০৬:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫
জাপানে ঝিনুকের সংকট, শীতের প্রিয় খাবার ধরেছে ধাক্কা ইন্দোনেশিয়া–শ্রীলঙ্কা–থাইল্যান্ডে প্রাণঘাতী বন্যা: বিজ্ঞানীদের চোখে জলবায়ু সতর্কবার্তা নোটিফিকেশন জঞ্জাল সামলাতে অ্যান্ড্রয়েড ১৬–তে এআই সারাংশ ও নতুন কনট্রোল ১৯টি অ–ইউরোপীয় দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থগিত, অনিশ্চয়তায় হাজারো পরিবার ঈশ্বরদীতে ৮টি কুকুরছানা পানিতে ডুবিয়ে হত্যা, প্রাণিজ কল্যাণ আইনে গ্রেপ্তার ১ জয়পুরহাটে বাড়িতে ঢুকে নারীকে কুপিয়ে হত্যা, আহত ভাতিজি ঢাকা–সিলেট মহাসড়কে ট্রাক–পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ২ ঢাকা–ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে বাস–ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ৩ গাজীপুরের শ্রীপুরে অটোরিকশা গ্যারেজে আগুন, পুড়েছে ১৫ যানবাহন “‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’-এ ‘টাইটানিক’–ধরনের হৃদয়ভাঙা, বলছেন সমালোচকেরা”

ইন্দোনেশিয়া–শ্রীলঙ্কা–থাইল্যান্ডে প্রাণঘাতী বন্যা: বিজ্ঞানীদের চোখে জলবায়ু সতর্কবার্তা

প্রচণ্ড বৃষ্টিতে ডুবে বহু শহর ও গ্রাম

গত এক সপ্তাহের টানা প্রবল বর্ষণ ও ভূমিধসে ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড এবং মালয়েশিয়ায় প্রাণ হারিয়েছেন এক হাজারেরও বেশি মানুষ। অঝোর বৃষ্টিতে নদী উপচে পড়ে, বাঁধ ভেঙে এবং পাহাড়ি ঢাল ভেঙে পড়ে ঘরবাড়ি, সেতু ও সড়ক মুহূর্তে হারিয়ে যায়। বহু এলাকায় এখনো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুৎ ও টেলিযোগাযোগ লাইন মেরামত হয়নি, ফলে উদ্ধারকাজে বিলম্ব হচ্ছে। হাজার হাজার মানুষ অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাসাঠাসি করে দিন কাটাচ্ছে, পর্যাপ্ত খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটও প্রকট হয়ে উঠেছে।

জলবায়ুবিদ ও দুর্যোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের অতিমাত্রার বৃষ্টিপাত এখন আর “অস্বাভাবিক” নয়, বরং উষ্ণতর পৃথিবীর নতুন বাস্তবতা। উষ্ণ সমুদ্র ও বায়ুমণ্ডল বেশি জলীয়বাষ্প ধারণ করে, যা হঠাৎ করে ভারি বর্ষণে রূপ নিলে স্বল্প সময়ে রেকর্ড ভাঙা বৃষ্টিপাত ঘটে। প্রাথমিক বিশ্লেষণ বলছে, সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে, তা মানবসৃষ্ট গ্লোবাল ওয়ার্মিং ছাড়া এত ঘনঘন হওয়া সম্ভব ছিল না। দ্রুত নগরায়ন ও বনউজাড়ের কারণে অনেক নদীতীর ও সমতল এলাকায় প্রাকৃতিক জলাধার ও আর্দ্রভূমি নষ্ট হয়েছে, ফলে অতিরিক্ত পানি শোষণ করার মতো জায়গা আর নেই।

A rescuer leads a sniffer dog during a search operation for flood victims in Batang Toru, North Sumatra, Indonesia, Wednesday, Dec. 3, 2025. (AP Photo/Binsar Bakkara)

ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা ও জাভা দ্বীপের বেশ কিছু জেলায় পাহাড়ি ঢালের পাদদেশে গড়ে ওঠা গ্রামগুলো হঠাৎ করেই কাদামাটির স্রোতে ভেসে গেছে। কিছু কিছু গ্রামে উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতে পেরেছেন কয়েক দিন পর, তখন পর্যন্ত অনেক বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে নদীর পানির চাপ সেতু ও রেললাইন ভেঙে দিয়েছে, ফলে ত্রাণবাহী ট্রাক ও ট্রেন আটকে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে মৃত্যু ও ক্ষতির সঠিক হিসাব পেতে আরও সময় লাগবে বলে কর্তৃপক্ষ মনে করছে।

