১২:০২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫
আলোকে শিল্পে রূপ দেওয়া লিন্ডসি অ্যাডেলম্যান পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত সাপ ‘ইনল্যান্ড টাইপ্যান’: প্রাণঘাতী বিষ, শান্ত স্বভাবের এই সরীসৃপের অজানা বিস্ময় কুমিল্লায় দায়িত্ব পালনকালে অসুস্থ হয়ে পুলিশের মৃত্যু রবিবার থেকে কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন প্রাথমিক শিক্ষকরা ভিয়েতনামী ঔপন্যাসিক ড. ফান কুয়ে মাই শারজাহ বইমেলায় পাঠকদের মুগ্ধ করলেন মংলায় নৌকাডুবিতে নিখোঁজ প্রবাসী নারী পর্যটক ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও ৮৩৪ জন পাকিস্তানের দুর্ভিক্ষের বছর? প্রতিবন্ধী চাকরিপ্রত্যাশীদের আমরণ অনশন ৬৫ ঘণ্টা অতিক্রম, সরকারের নীরবতা অব্যাহত গণভোটের কোনো সাংবিধানিক ভিত্তি নেই: বিএনপি নেতা আমীর খসরু

রণক্ষেত্রে (পর্ব-৯২)

নবম পরিচ্ছেদ

যদি ওরা বলে, আমার নিজের মামীমার ঠিকানাই যদি না জানি তো খাবুকভ যাচ্ছিলুম আমি কোন্ ভরসায়। তাহলে বলব, ঠিকানা সংগ্রহের দপ্তর থেকে ওঁর ঠিকানাটা যোগাড় করে নিতে পারব, এই আশায় যাচ্ছিলুম। জবাবে ওরা যদি বলে: ‘আজকের দিনে ওসব ঠিকানা সংগ্রহের দপ্তর-টপ্তর পেতে কোন চুলোয়?’ তাহলে অবাক হবার ভান করে বলতুম: ‘কেন পেতুম না? আমাদের আর জামাসের মতো ছোট মফস্বল শহরেও বলে একটা ঠিকানা সংগ্রহের দপ্তর আছে।’

ওরা যদি জিজ্ঞেস করে: ‘তোমার মামা লাল রাশিয়া থেকে শ্বেত খাকতে ঢুকতে পারবেন আশা করলেন কী করে?’ তাহলে বলব, মামা আমার এমন চালাক বুড়ো শেয়াল যে খাকভ কোন ছার তিনি রুশদেশ থেকে ইউরোপেও ঢুকে পড়তে পারেন। কিন্তু আমি চালাক শেয়াল নই, কোনো কাজের নই আমি। এই পর্যন্ত বলে কান্নায় ভেঙে পড়ব। তবে বেশি কাঁদলে আবার সন্দেহ করবে। আমার অবস্থা। যে কতখানি শোচনীয় তা বোঝানোর জন্যে যতটা কান্না দরকার ততটাই কাঁদতে হবে। এই পর্যন্ত ভালোয়-ভালোয় কাটবে বলে মনে হচ্ছে। এর পরে নতুন কোনো পরিস্থিতি দেখা দিলে তখন অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা করলেই চলবে।

পিস্তলটা বের করে ঘরের মধ্যে উনোনের নিচে গজে রাখতে গিয়েও থমকে দাঁড়ালুম। মনে হল, ওরা যদি আমায় ছেড়েও দেয় তাহলেও পিস্তলটা নেবার জন্যে আর তো আমার পক্ষে এ-ঘরে ফিরে আসা সম্ভব হবে না। এই ভেবে মত পরিবর্তন করে ঘরের পেছনের জানলার দিকে এগিয়ে গেলুম। ঘরটায় জানলা ছিল দুটো। একটা জানলার নিচেই ছিল সদর রাস্তা, আর আরেকটার নিচে একটা সরু গলি।

এই গলিটার মাঝখান দিয়ে চলে গিয়েছিল একটা পায়ে-চলা পথ আর তার দুই ধারে সারি সারি বিছুটির ঘন ঝোপ। মেঝে থেকে তাড়াতাড়ি একখানা কাগজ কুড়িয়ে নিয়ে মাওজারটা আমি তাতে জড়িয়ে নিলুম। তারপর সেই ছোট্ট কাগজে পাকানো বান্ডিলটা বাইরের বিছুটির সবচেয়ে ঘন অংশটা তাক করে দিলুম ছুড়ে। ভাগ্যে তাড়াহুড়ো করে কাজটা করেছিলুম, কারণ এর পরমুহূর্তেই আমার ঘরের বাইরে অনেকগুলো পায়ের শব্দ পেলুম। আরও তিনজন কয়েদীকে ঘরটায় এনে পোরা হল। তাদের মধ্যে দু-জন ছিল চাষী।

