০৪:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫
ঈশ্বরদীতে ৮টি কুকুরছানা পানিতে ডুবিয়ে হত্যা, প্রাণিজ কল্যাণ আইনে গ্রেপ্তার ১ জয়পুরহাটে বাড়িতে ঢুকে নারীকে কুপিয়ে হত্যা, আহত ভাতিজি ঢাকা–সিলেট মহাসড়কে ট্রাক–পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ২ ঢাকা–ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে বাস–ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ৩ গাজীপুরের শ্রীপুরে অটোরিকশা গ্যারেজে আগুন, পুড়েছে ১৫ যানবাহন “‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’-এ ‘টাইটানিক’–ধরনের হৃদয়ভাঙা, বলছেন সমালোচকেরা” “আরও গভীর পরিসংখ্যান নিয়ে ফিরলো অ্যাপল মিউজিক ‘রিপ্লে ২০২৫’” “মিইয়ে যাওয়া জিডিপি সংখ্যার আড়ালে অস্ট্রেলিয়ার চাহিদা এখনো ‘গরম’” “নতুন নোভা এআই মডেল উন্মোচনে করপোরেট গ্রাহকদের মন জয়ে ঝুঁকল এডব্লিউএস” “মারাত্মক অগ্নিকাণ্ডের আঘাতে বিধ্বস্ত হংকং, তবু সামনে ‘দেশপ্রেমিকদের’ নির্বাচন”

“‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’-এ ‘টাইটানিক’–ধরনের হৃদয়ভাঙা, বলছেন সমালোচকেরা”

নতুন ট্রিপে আরও অন্ধকার, আরও আবেগ
জেমস ক্যামেরনের বহুল আলোচিত তৃতীয় ছবি ‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’ মুক্তির আগে প্রথম প্রদর্শনী ঘিরে এখনই তৈরি হয়েছে প্রবল আলোচনা। হলিউডের ডলবি থিয়েটারে আয়োজিত প্রিমিয়ার শো থেকে বেরিয়ে সমালোচক ও অতিথিরা সামাজিক মাধ্যমে যে প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন, তাতে একদিকে দেখা যাচ্ছে চেনা মহাকাব্যিক দৃশ্যতায় নতুন স্তর যোগ হওয়ার প্রশংসা; অন্যদিকে উঠে আসছে অনেক বেশি ব্যক্তিগত ও করুণ আবেগের কথা। কেউ কেউ সরাসরি তুলনা করছেন ক্যামেরনের আরেক ক্লাসিক ‘টাইটানিক’-এর সঙ্গে, বলছেন এই ছবিতেও হৃদয়ভাঙার মুহূর্তের তীব্রতা সেই পর্যায়ের।

আগের পর্ব ‘দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’-এর কিছু বছর পরের গল্প নিয়ে তৈরি এই ছবিতে সুললি পরিবার আবারও নতুন এক নাভি গোষ্ঠীর সংস্পর্শে আসে। এ বার সবুজ অরণ্য আর নীল সমুদ্রের জগৎকে যেন আংশিক সরিয়ে জায়গা করে নিয়েছে আগ্নেয়গিরি, লাভা আর ছাইয়ে ঢেকে থাকা উপত্যকা। প্রাথমিক বর্ণনা ইঙ্গিত দিচ্ছে—কেবল বৃহৎ যুদ্ধ বা ভিজ্যুয়াল ভরাট ফ্রেমই নয়, পরিবারকে ঘিরে কঠিন সিদ্ধান্ত, ত্যাগ আর অপরিবর্তনীয় ক্ষতির গল্পও এখানে কেন্দ্রীয়। সেই সঙ্গে মানুষের আগ্রাসন, উপনিবেশবাদী মানসিকতা আর স্থানীয় প্রতিরোধের পুরনো সূত্রও আবারও উপস্থিত, যদিও এবার তা আরও ব্যক্তিগত মাত্রা পেয়েছে।

