১১:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
 সিডনিতে জমজমাট ২০২৫ এআরআইএ অ্যাওয়ার্ড, এগিয়ে নিনাজারাচি ও ডম ডোলা তাইওয়ানের স্যাটেলাইট যুগের সূচনা: স্পেসএক্স উৎক্ষেপণে বড় অগ্রগতি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৫৯) শেয়ারবাজারে টানা উত্থান, বিনিয়োগকারীদের মনোভাব আরও ইতিবাচক সিরাজগঞ্জে ব্র্যাক–ফিলিপস ফাউন্ডেশনের নতুন চার হেলথ সেন্টার প্রশান্ত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা কমলেও আস্থার লড়াইয়ে এগোচ্ছে চীন কাশ্মীরি মানেই সন্ত্রাসী নন- ওমর আব্দুল্লাহ গোপন সস রক্ষায় কঠোর নজরদারি: রেইজিং কেইনসের রহস্যময় নিরাপত্তা ব্যবস্থা খাশোগি হত্যাকাণ্ডে সিআইএ–এর মূল্যায়নকে অস্বীকার করলেন ট্রাম্প ট্রাম্পের কৃষিপণ্য শুল্ক ছাড়ে যুক্তরাষ্ট্রে বাড়তে পারে ভারতের রপ্তানি

চট্টগ্রামের মেগা সড়ক প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণে অচলাবস্থা, মেয়াদ বাড়ল এক বছর

প্রকল্পের অগ্রগতি ও নতুন সময়সীমা

কালুরঘাট ব্রিজ থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় কাজ থমকে গেছে। এ কারণে সরকারের পক্ষ থেকে প্রকল্পটির মেয়াদ এক বছর বাড়ানো হয়েছে। এখন নতুন সমাপ্তির সময়সীমা জুন ২০২৬। প্রকল্পের ৮২ শতাংশ কাজ শেষ হলেও প্রায় ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ের পরও গুরুত্বপূর্ণ অংশ আটকে আছে।

বাজেট ও সময়সীমা পরিবর্তনের ইতিহাস

প্রকল্পটি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) বাস্তবায়ন করছে আবাসন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে। ২০১৭ সালের জুলাইয়ে প্রকল্প অনুমোদন হয় এবং ২০২০ সালের জুনে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারিত ছিল। কিন্তু পরপর কয়েকবার সময় বাড়ানো হয়।

প্রথমে জুন ২০২১ পর্যন্ত
পরে জুন ২০২২ পর্যন্ত
দ্বিতীয় সংশোধনীতে জুন ২০২৪ পর্যন্ত
এরপর জুন ২০২৫ পর্যন্ত
সর্বশেষ বাড়ানো হয়েছে জুন ২০২৬ পর্যন্ত
প্রকল্পের মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ২,২৭৫.৫২ কোটি টাকা। প্রথম সংশোধনীতে তা দাঁড়ায় ২,৩১০.২৪ কোটি টাকায়। দ্বিতীয় সংশোধনীতে বেড়ে হয় ২,৭৭৯.৩৯ কোটি টাকা। তবে সাম্প্রতিক মেয়াদ বৃদ্ধিতে নতুন করে কোনো ব্যয় বাড়ানো হয়নি।

প্রকল্পের গুরুত্ব

মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই সড়ক চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ শিল্প ও বাণিজ্য এলাকা যেমন চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, বক্সিরহাট, বাকলিয়া, চাঁদগাঁও ও কালুরঘাট শিল্পাঞ্চলকে জোয়ার-ভাটার প্লাবন থেকে রক্ষা করবে।
একই সঙ্গে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে যানজট কমাবে এবং চট্টগ্রাম শহরের যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত করবে। প্রকল্পটি প্রস্তাবিত আউটার রিং রোডের অংশ হিসেবে জোয়ারের পানির ক্ষতি থেকেও শহরকে সুরক্ষা দেবে।