ওদের অপরাধ, ফৌজের দরকারে গাড়ি জবরদখল করার সময় ওরা ঘোড়া লুকিয়ে ফেলেছিল। কয়েদীদের মধ্যে তৃতীয় জন ছিল একটি ছেলে। বুদ্ধিতে যার ব্যাখ্যা মেলে না এমন কোনো দুর্বোধ্য কারণে ছেলেটি এক মেশিনগান-চালকের এক্কাগাড়ি থেকে একটা বাড়তি স্প্রিং চুরি করেছিল। ঘরে পোরবার আগেই ছেলেটিকে মারধর করা হয়েছিল, তবু ওর মুখে কাতরানির আওয়াজ ছিল না। যেন কারো তাড়া খেয়ে ছুটে এসেছিল এমনিভাবে খালি জোরে-জোরে নিশ্বাস টানছিল ছেলেটি।

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

আলোকে শিল্পে রূপ দেওয়া লিন্ডসি অ্যাডেলম্যান

রণক্ষেত্রে (পর্ব-৯২)

০৮:০০:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নবম পরিচ্ছেদ

যদি ওরা বলে, আমার নিজের মামীমার ঠিকানাই যদি না জানি তো খাবুকভ যাচ্ছিলুম আমি কোন্ ভরসায়। তাহলে বলব, ঠিকানা সংগ্রহের দপ্তর থেকে ওঁর ঠিকানাটা যোগাড় করে নিতে পারব, এই আশায় যাচ্ছিলুম। জবাবে ওরা যদি বলে: ‘আজকের দিনে ওসব ঠিকানা সংগ্রহের দপ্তর-টপ্তর পেতে কোন চুলোয়?’ তাহলে অবাক হবার ভান করে বলতুম: ‘কেন পেতুম না? আমাদের আর জামাসের মতো ছোট মফস্বল শহরেও বলে একটা ঠিকানা সংগ্রহের দপ্তর আছে।’

ওরা যদি জিজ্ঞেস করে: ‘তোমার মামা লাল রাশিয়া থেকে শ্বেত খাকতে ঢুকতে পারবেন আশা করলেন কী করে?’ তাহলে বলব, মামা আমার এমন চালাক বুড়ো শেয়াল যে খাকভ কোন ছার তিনি রুশদেশ থেকে ইউরোপেও ঢুকে পড়তে পারেন। কিন্তু আমি চালাক শেয়াল নই, কোনো কাজের নই আমি। এই পর্যন্ত বলে কান্নায় ভেঙে পড়ব। তবে বেশি কাঁদলে আবার সন্দেহ করবে। আমার অবস্থা। যে কতখানি শোচনীয় তা বোঝানোর জন্যে যতটা কান্না দরকার ততটাই কাঁদতে হবে। এই পর্যন্ত ভালোয়-ভালোয় কাটবে বলে মনে হচ্ছে। এর পরে নতুন কোনো পরিস্থিতি দেখা দিলে তখন অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা করলেই চলবে।

পিস্তলটা বের করে ঘরের মধ্যে উনোনের নিচে গজে রাখতে গিয়েও থমকে দাঁড়ালুম। মনে হল, ওরা যদি আমায় ছেড়েও দেয় তাহলেও পিস্তলটা নেবার জন্যে আর তো আমার পক্ষে এ-ঘরে ফিরে আসা সম্ভব হবে না। এই ভেবে মত পরিবর্তন করে ঘরের পেছনের জানলার দিকে এগিয়ে গেলুম। ঘরটায় জানলা ছিল দুটো। একটা জানলার নিচেই ছিল সদর রাস্তা, আর আরেকটার নিচে একটা সরু গলি।

এই গলিটার মাঝখান দিয়ে চলে গিয়েছিল একটা পায়ে-চলা পথ আর তার দুই ধারে সারি সারি বিছুটির ঘন ঝোপ। মেঝে থেকে তাড়াতাড়ি একখানা কাগজ কুড়িয়ে নিয়ে মাওজারটা আমি তাতে জড়িয়ে নিলুম। তারপর সেই ছোট্ট কাগজে পাকানো বান্ডিলটা বাইরের বিছুটির সবচেয়ে ঘন অংশটা তাক করে দিলুম ছুড়ে। ভাগ্যে তাড়াহুড়ো করে কাজটা করেছিলুম, কারণ এর পরমুহূর্তেই আমার ঘরের বাইরে অনেকগুলো পায়ের শব্দ পেলুম। আরও তিনজন কয়েদীকে ঘরটায় এনে পোরা হল। তাদের মধ্যে দু-জন ছিল চাষী।

ওদের অপরাধ, ফৌজের দরকারে গাড়ি জবরদখল করার সময় ওরা ঘোড়া লুকিয়ে ফেলেছিল। কয়েদীদের মধ্যে তৃতীয় জন ছিল একটি ছেলে। বুদ্ধিতে যার ব্যাখ্যা মেলে না এমন কোনো দুর্বোধ্য কারণে ছেলেটি এক মেশিনগান-চালকের এক্কাগাড়ি থেকে একটা বাড়তি স্প্রিং চুরি করেছিল। ঘরে পোরবার আগেই ছেলেটিকে মারধর করা হয়েছিল, তবু ওর মুখে কাতরানির আওয়াজ ছিল না। যেন কারো তাড়া খেয়ে ছুটে এসেছিল এমনিভাবে খালি জোরে-জোরে নিশ্বাস টানছিল ছেলেটি।