০৬:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫
জাপানে ঝিনুকের সংকট, শীতের প্রিয় খাবার ধরেছে ধাক্কা ইন্দোনেশিয়া–শ্রীলঙ্কা–থাইল্যান্ডে প্রাণঘাতী বন্যা: বিজ্ঞানীদের চোখে জলবায়ু সতর্কবার্তা নোটিফিকেশন জঞ্জাল সামলাতে অ্যান্ড্রয়েড ১৬–তে এআই সারাংশ ও নতুন কনট্রোল ১৯টি অ–ইউরোপীয় দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থগিত, অনিশ্চয়তায় হাজারো পরিবার ঈশ্বরদীতে ৮টি কুকুরছানা পানিতে ডুবিয়ে হত্যা, প্রাণিজ কল্যাণ আইনে গ্রেপ্তার ১ জয়পুরহাটে বাড়িতে ঢুকে নারীকে কুপিয়ে হত্যা, আহত ভাতিজি ঢাকা–সিলেট মহাসড়কে ট্রাক–পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ২ ঢাকা–ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে বাস–ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ৩ গাজীপুরের শ্রীপুরে অটোরিকশা গ্যারেজে আগুন, পুড়েছে ১৫ যানবাহন “‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’-এ ‘টাইটানিক’–ধরনের হৃদয়ভাঙা, বলছেন সমালোচকেরা”

প্রশান্ত মহাসাগরে মহড়ায় চীনের ব্যয় ২১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে

তাইওয়ানের হিসাব
তাইওয়ানের সরকারি হিসাবে দেখা গেছে, ২০২৪ সালে চীন তাইওয়ান প্রণালী, পূর্ব চীন সাগর, দক্ষিণ চীন সাগর এবং পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে সামরিক মহড়ায় প্রায় ২১ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। এ ব্যয় ২০২৩ সালের তুলনায় প্রায় ৪০% বেশি। এই হিসাব করা হয়েছে চীনা বিমান ও নৌযানের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে এবং জ্বালানি ও অন্যান্য খরচ যোগ করে।

প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করেছে তাইওয়ানের সশস্ত্র বাহিনী। রয়টার্স তা পর্যালোচনা করেছে এবং চারজন তাইওয়ান কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ ধরনের বিশ্লেষণ খুব কম প্রকাশিত হয় এবং এতে বোঝা যাচ্ছে, বেইজিং তার সামরিক কর্মকাণ্ড দ্রুত বাড়াচ্ছে, যা আঞ্চলিক দেশগুলো এবং যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্বিগ্ন করছে।

বাজেট ও বাস্তবতা
চীন গত বছর প্রতিরক্ষা খাতে আনুষ্ঠানিকভাবে ১.৬৭ ট্রিলিয়ন ইউয়ান (প্রায় ২৩৩ বিলিয়ন ডলার) বাজেট ঘোষণা করেছিল। তবে কূটনীতিকরা মনে করেন, প্রকৃত ব্যয় চেয়ে অনেক বেশি। বেইজিং খরচের বিস্তারিত কখনও প্রকাশ করে না।

চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও তাইওয়ান বিষয়ক দপ্তর রয়টার্সের প্রশ্নে কোনো মন্তব্য করেনি। বেইজিং দাবি করে আসছে যে তাদের প্রতিরক্ষা বাজেট স্বচ্ছ এবং হুমকির কারণ নয়।

সামরিক কর্মকাণ্ডের বৃদ্ধি
প্রতিবেদন অনুযায়ী,

২০২৪ সালে চীনা বিমান (যেমন জে-১০ যুদ্ধবিমান, এইচ-৬ বোমারু বিমান ও ড্রোন) প্রায় ১২ হাজার উড্ডয়ন করেছে। মোট আকাশে থাকার সময় ছিল প্রায় ৩৭ হাজার ঘণ্টা—যা ২০২৩ সালের তুলনায় ৩০% বেশি।

নৌবাহিনী ৮৬ হাজারের বেশি যাত্রা করেছে, যার মধ্যে বিমানবাহী রণতরী ও ডেস্ট্রয়ারও ছিল। মোট সমুদ্রে কাটানো সময় ছিল ২০ লাখ ঘণ্টারও বেশি—যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ২০% বেশি।

কোথায় বেশি তৎপরতা
প্রতিবেদনে দেখা গেছে,

৩৪% নৌ চলাচল হয়েছে দক্ষিণ চীন সাগরে, যা অত্যন্ত বিতর্কিত অঞ্চল।

২৮% হয়েছে পূর্ব চীন সাগরে, যা জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকা।

১৪% হয়েছে তাইওয়ান প্রণালীতে।

একজন কর্মকর্তা বলেন, “চীন প্রথম দ্বীপমালা ঘিরে তাদের সামরিক শক্তি প্রদর্শনকে স্বাভাবিক করে তুলতে চাইছে।”
এই দ্বীপমালা জাপান থেকে শুরু হয়ে তাইওয়ান, ফিলিপাইন হয়ে বোর্নিও পর্যন্ত বিস্তৃত।

বৈশ্বিক সক্রিয়তা
চীনের নৌবাহিনী আরও দূরবর্তী এলাকায়ও সক্রিয় হয়েছে। তারা সোমালিয়া উপকূলে জলদস্যু দমনে অংশ নিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, আলাস্কা ও উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরে চীনের নৌ চলাচল বেড়েছে।

