০৫:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
‘সুইম শেডি’ নাম নিয়ে আইনি লড়াইয়ে এমিনেম দক্ষিণ-পশ্চিম জাপানের উপকূলীয় শহর ওওইতায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, পুড়ল শতাধিক ঘর বিশ্বের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুতে এগোচ্ছে জাপান গ্রাহকদের ভোগান্তি কমছে না, এবার রবির বিরুদ্ধে অভিযোগ — জিপি ও বাংলালিংকের আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ইশতেহারে শিশু নিরাপত্তা জোরদারের প্রতিশ্রুতি ভারতের স্পষ্ট বার্তা: যেখানেই হোক, সন্ত্রাস দমনে অভিযান চালানোর পূর্ণ অধিকার আছে ইভি আর স্মার্ট গ্যাজেটের জোরে দ্বিগুণের বেশি মুনাফা দেখাল শাওমি ভারতের রেড ফোর্ট হামলার উদ্ধার হওয়া ভিডিও: আত্মঘাতী হামলার সাফাই দিচ্ছিলেন উমর উন-নবী ইন্দোনেশিয়ার শিশুদের ভিডিও গেমে জঙ্গি প্রভাব: পুলিশ গাজীপুরে কয়েল কারখানায় ভয়াবহ আগুনঃ আশে পাশের মানুষ সরিয়ে নিয়েছে প্রশাসন

ভারতের রেড ফোর্ট হামলার উদ্ধার হওয়া ভিডিও: আত্মঘাতী হামলার সাফাই দিচ্ছিলেন উমর উন-নবী

ভারতের রেড ফোর্টে সাম্প্রতিক গাড়ি বিস্ফোরণ তদন্তে বড় মোড় এনে দিয়েছে উমর উন-নবীর উদ্ধার হওয়া একটি ভিডিও। সেখানে তাকে আত্মঘাতী হামলাকে সরাসরি ‘শহীদ হওয়া’ বলে ব্যাখ্যা করতে দেখা গেছে। তদন্ত কর্মকর্তাদের ভাষায়—এই ভিডিও শুধু ব্যক্তিগত মত নয়, বরং চরমপন্থায় অন্যদের টানার সংগঠিত চেষ্টা হতে পারে।


এক মিনিটের ভিডিওতেই চরমপন্থার স্পষ্ট ইঙ্গিত

তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছিল চলতি বছরের এপ্রিল মাসে। এক ঘরের ভেতর একা বসে নবী ইংরেজিতে আত্মঘাতী হামলার পক্ষে যুক্তি সাজাচ্ছিলেন। তার বক্তব্যের কেন্দ্রে ছিল—এ ধরনের হামলা নাকি ‘আত্মোৎসর্গের পথ’।

মোবাইল ফোনটি উদ্ধার হয় নবীর নিজের বাড়ির কাছে একটি জলাধার থেকে। তদন্তকারীরা পরে জানতে পারেন—নবী ফোনটি তার ভাই জহুর ইলাহির কাছে দিয়ে গিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন, “আমার সম্পর্কে কোনো খবর শুনলে ফোনটা নষ্ট করে দেবে।”


ফোন উদ্ধার থেকে ফরেনসিক: তদন্তে নতুন দিক

জহুরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর ফোনটির অবস্থান সম্পর্কে জানা যায়। ফোনটি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা ভিডিওটিসহ গুরুত্বপূর্ণ ডাটা উদ্ধার করতে সক্ষম হন।

এখনো পর্যন্ত ভারতের কোনো সরকারি সংস্থা ভিডিও উদ্ধারকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেনি। তবে তদন্ত–সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র বলছে—ভিডিওটি এখন মামলার কেন্দ্রে।

স্পেশাল সেল আটকের ‘হোয়াইট–কলার’ মডিউলের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে—ভিডিওটির উদ্দেশ্য কী ছিল, এবং এটি শেয়ার করার কোনো পরিকল্পনা ছিল কি না।


এনআইএ–এর দাবি: উমর উন-নবীই ছিলেন আত্মঘাতী হামলাকারী

ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) ইতোমধ্যে জানিয়েছে—রেড ফোর্টে গাড়ি বোমা হামলা ঘটানো ব্যক্তি ছিলেন উমর উন-নবী।
অভিযোগ, তিনি সহযোগীদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে ১০ নভেম্বর হামলাটি ঘটান, যাতে কমপক্ষে ১২ জন নিহত হন।


