নবম পরিচ্ছেদ
‘তোমার বাবার সঙ্গে পরিচয় ছিল,’ ক্যাপটেন বলল। ‘সে অনেক আগেকার কথা, সেই উনিশ শো সাত সালের। ওজেকিতে সামরিক কৌশলের মহড়ার সময় আলাপ হয়েছিল। তুমি তখন একদম বাচ্চা, তখনকার সঙ্গে মুখের সামান্য একটু মিল আছে এখন। আমাকে মনে নেই তোমার?’
‘ঠিক মনে পড়ছে না,’ ক্ষমাপ্রার্থীর ভঙ্গিতে জবাব দিলুম। ‘ওই মহড়ার কথা খুব অল্প-অল্প মনে আছে। আর তাছাড়া তখন ওখানে অনেক অফিসার ছিলেন তো।
ক্যাপুটেনের কথামতো আমার ওই ‘মুখের সামান্য মিল’-টুকু যদি না থাকত আর আমার সম্বন্ধে লোকটির যদি সামান্যতম সন্দেহ হত, তাহলে ও আমাকে মাত্র দুটি সহজ প্রশ্ন করে ঘায়েল করে দিতে পারত একটি আমার বাবা সম্বন্ধে, আরেকটি আমার ফৌজী ইশকুল সম্বন্ধে।
কিন্তু অফিসারটির মনে কোনো সন্দেহ ছিল না। গ্রামের মোড়লের কাছে নিজের পরিচয় না দেয়ার পক্ষে আমি যে যুক্তি দেখিয়েছিলুম তা ওর কাছে বিশ্বাসযোগ্য ঠেকেছিল। তাছাড়া, ওই সময়টায় ফৌজী ইশকুলের শিক্ষার্থীরা দলে দলে দোন-অঞ্চলের দিকে আসছিল বটে।
‘তোমার খুব খিদে পেয়েছে তো? পাখোমভ!’ সামোভার-সামলাতে-ব্যস্ত একজন সেপাইকে চে’চিয়ে ডেকে ক্যাপটেন বলল, ‘খাবার কী আছে?’
‘একটা বাচ্চা মুরগি আচে, হুজুর। সামোভারের জল এখুনি ফুটে উঠবে। পাদ্রির ইস্তিরি ময়দার তালটা বের করে নে’ গ্যাচে, নিমকিগুলো এখুনি ভাজা হয়ে যাবে’খন।’
‘দু-জনের জন্যে মাত্র একটা বাচ্চা মুরগি? উ’হা, খুজে পেতে আরও কিছু বার কর্ দিকি।’
‘খানিকটে শোরের চর্বি আর মুচমুচে মাংস-ভাজা আচে, হুজুর। কালকের ভারেনিকগুলা গরম করে দিতি পারি।’
‘ভারেনিকগুলো দে আর মুরগিটাও দিস, দে। জদি কর, জল্দি!’
এই সময় পাশের ঘরে টেলিফোন বেজে উঠল।
‘ক্যাপটেন শুভাৎ’স আপনাকে ফোনে ডাকছেন, স্যার!’
অফিসারটি ভাৎসকে দৃঢ় অথচ শান্ত, গম্ভীর গলায় নির্দেশগুলো জানিয়ে দিল।
আর্কাদি গাইদার 



