ব্যয়ের তুলনা
এই গবেষণায় মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫২ বিলিয়ন ইউয়ান (২১.২৫ বিলিয়ন ডলার)। এতে রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত ও বেতনও অন্তর্ভুক্ত।
এটি চীনের ঘোষিত প্রতিরক্ষা বাজেটের প্রায় ৯%—যা ২০২৩ সালে ছিল ৭%।
তুলনায়, এই অঙ্ক তাইওয়ানের ২০২৪ সালের প্রতিরক্ষা বাজেটের এক-চতুর্থাংশ সমান।

তাইওয়ানের উদ্বেগ
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, “চীনের ধারাবাহিক সামরিক সম্প্রসারণ ও ধূসর অঞ্চলের উসকানি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।”

জনপ্রিয় সংবাদ

জাপানে ঝিনুকের সংকট, শীতের প্রিয় খাবার ধরেছে ধাক্কা

প্রশান্ত মহাসাগরে মহড়ায় চীনের ব্যয় ২১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে

০৩:৩৬:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৫

তাইওয়ানের হিসাব
তাইওয়ানের সরকারি হিসাবে দেখা গেছে, ২০২৪ সালে চীন তাইওয়ান প্রণালী, পূর্ব চীন সাগর, দক্ষিণ চীন সাগর এবং পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে সামরিক মহড়ায় প্রায় ২১ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। এ ব্যয় ২০২৩ সালের তুলনায় প্রায় ৪০% বেশি। এই হিসাব করা হয়েছে চীনা বিমান ও নৌযানের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে এবং জ্বালানি ও অন্যান্য খরচ যোগ করে।

প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করেছে তাইওয়ানের সশস্ত্র বাহিনী। রয়টার্স তা পর্যালোচনা করেছে এবং চারজন তাইওয়ান কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ ধরনের বিশ্লেষণ খুব কম প্রকাশিত হয় এবং এতে বোঝা যাচ্ছে, বেইজিং তার সামরিক কর্মকাণ্ড দ্রুত বাড়াচ্ছে, যা আঞ্চলিক দেশগুলো এবং যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্বিগ্ন করছে।

বাজেট ও বাস্তবতা
চীন গত বছর প্রতিরক্ষা খাতে আনুষ্ঠানিকভাবে ১.৬৭ ট্রিলিয়ন ইউয়ান (প্রায় ২৩৩ বিলিয়ন ডলার) বাজেট ঘোষণা করেছিল। তবে কূটনীতিকরা মনে করেন, প্রকৃত ব্যয় চেয়ে অনেক বেশি। বেইজিং খরচের বিস্তারিত কখনও প্রকাশ করে না।

চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও তাইওয়ান বিষয়ক দপ্তর রয়টার্সের প্রশ্নে কোনো মন্তব্য করেনি। বেইজিং দাবি করে আসছে যে তাদের প্রতিরক্ষা বাজেট স্বচ্ছ এবং হুমকির কারণ নয়।

সামরিক কর্মকাণ্ডের বৃদ্ধি
প্রতিবেদন অনুযায়ী,

২০২৪ সালে চীনা বিমান (যেমন জে-১০ যুদ্ধবিমান, এইচ-৬ বোমারু বিমান ও ড্রোন) প্রায় ১২ হাজার উড্ডয়ন করেছে। মোট আকাশে থাকার সময় ছিল প্রায় ৩৭ হাজার ঘণ্টা—যা ২০২৩ সালের তুলনায় ৩০% বেশি।

নৌবাহিনী ৮৬ হাজারের বেশি যাত্রা করেছে, যার মধ্যে বিমানবাহী রণতরী ও ডেস্ট্রয়ারও ছিল। মোট সমুদ্রে কাটানো সময় ছিল ২০ লাখ ঘণ্টারও বেশি—যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ২০% বেশি।

কোথায় বেশি তৎপরতা
প্রতিবেদনে দেখা গেছে,

৩৪% নৌ চলাচল হয়েছে দক্ষিণ চীন সাগরে, যা অত্যন্ত বিতর্কিত অঞ্চল।

২৮% হয়েছে পূর্ব চীন সাগরে, যা জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকা।

১৪% হয়েছে তাইওয়ান প্রণালীতে।

একজন কর্মকর্তা বলেন, “চীন প্রথম দ্বীপমালা ঘিরে তাদের সামরিক শক্তি প্রদর্শনকে স্বাভাবিক করে তুলতে চাইছে।”
এই দ্বীপমালা জাপান থেকে শুরু হয়ে তাইওয়ান, ফিলিপাইন হয়ে বোর্নিও পর্যন্ত বিস্তৃত।

বৈশ্বিক সক্রিয়তা
চীনের নৌবাহিনী আরও দূরবর্তী এলাকায়ও সক্রিয় হয়েছে। তারা সোমালিয়া উপকূলে জলদস্যু দমনে অংশ নিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, আলাস্কা ও উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরে চীনের নৌ চলাচল বেড়েছে।

ব্যয়ের তুলনা
এই গবেষণায় মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫২ বিলিয়ন ইউয়ান (২১.২৫ বিলিয়ন ডলার)। এতে রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত ও বেতনও অন্তর্ভুক্ত।
এটি চীনের ঘোষিত প্রতিরক্ষা বাজেটের প্রায় ৯%—যা ২০২৩ সালে ছিল ৭%।
তুলনায়, এই অঙ্ক তাইওয়ানের ২০২৪ সালের প্রতিরক্ষা বাজেটের এক-চতুর্থাংশ সমান।

তাইওয়ানের উদ্বেগ
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, “চীনের ধারাবাহিক সামরিক সম্প্রসারণ ও ধূসর অঞ্চলের উসকানি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।”