চিকিৎসকদের নেটওয়ার্কে সবচেয়ে চরমপন্থী ছিলেন নবী

তদন্ত কর্মকর্তাদের মতে, চিকিৎসকদের একটি নেটওয়ার্কের অংশ ছিলেন উমর উন-নবী।
এই নেটওয়ার্কে তিন চিকিৎসক—ডা. মুজাম্মিল গানাই, ডা. শাহিন শাহিদ এবং ডা. আদিল রাথার—ইতোমধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন।
আরও একজন চিকিৎসক, ডা. মুজাফফর, আফগানিস্তানে পালিয়ে গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ডা. নিসার উল-হাসানের দিকেও নজর রাখছে পুলিশ।

তদন্তকারীরা এখন পরীক্ষা করছেন—এই দলটি কি পালওয়ামার মতো আরেকটি বড় আত্মঘাতী হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল কি না।


চরমপন্থায় যুক্ত হওয়ার সামাজিক দিক

জম্মু–কাশ্মিরের সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক এসপি বৈদ বলেন, এ ধরনের ভিডিও সাধারণত তরুণদের ব্রেনওয়াশ করার কাজে ব্যবহৃত হয়।
তার মতে—যখন শিক্ষিত মানুষ, বিশেষ করে চিকিৎসকেরা নিজে থেকেই চরমপন্থাকে সমর্থন করেন, তখন তা সমাজের গভীর সংকটের ইঙ্গিত দেয়।

তিনি মনে করেন, স্থানীয় কমিউনিটিকে সক্রিয় করে তরুণদের সঙ্গে কথা বলা এখন জরুরি।


ভিডিও তৈরির উদ্দেশ্য: তদন্তকারীদের প্রধান প্রশ্ন

এনআইএ বলছে, ভিডিওটির কনটেন্ট, ভাষা, রেকর্ডিংয়ের পরিবেশ—সবকিছুই খুঁটিয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

তদন্ত–সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, “ইসলামে নিজের বা অন্যের প্রাণ নেওয়া নিষিদ্ধ। নবী যদি এটিকে ‘শহীদ হওয়া’ হিসেবে তুলে ধরেন, তার মানে তিনি হয়তো আত্মঘাতী হামলাকে ন্যায্য প্রমাণের চেষ্টা করেছেন। যাতে অন্যরাও এতে উৎসাহিত হয়।”

তবে ভিডিওটির সত্যতা এখনো স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি।


#ট্যাগ

ভারত
রেড_ফোর্ট_বিস্ফোরণ
এনআইএ
উমর_উন_নবী
চরমপন্থা
সন্ত্রাসবাদ


জনপ্রিয় সংবাদ

‘সুইম শেডি’ নাম নিয়ে আইনি লড়াইয়ে এমিনেম

ভারতের রেড ফোর্ট হামলার উদ্ধার হওয়া ভিডিও: আত্মঘাতী হামলার সাফাই দিচ্ছিলেন উমর উন-নবী

০৩:১১:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫

ভারতের রেড ফোর্টে সাম্প্রতিক গাড়ি বিস্ফোরণ তদন্তে বড় মোড় এনে দিয়েছে উমর উন-নবীর উদ্ধার হওয়া একটি ভিডিও। সেখানে তাকে আত্মঘাতী হামলাকে সরাসরি ‘শহীদ হওয়া’ বলে ব্যাখ্যা করতে দেখা গেছে। তদন্ত কর্মকর্তাদের ভাষায়—এই ভিডিও শুধু ব্যক্তিগত মত নয়, বরং চরমপন্থায় অন্যদের টানার সংগঠিত চেষ্টা হতে পারে।


এক মিনিটের ভিডিওতেই চরমপন্থার স্পষ্ট ইঙ্গিত

তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছিল চলতি বছরের এপ্রিল মাসে। এক ঘরের ভেতর একা বসে নবী ইংরেজিতে আত্মঘাতী হামলার পক্ষে যুক্তি সাজাচ্ছিলেন। তার বক্তব্যের কেন্দ্রে ছিল—এ ধরনের হামলা নাকি ‘আত্মোৎসর্গের পথ’।

