ী হতে পারে। বিনিয়োগকারীরা এখন দেখছেন, ইভি ব্যবসা কতটা দ্রুত স্কেলে যেতে পারে, মুনাফা না কমিয়ে; আর বিভিন্ন দেশে ডেটা গোপনীয়তা বা ভর্তুকি নিয়ে নতুন কোন নিয়ম আসছে কি না, তার দিকেও নজর থাকবে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