প্রযুক্তি ও ভিএফএক্সের বিচারে ছবিটি নিয়ে প্রত্যাশা ছিল আকাশছোঁয়া, আর প্রথম প্রতিক্রিয়ায় সেই দিকেও প্রশংসা কম নেই। প্রাণী ও পরিবেশের সূক্ষ্ম নকশা, আলো–ছায়ার ব্যবহার এবং মোশন-ক্যাপচার পারফরম্যান্স—সবকিছু মিলিয়ে অনেকেই বলছেন, বড় পর্দার অভিজ্ঞতা ছাড়া এই ছবি বোঝা কঠিন। নির্বাচিত কিছু হলে উচ্চ ফ্রেমরেট ও ৩ডি স্ক্রিনিং থাকছে বলে ইঙ্গিত মিলেছে, যদিও প্রযুক্তিগত এই সিদ্ধান্ত নিয়ে মতভেদ আছে। তবে বেশির ভাগ প্রতিক্রিয়াই বলছে, এবার প্রযুক্তি গল্পকে ছাপিয়ে না গিয়ে তাকে সমর্থন করেছে, যা অনেক দর্শকের জন্য স্বস্তিকর।

সমালোচনাও রয়েছে কিছু ক্ষেত্রে। এক শ্রেণির রিভিউয়ার মনে করছেন, মানুষের আগ্রাসন ও নাভিদের রক্ষার লড়াইয়ের মূল কাঠামো আগের দুই ছবির সঙ্গেই অনেক মিল রেখে এগোয়। আবার সুললি পরিবারকে একটি নতুন অঞ্চল ও সংস্কৃতির মধ্যে নিয়ে যাওয়ার কাঠামোও কারও কারও কাছে কিছুটা পুনরাবৃত্ত মনে হয়েছে। তবু তাঁদের কথায়, ক্যামেরনের গল্প বলার ভঙ্গি, অ্যাকশন ও শান্ত মুহূর্তের ছন্দবিন্যাস আর চরিত্রগুলোর প্রতি যত্ন ছবিটিকে শেষ পর্যন্ত টেনে রাখে। বিশেষ করে শোক, পিতৃত্ব–মাতৃত্ব আর প্রতিরোধের মূল্য নিয়ে যে নীরব দৃশ্যগুলো আছে, সেগুলোই নাকি দর্শকের মনে অনেক বেশি থেকে যাচ্ছে।

বক্স অফিসের দৃষ্টিকোণ থেকে ‘ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’ আধুনিক হলিউডের জন্য বড় পরীক্ষা। আগের দুই ‘অ্যাভাটার’ শেষ পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী বিপুল আয় করলেও, এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন—স্ট্রিমিং অভ্যাস অনেক বেশি প্রতিষ্ঠিত, আর দর্শকের মনোযোগ ভাগ হয়ে আছে অসংখ্য কনটেন্টের মধ্যে। স্টুডিওগুলো দেখবে, মানুষ কি আবারও প্রিমিয়াম ফরম্যাটে একাধিকবার হলে ফিরতে রাজি, নাকি এই বিশাল বাজেটের সিনেমা কেবল প্রথম সপ্তাহের ঢেউয়ে ভর করে টিকে থাকবে।

ডিজনির জন্যও stakes কম নয়। ২০থ সেঞ্চুরি স্টুডিওজকে অধিগ্রহণের পর থেকে ‘অ্যাভাটার’ এখন তাদের অন্যতম বড় ফ্র্যাঞ্চাইজি; তাই শুধু টিকিট বিক্রিই নয়, থিম পার্ক, মার্চেন্ডাইজ, গেম এবং স্ট্রিমিং স্পিন–অফ—সব কিছুর ভবিষ্যৎ অনেকটাই নির্ভর করছে এই পর্বের গ্রহণযোগ্যতার ওপর। যদি সমালোচক ও ভক্তের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দীর্ঘ সময় ধরে থাকে, তবে প্যান্ডোরার বিশ্ব আরও বিস্তৃত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া তাদের জন্য সহজ হবে। আর যদি মৌখিক সমালোচনা মিশ্র হয়ে যায়, তবে পরবর্তী সিকুয়েলের স্কেল ও বাজেট নিয়ে ভাবতে হবে নতুন করে।