অবকাঠামো ও পরিকল্পনার দুর্বলতা ফাঁস হয়ে গেল

এই বন্যা আবারও প্রমাণ করেছে, প্রাথমিক সতর্কতা ব্যবস্থা ও মৌলিক অবকাঠামো কতটা দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। অনেক বাসিন্দা জানিয়েছেন, সরকারি বার্তা বা মোবাইল অ্যালার্ট তারা পেয়েছেন তখনই, যখন বাড়ির ভেতর পানি ঢুকতে শুরু করেছে। কোথাও সাইরেন বাজেনি, আবার কোথাও বার্তা এমন ভাষায় এসেছে যা স্থানীয় মানুষের কাছে অপরিচিত। যে রাস্তা দিয়ে দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার কথা, সেখানেই অবৈধ নির্মাণ বা বস্তি গড়ে ওঠায় মানুষ আটকে পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব সমস্যা নতুন নয়, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ আর রাজনৈতিক অগ্রাধিকার না থাকায় সমাধানও এগোয় না।

Cars and houses are submerged in floodwaters in Songkhla province, southern Thailand, on Nov. 26, 2025. (AP Photo/Arnun Chonmahatrakool, File)

অর্থনৈতিক ক্ষতিও কম নয়। কৃষকরা ফসল কাটার ঠিক আগে সব হারিয়েছেন; গুদাম ও কারখানা ডুবে যাওয়ায় উৎপাদন বন্ধ, বন্দর কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় আঞ্চলিক সরবরাহ শৃঙ্খলেও প্রভাব পড়ছে। বীমা কোম্পানিগুলো বারবার এমন বিপর্যয়ের পর ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় প্রিমিয়াম বাড়াচ্ছে, কোথাও আবার নীতিমালা নবায়ন না করার ঝুঁকিও তৈরি হয়েছে। দরিদ্র পরিবারগুলোর জন্য এই ক্ষতি আরও মারাত্মক—কাঁচা ঘর ভেঙে গেছে, গবাদি পশু ও কাজের সরঞ্জাম হারিয়ে গেছে, আবার নতুন করে ঋণ নিয়ে জীবন শুরু করতে হচ্ছে।

বিজ্ঞানীরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, এল নিনোর মতো প্রাকৃতিক আবহাওয়া চক্র অবশ্যই ভূমিকা রাখে, কিন্তু তাপমাত্রা বাড়ার ফলে “বেসলাইন” নিজেই বদলে গেছে। ভারত মহাসাগর ও আশপাশের সমুদ্রের গড় উষ্ণতা বেড়ে যাওয়ায় ঝড় ও মৌসুমি বৃষ্টিপাতে অতিরিক্ত আর্দ্রতা যোগ হচ্ছে। একই সঙ্গে স্থলভাগের তাপপ্রবাহ আরও কঠিন হয়ে উঠছে, ফলে একদিকে ভয়াবহ বন্যা আর অন্যদিকে দীর্ঘ খরার চক্র একে অপরকে তীব্রতর করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এখন আর আগের আবহাওয়ার মানচিত্র ধরে পরিকল্পনা করা যাবে না; বাড়ি উঁচু করার পাশাপাশি ম্যানগ্রোভ ও জলাভূমি পুনরুদ্ধার, ড্রেনেজ খাল প্রশস্তকরণ আর ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি ঢালে নির্মাণ বন্ধ করা জরুরি। না হলে প্রতিটি নতুন ঝড় আসবে আগের দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ওপর আরও বড় আঘাত হয়ে।

Survivors walk past logs swept away by a flash flood in Batang Toru, North Sumatra, Indonesia, Tuesday, Dec. 2, 2025. (AP Photo/Binsar Bakkara)

 

Survivors walk past logs swept away by a flash flood in Batang Toru, North Sumatra, Indonesia, Tuesday, Dec. 2, 2025. (AP Photo/Binsar Bakkara)

 

Volunteers distribute relief goods to survivors at a village affected by flash flood in Pidie Jaya, Aceh province, Indonesia, Tuesday, Dec. 2, 2025. (AP Photo/Reza Saifullah)