কাজের অগ্রগতি ও বাধা

২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত প্রকল্পের ৮২ শতাংশ শারীরিক কাজ শেষ হয়েছে এবং ২,২০৩.৫৯ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণের জন্য অর্থ ছাড় না হওয়ায় দুই কিলোমিটার সড়ক ও দুটি রেগুলেটরের কাজ আটকে গেছে। ২০২২-২৩ এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে অর্থ মন্ত্রণালয় ভূমি অধিগ্রহণ খাতে বরাদ্দ স্থগিত রাখায় এ অচলাবস্থা তৈরি হয়।

নির্মাণ পরিকল্পনা

প্রকল্পের আওতায় তৈরি হওয়ার কথা রয়েছে—

১.৫০ কিলোমিটার বাঁধ-সংলগ্ন সড়ক
কর্ণফুলী নদীতে পড়া ১২টি খালের মুখে ১২টি রেগুলেটর
স্লোপ প্রটেকশন কাজ
রিটেইনিং ওয়াল
পানি চলাচলের ব্যবস্থা
২০২২ সালের ১৬ আগস্ট দ্বিতীয় সংশোধিত প্রকল্প অনুমোদন পায় একনেক সভায়। এর পর টেন্ডার আহ্বান করা হয় এবং ২০২৩ সালের জুলাইয়ে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণের অর্থ ছাড় না হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো থেমে যায়।

নতুন পদক্ষেপ

একজন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অবশিষ্ট ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রমে অর্থ ছাড়ের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব আবার সংশোধন করা হচ্ছে। বর্তমানে মেয়াদ জুন ২০২৫ হলেও এক বছর বাড়িয়ে জুন ২০২৬ পর্যন্ত করা হয়েছে, কোনো অতিরিক্ত ব্যয় ছাড়াই।

শর্তসাপেক্ষ অনুমোদন

বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) শর্তসাপেক্ষে মেয়াদ বৃদ্ধির অনুমোদন দিয়েছে। শর্তগুলো হলো—

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সব কাজ সম্পন্ন করতে হবে
নির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী এগোতে হবে
কাজ শেষ হওয়ার তিন মাসের মধ্যে প্রকল্প সমাপ্তি প্রতিবেদন জমা দিতে হবে
ভূমি অধিগ্রহণ দ্রুত শেষ করতে হবে
এই প্রকল্পকে জনস্বার্থে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হিসেবে উল্লেখ করেছে মন্ত্রণালয়।

জনপ্রিয় সংবাদ

 সিডনিতে জমজমাট ২০২৫ এআরআইএ অ্যাওয়ার্ড, এগিয়ে নিনাজারাচি ও ডম ডোলা

চট্টগ্রামের মেগা সড়ক প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণে অচলাবস্থা, মেয়াদ বাড়ল এক বছর

১২:৪৮:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৫

প্রকল্পের অগ্রগতি ও নতুন সময়সীমা

কালুরঘাট ব্রিজ থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় কাজ থমকে গেছে। এ কারণে সরকারের পক্ষ থেকে প্রকল্পটির মেয়াদ এক বছর বাড়ানো হয়েছে। এখন নতুন সমাপ্তির সময়সীমা জুন ২০২৬। প্রকল্পের ৮২ শতাংশ কাজ শেষ হলেও প্রায় ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ের পরও গুরুত্বপূর্ণ অংশ আটকে আছে।

বাজেট ও সময়সীমা পরিবর্তনের ইতিহাস

প্রকল্পটি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) বাস্তবায়ন করছে আবাসন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে। ২০১৭ সালের জুলাইয়ে প্রকল্প অনুমোদন হয় এবং ২০২০ সালের জুনে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারিত ছিল। কিন্তু পরপর কয়েকবার সময় বাড়ানো হয়।