দর্শকের কাছে অবশ্য হিসাবটা আরও সোজা—তারা জানতে চাইবে, এত বছর পর প্যান্ডোরায় ফেরার মতো গল্প আছে কি না। প্রথম প্রতিক্রিয়াগুলো অন্তত বলছে, বিশাল স্কেলের অ্যাকশন আর দুর্দান্ত ভিএফএক্সের পাশাপাশি সত্যিকারের ঝুঁকি নিয়েছে ছবিটি; প্রিয় কিছু চরিত্রের ভাগ্য বদলে গেছে অপরিবর্তনীয়ভাবে। বৃহত্তর দর্শক হলে গিয়ে একই অনুভূতি পেলে, ‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’কে হয়তো শুধু প্রযুক্তিগত কীর্তি নয়, আবেগের দাগ রেখে যাওয়া এক মহাকাব্য হিসেবেও মনে রাখবে অনেকে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ঈশ্বরদীতে ৮টি কুকুরছানা পানিতে ডুবিয়ে হত্যা, প্রাণিজ কল্যাণ আইনে গ্রেপ্তার ১

“‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’-এ ‘টাইটানিক’–ধরনের হৃদয়ভাঙা, বলছেন সমালোচকেরা”

০৩:২১:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫

নতুন ট্রিপে আরও অন্ধকার, আরও আবেগ
জেমস ক্যামেরনের বহুল আলোচিত তৃতীয় ছবি ‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’ মুক্তির আগে প্রথম প্রদর্শনী ঘিরে এখনই তৈরি হয়েছে প্রবল আলোচনা। হলিউডের ডলবি থিয়েটারে আয়োজিত প্রিমিয়ার শো থেকে বেরিয়ে সমালোচক ও অতিথিরা সামাজিক মাধ্যমে যে প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন, তাতে একদিকে দেখা যাচ্ছে চেনা মহাকাব্যিক দৃশ্যতায় নতুন স্তর যোগ হওয়ার প্রশংসা; অন্যদিকে উঠে আসছে অনেক বেশি ব্যক্তিগত ও করুণ আবেগের কথা। কেউ কেউ সরাসরি তুলনা করছেন ক্যামেরনের আরেক ক্লাসিক ‘টাইটানিক’-এর সঙ্গে, বলছেন এই ছবিতেও হৃদয়ভাঙার মুহূর্তের তীব্রতা সেই পর্যায়ের।

আগের পর্ব ‘দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’-এর কিছু বছর পরের গল্প নিয়ে তৈরি এই ছবিতে সুললি পরিবার আবারও নতুন এক নাভি গোষ্ঠীর সংস্পর্শে আসে। এ বার সবুজ অরণ্য আর নীল সমুদ্রের জগৎকে যেন আংশিক সরিয়ে জায়গা করে নিয়েছে আগ্নেয়গিরি, লাভা আর ছাইয়ে ঢেকে থাকা উপত্যকা। প্রাথমিক বর্ণনা ইঙ্গিত দিচ্ছে—কেবল বৃহৎ যুদ্ধ বা ভিজ্যুয়াল ভরাট ফ্রেমই নয়, পরিবারকে ঘিরে কঠিন সিদ্ধান্ত, ত্যাগ আর অপরিবর্তনীয় ক্ষতির গল্পও এখানে কেন্দ্রীয়। সেই সঙ্গে মানুষের আগ্রাসন, উপনিবেশবাদী মানসিকতা আর স্থানীয় প্রতিরোধের পুরনো সূত্রও আবারও উপস্থিত, যদিও এবার তা আরও ব্যক্তিগত মাত্রা পেয়েছে।

প্রযুক্তি ও ভিএফএক্সের বিচারে ছবিটি নিয়ে প্রত্যাশা ছিল আকাশছোঁয়া, আর প্রথম প্রতিক্রিয়ায় সেই দিকেও প্রশংসা কম নেই। প্রাণী ও পরিবেশের সূক্ষ্ম নকশা, আলো–ছায়ার ব্যবহার এবং মোশন-ক্যাপচার পারফরম্যান্স—সবকিছু মিলিয়ে অনেকেই বলছেন, বড় পর্দার অভিজ্ঞতা ছাড়া এই ছবি বোঝা কঠিন। নির্বাচিত কিছু হলে উচ্চ ফ্রেমরেট ও ৩ডি স্ক্রিনিং থাকছে বলে ইঙ্গিত মিলেছে, যদিও প্রযুক্তিগত এই সিদ্ধান্ত নিয়ে মতভেদ আছে। তবে বেশির ভাগ প্রতিক্রিয়াই বলছে, এবার প্রযুক্তি গল্পকে ছাপিয়ে না গিয়ে তাকে সমর্থন করেছে, যা অনেক দর্শকের জন্য স্বস্তিকর।