 

A man cleans the mud and slush from his shop after floods in Gelioya, Sri Lanka Sri Lanka, Monday, Dec. 1, 2025. (AP Photo/Eranga Jayawardena)

 

People wade through floodwaters in Songkhla province, southern Thailand, on Nov. 27, 2025. (AP Photo/Sarot Meksophawannakul, File)

 

People walk past the ruins of houses at a village affected by flood in Batang Toru, North Sumatra, Indonesia, Wednesday, Dec. 3, 2025. (AP Photo/Binsar Bakkara)

জনপ্রিয় সংবাদ

জাপানে ঝিনুকের সংকট, শীতের প্রিয় খাবার ধরেছে ধাক্কা

ইন্দোনেশিয়া–শ্রীলঙ্কা–থাইল্যান্ডে প্রাণঘাতী বন্যা: বিজ্ঞানীদের চোখে জলবায়ু সতর্কবার্তা

০৫:৫৩:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫

প্রচণ্ড বৃষ্টিতে ডুবে বহু শহর ও গ্রাম

গত এক সপ্তাহের টানা প্রবল বর্ষণ ও ভূমিধসে ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড এবং মালয়েশিয়ায় প্রাণ হারিয়েছেন এক হাজারেরও বেশি মানুষ। অঝোর বৃষ্টিতে নদী উপচে পড়ে, বাঁধ ভেঙে এবং পাহাড়ি ঢাল ভেঙে পড়ে ঘরবাড়ি, সেতু ও সড়ক মুহূর্তে হারিয়ে যায়। বহু এলাকায় এখনো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুৎ ও টেলিযোগাযোগ লাইন মেরামত হয়নি, ফলে উদ্ধারকাজে বিলম্ব হচ্ছে। হাজার হাজার মানুষ অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাসাঠাসি করে দিন কাটাচ্ছে, পর্যাপ্ত খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটও প্রকট হয়ে উঠেছে।

জলবায়ুবিদ ও দুর্যোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের অতিমাত্রার বৃষ্টিপাত এখন আর “অস্বাভাবিক” নয়, বরং উষ্ণতর পৃথিবীর নতুন বাস্তবতা। উষ্ণ সমুদ্র ও বায়ুমণ্ডল বেশি জলীয়বাষ্প ধারণ করে, যা হঠাৎ করে ভারি বর্ষণে রূপ নিলে স্বল্প সময়ে রেকর্ড ভাঙা বৃষ্টিপাত ঘটে। প্রাথমিক বিশ্লেষণ বলছে, সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে, তা মানবসৃষ্ট গ্লোবাল ওয়ার্মিং ছাড়া এত ঘনঘন হওয়া সম্ভব ছিল না। দ্রুত নগরায়ন ও বনউজাড়ের কারণে অনেক নদীতীর ও সমতল এলাকায় প্রাকৃতিক জলাধার ও আর্দ্রভূমি নষ্ট হয়েছে, ফলে অতিরিক্ত পানি শোষণ করার মতো জায়গা আর নেই।

A rescuer leads a sniffer dog during a search operation for flood victims in Batang Toru, North Sumatra, Indonesia, Wednesday, Dec. 3, 2025. (AP Photo/Binsar Bakkara)

ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা ও জাভা দ্বীপের বেশ কিছু জেলায় পাহাড়ি ঢালের পাদদেশে গড়ে ওঠা গ্রামগুলো হঠাৎ করেই কাদামাটির স্রোতে ভেসে গেছে। কিছু কিছু গ্রামে উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতে পেরেছেন কয়েক দিন পর, তখন পর্যন্ত অনেক বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে নদীর পানির চাপ সেতু ও রেললাইন ভেঙে দিয়েছে, ফলে ত্রাণবাহী ট্রাক ও ট্রেন আটকে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে মৃত্যু ও ক্ষতির সঠিক হিসাব পেতে আরও সময় লাগবে বলে কর্তৃপক্ষ মনে করছে।