মোবাইল ফোনটি উদ্ধার হয় নবীর নিজের বাড়ির কাছে একটি জলাধার থেকে। তদন্তকারীরা পরে জানতে পারেন—নবী ফোনটি তার ভাই জহুর ইলাহির কাছে দিয়ে গিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন, “আমার সম্পর্কে কোনো খবর শুনলে ফোনটা নষ্ট করে দেবে।”


ফোন উদ্ধার থেকে ফরেনসিক: তদন্তে নতুন দিক

জহুরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর ফোনটির অবস্থান সম্পর্কে জানা যায়। ফোনটি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা ভিডিওটিসহ গুরুত্বপূর্ণ ডাটা উদ্ধার করতে সক্ষম হন।

এখনো পর্যন্ত ভারতের কোনো সরকারি সংস্থা ভিডিও উদ্ধারকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেনি। তবে তদন্ত–সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র বলছে—ভিডিওটি এখন মামলার কেন্দ্রে।

স্পেশাল সেল আটকের ‘হোয়াইট–কলার’ মডিউলের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে—ভিডিওটির উদ্দেশ্য কী ছিল, এবং এটি শেয়ার করার কোনো পরিকল্পনা ছিল কি না।


এনআইএ–এর দাবি: উমর উন-নবীই ছিলেন আত্মঘাতী হামলাকারী

ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) ইতোমধ্যে জানিয়েছে—রেড ফোর্টে গাড়ি বোমা হামলা ঘটানো ব্যক্তি ছিলেন উমর উন-নবী।
অভিযোগ, তিনি সহযোগীদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে ১০ নভেম্বর হামলাটি ঘটান, যাতে কমপক্ষে ১২ জন নিহত হন।


চিকিৎসকদের নেটওয়ার্কে সবচেয়ে চরমপন্থী ছিলেন নবী

তদন্ত কর্মকর্তাদের মতে, চিকিৎসকদের একটি নেটওয়ার্কের অংশ ছিলেন উমর উন-নবী।
এই নেটওয়ার্কে তিন চিকিৎসক—ডা. মুজাম্মিল গানাই, ডা. শাহিন শাহিদ এবং ডা. আদিল রাথার—ইতোমধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন।
আরও একজন চিকিৎসক, ডা. মুজাফফর, আফগানিস্তানে পালিয়ে গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ডা. নিসার উল-হাসানের দিকেও নজর রাখছে পুলিশ।

তদন্তকারীরা এখন পরীক্ষা করছেন—এই দলটি কি পালওয়ামার মতো আরেকটি বড় আত্মঘাতী হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল কি না।


চরমপন্থায় যুক্ত হওয়ার সামাজিক দিক

জম্মু–কাশ্মিরের সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক এসপি বৈদ বলেন, এ ধরনের ভিডিও সাধারণত তরুণদের ব্রেনওয়াশ করার কাজে ব্যবহৃত হয়।
তার মতে—যখন শিক্ষিত মানুষ, বিশেষ করে চিকিৎসকেরা নিজে থেকেই চরমপন্থাকে সমর্থন করেন, তখন তা সমাজের গভীর সংকটের ইঙ্গিত দেয়।

তিনি মনে করেন, স্থানীয় কমিউনিটিকে সক্রিয় করে তরুণদের সঙ্গে কথা বলা এখন জরুরি।


ভিডিও তৈরির উদ্দেশ্য: তদন্তকারীদের প্রধান প্রশ্ন

এনআইএ বলছে, ভিডিওটির কনটেন্ট, ভাষা, রেকর্ডিংয়ের পরিবেশ—সবকিছুই খুঁটিয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

তদন্ত–সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, “ইসলামে নিজের বা অন্যের প্রাণ নেওয়া নিষিদ্ধ। নবী যদি এটিকে ‘শহীদ হওয়া’ হিসেবে তুলে ধরেন, তার মানে তিনি হয়তো আত্মঘাতী হামলাকে ন্যায্য প্রমাণের চেষ্টা করেছেন। যাতে অন্যরাও এতে উৎসাহিত হয়।”

তবে ভিডিওটির সত্যতা এখনো স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি।


#ট্যাগ

ভারত
রেড_ফোর্ট_বিস্ফোরণ
এনআইএ
উমর_উন_নবী
চরমপন্থা
সন্ত্রাসবাদ