প্রথমে জুন ২০২১ পর্যন্ত
পরে জুন ২০২২ পর্যন্ত
দ্বিতীয় সংশোধনীতে জুন ২০২৪ পর্যন্ত
এরপর জুন ২০২৫ পর্যন্ত
সর্বশেষ বাড়ানো হয়েছে জুন ২০২৬ পর্যন্ত
প্রকল্পের মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ২,২৭৫.৫২ কোটি টাকা। প্রথম সংশোধনীতে তা দাঁড়ায় ২,৩১০.২৪ কোটি টাকায়। দ্বিতীয় সংশোধনীতে বেড়ে হয় ২,৭৭৯.৩৯ কোটি টাকা। তবে সাম্প্রতিক মেয়াদ বৃদ্ধিতে নতুন করে কোনো ব্যয় বাড়ানো হয়নি।

প্রকল্পের গুরুত্ব

মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই সড়ক চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ শিল্প ও বাণিজ্য এলাকা যেমন চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, বক্সিরহাট, বাকলিয়া, চাঁদগাঁও ও কালুরঘাট শিল্পাঞ্চলকে জোয়ার-ভাটার প্লাবন থেকে রক্ষা করবে।
একই সঙ্গে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে যানজট কমাবে এবং চট্টগ্রাম শহরের যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত করবে। প্রকল্পটি প্রস্তাবিত আউটার রিং রোডের অংশ হিসেবে জোয়ারের পানির ক্ষতি থেকেও শহরকে সুরক্ষা দেবে।

কাজের অগ্রগতি ও বাধা

২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত প্রকল্পের ৮২ শতাংশ শারীরিক কাজ শেষ হয়েছে এবং ২,২০৩.৫৯ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণের জন্য অর্থ ছাড় না হওয়ায় দুই কিলোমিটার সড়ক ও দুটি রেগুলেটরের কাজ আটকে গেছে। ২০২২-২৩ এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে অর্থ মন্ত্রণালয় ভূমি অধিগ্রহণ খাতে বরাদ্দ স্থগিত রাখায় এ অচলাবস্থা তৈরি হয়।

নির্মাণ পরিকল্পনা

প্রকল্পের আওতায় তৈরি হওয়ার কথা রয়েছে—

১.৫০ কিলোমিটার বাঁধ-সংলগ্ন সড়ক
কর্ণফুলী নদীতে পড়া ১২টি খালের মুখে ১২টি রেগুলেটর
স্লোপ প্রটেকশন কাজ
রিটেইনিং ওয়াল
পানি চলাচলের ব্যবস্থা
২০২২ সালের ১৬ আগস্ট দ্বিতীয় সংশোধিত প্রকল্প অনুমোদন পায় একনেক সভায়। এর পর টেন্ডার আহ্বান করা হয় এবং ২০২৩ সালের জুলাইয়ে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণের অর্থ ছাড় না হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো থেমে যায়।

নতুন পদক্ষেপ

একজন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অবশিষ্ট ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রমে অর্থ ছাড়ের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব আবার সংশোধন করা হচ্ছে। বর্তমানে মেয়াদ জুন ২০২৫ হলেও এক বছর বাড়িয়ে জুন ২০২৬ পর্যন্ত করা হয়েছে, কোনো অতিরিক্ত ব্যয় ছাড়াই।

শর্তসাপেক্ষ অনুমোদন

বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) শর্তসাপেক্ষে মেয়াদ বৃদ্ধির অনুমোদন দিয়েছে। শর্তগুলো হলো—

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সব কাজ সম্পন্ন করতে হবে
নির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী এগোতে হবে
কাজ শেষ হওয়ার তিন মাসের মধ্যে প্রকল্প সমাপ্তি প্রতিবেদন জমা দিতে হবে
ভূমি অধিগ্রহণ দ্রুত শেষ করতে হবে
এই প্রকল্পকে জনস্বার্থে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হিসেবে উল্লেখ করেছে মন্ত্রণালয়।