অবকাঠামো ও পরিকল্পনার দুর্বলতা ফাঁস হয়ে গেল

এই বন্যা আবারও প্রমাণ করেছে, প্রাথমিক সতর্কতা ব্যবস্থা ও মৌলিক অবকাঠামো কতটা দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। অনেক বাসিন্দা জানিয়েছেন, সরকারি বার্তা বা মোবাইল অ্যালার্ট তারা পেয়েছেন তখনই, যখন বাড়ির ভেতর পানি ঢুকতে শুরু করেছে। কোথাও সাইরেন বাজেনি, আবার কোথাও বার্তা এমন ভাষায় এসেছে যা স্থানীয় মানুষের কাছে অপরিচিত। যে রাস্তা দিয়ে দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার কথা, সেখানেই অবৈধ নির্মাণ বা বস্তি গড়ে ওঠায় মানুষ আটকে পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব সমস্যা নতুন নয়, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ আর রাজনৈতিক অগ্রাধিকার না থাকায় সমাধানও এগোয় না।

Cars and houses are submerged in floodwaters in Songkhla province, southern Thailand, on Nov. 26, 2025. (AP Photo/Arnun Chonmahatrakool, File)

অর্থনৈতিক ক্ষতিও কম নয়। কৃষকরা ফসল কাটার ঠিক আগে সব হারিয়েছেন; গুদাম ও কারখানা ডুবে যাওয়ায় উৎপাদন বন্ধ, বন্দর কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় আঞ্চলিক সরবরাহ শৃঙ্খলেও প্রভাব পড়ছে। বীমা কোম্পানিগুলো বারবার এমন বিপর্যয়ের পর ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় প্রিমিয়াম বাড়াচ্ছে, কোথাও আবার নীতিমালা নবায়ন না করার ঝুঁকিও তৈরি হয়েছে। দরিদ্র পরিবারগুলোর জন্য এই ক্ষতি আরও মারাত্মক—কাঁচা ঘর ভেঙে গেছে, গবাদি পশু ও কাজের সরঞ্জাম হারিয়ে গেছে, আবার নতুন করে ঋণ নিয়ে জীবন শুরু করতে হচ্ছে।

বিজ্ঞানীরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, এল নিনোর মতো প্রাকৃতিক আবহাওয়া চক্র অবশ্যই ভূমিকা রাখে, কিন্তু তাপমাত্রা বাড়ার ফলে “বেসলাইন” নিজেই বদলে গেছে। ভারত মহাসাগর ও আশপাশের সমুদ্রের গড় উষ্ণতা বেড়ে যাওয়ায় ঝড় ও মৌসুমি বৃষ্টিপাতে অতিরিক্ত আর্দ্রতা যোগ হচ্ছে। একই সঙ্গে স্থলভাগের তাপপ্রবাহ আরও কঠিন হয়ে উঠছে, ফলে একদিকে ভয়াবহ বন্যা আর অন্যদিকে দীর্ঘ খরার চক্র একে অপরকে তীব্রতর করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এখন আর আগের আবহাওয়ার মানচিত্র ধরে পরিকল্পনা করা যাবে না; বাড়ি উঁচু করার পাশাপাশি ম্যানগ্রোভ ও জলাভূমি পুনরুদ্ধার, ড্রেনেজ খাল প্রশস্তকরণ আর ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি ঢালে নির্মাণ বন্ধ করা জরুরি। না হলে প্রতিটি নতুন ঝড় আসবে আগের দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ওপর আরও বড় আঘাত হয়ে।

Survivors walk past logs swept away by a flash flood in Batang Toru, North Sumatra, Indonesia, Tuesday, Dec. 2, 2025. (AP Photo/Binsar Bakkara)

 

Survivors walk past logs swept away by a flash flood in Batang Toru, North Sumatra, Indonesia, Tuesday, Dec. 2, 2025. (AP Photo/Binsar Bakkara)

 

Volunteers distribute relief goods to survivors at a village affected by flash flood in Pidie Jaya, Aceh province, Indonesia, Tuesday, Dec. 2, 2025. (AP Photo/Reza Saifullah)

 

A man cleans the mud and slush from his shop after floods in Gelioya, Sri Lanka Sri Lanka, Monday, Dec. 1, 2025. (AP Photo/Eranga Jayawardena)

 

People wade through floodwaters in Songkhla province, southern Thailand, on Nov. 27, 2025. (AP Photo/Sarot Meksophawannakul, File)

 

People walk past the ruins of houses at a village affected by flood in Batang Toru, North Sumatra, Indonesia, Wednesday, Dec. 3, 2025. (AP Photo/Binsar Bakkara)