সমালোচনাও রয়েছে কিছু ক্ষেত্রে। এক শ্রেণির রিভিউয়ার মনে করছেন, মানুষের আগ্রাসন ও নাভিদের রক্ষার লড়াইয়ের মূল কাঠামো আগের দুই ছবির সঙ্গেই অনেক মিল রেখে এগোয়। আবার সুললি পরিবারকে একটি নতুন অঞ্চল ও সংস্কৃতির মধ্যে নিয়ে যাওয়ার কাঠামোও কারও কারও কাছে কিছুটা পুনরাবৃত্ত মনে হয়েছে। তবু তাঁদের কথায়, ক্যামেরনের গল্প বলার ভঙ্গি, অ্যাকশন ও শান্ত মুহূর্তের ছন্দবিন্যাস আর চরিত্রগুলোর প্রতি যত্ন ছবিটিকে শেষ পর্যন্ত টেনে রাখে। বিশেষ করে শোক, পিতৃত্ব–মাতৃত্ব আর প্রতিরোধের মূল্য নিয়ে যে নীরব দৃশ্যগুলো আছে, সেগুলোই নাকি দর্শকের মনে অনেক বেশি থেকে যাচ্ছে।

বক্স অফিসের দৃষ্টিকোণ থেকে ‘ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’ আধুনিক হলিউডের জন্য বড় পরীক্ষা। আগের দুই ‘অ্যাভাটার’ শেষ পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী বিপুল আয় করলেও, এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন—স্ট্রিমিং অভ্যাস অনেক বেশি প্রতিষ্ঠিত, আর দর্শকের মনোযোগ ভাগ হয়ে আছে অসংখ্য কনটেন্টের মধ্যে। স্টুডিওগুলো দেখবে, মানুষ কি আবারও প্রিমিয়াম ফরম্যাটে একাধিকবার হলে ফিরতে রাজি, নাকি এই বিশাল বাজেটের সিনেমা কেবল প্রথম সপ্তাহের ঢেউয়ে ভর করে টিকে থাকবে।

ডিজনির জন্যও stakes কম নয়। ২০থ সেঞ্চুরি স্টুডিওজকে অধিগ্রহণের পর থেকে ‘অ্যাভাটার’ এখন তাদের অন্যতম বড় ফ্র্যাঞ্চাইজি; তাই শুধু টিকিট বিক্রিই নয়, থিম পার্ক, মার্চেন্ডাইজ, গেম এবং স্ট্রিমিং স্পিন–অফ—সব কিছুর ভবিষ্যৎ অনেকটাই নির্ভর করছে এই পর্বের গ্রহণযোগ্যতার ওপর। যদি সমালোচক ও ভক্তের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দীর্ঘ সময় ধরে থাকে, তবে প্যান্ডোরার বিশ্ব আরও বিস্তৃত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া তাদের জন্য সহজ হবে। আর যদি মৌখিক সমালোচনা মিশ্র হয়ে যায়, তবে পরবর্তী সিকুয়েলের স্কেল ও বাজেট নিয়ে ভাবতে হবে নতুন করে।

দর্শকের কাছে অবশ্য হিসাবটা আরও সোজা—তারা জানতে চাইবে, এত বছর পর প্যান্ডোরায় ফেরার মতো গল্প আছে কি না। প্রথম প্রতিক্রিয়াগুলো অন্তত বলছে, বিশাল স্কেলের অ্যাকশন আর দুর্দান্ত ভিএফএক্সের পাশাপাশি সত্যিকারের ঝুঁকি নিয়েছে ছবিটি; প্রিয় কিছু চরিত্রের ভাগ্য বদলে গেছে অপরিবর্তনীয়ভাবে। বৃহত্তর দর্শক হলে গিয়ে একই অনুভূতি পেলে, ‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’কে হয়তো শুধু প্রযুক্তিগত কীর্তি নয়, আবেগের দাগ রেখে যাওয়া এক মহাকাব্য হিসেবেও মনে রাখবে অনেকে।