জাকার্তা–ইন্দোনেশিয়া ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ ইলেকট্রিক গাড়ির (ইভি) আমদানি শুল্ক ছাড় তুলে নিতে যাচ্ছে। এই নীতির মাধ্যমে চীনা কোম্পানি বিওয়াইডি (BYD) ব্যাপকভাবে বাজার দখল করতে পেরেছে, তবে দেশীয় উৎপাদন কারখানাগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শুল্ক ছাড়ের শেষ প্রান্তে
শিল্প মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা গত সপ্তাহে জাকার্তায় জানান, “আমরা ছাড় অব্যাহত রাখার বিষয়ে আলোচনা করিনি। এটি সম্ভবত এ বছরের শেষেই শেষ হবে।”
ইভির আমদানি শুল্ক ও বিলাসপণ্যের কর থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছিল ইভি ব্যবহারে উৎসাহ দিতে। তবে এর সবচেয়ে বড় সুবিধা নিয়েছে চীনা ব্র্যান্ডগুলো।
দ্রুত বিক্রি ও চীনা আধিপত্য
২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত প্রায় ৪২ হাজার ইভি বিক্রি হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১৪০% বেশি। নতুন গাড়ি বিক্রির মোট বাজারে ইভির অংশ প্রায় ১০%।
বিওয়াইডি সবচেয়ে বেশি সুবিধাভোগী, কারণ কোম্পানির সব গাড়িই আমদানিকৃত। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে তারা জনপ্রিয় এম৬ (M6) মাল্টিপারপাস ইভি বাজারে আনে, যার দাম প্রায় পেট্রোলচালিত গাড়ির সমান। বর্তমানে ইন্দোনেশিয়ার ইভি বাজারে বিওয়াইডির শেয়ার ৫০% ছাড়িয়েছে।
জাপানি গাড়ি নির্মাতাদের সংকট
জাপানি কোম্পানিগুলো, যাদের ইন্দোনেশিয়ায় কারখানা রয়েছে, তারা বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে। সস্তা ইভি বাজারে আসার পর টয়োটা মোটরসহ জাপানি ব্র্যান্ডগুলোর বাজার শেয়ার নেমে গেছে, যা সাধারণত ৯০% এর কাছাকাছি থাকত।
অটোমোবাইল শিল্প সমিতির একজন প্রতিনিধি জানান, কারখানার ব্যবহার হার ৭৩% থেকে নেমে ৫৫%-এ দাঁড়িয়েছে। তার মতে, ছাড় ইভির গ্রহণযোগ্যতা বাড়ালেও এটি স্থানীয় অটোমোবাইল শিল্পের বিকাশে বাধা দিচ্ছে।
স্থানীয় উৎপাদনের শর্ত
সরকারি শর্ত ছিল, গাড়ি নির্মাতাদের ইন্দোনেশিয়ায় কমপক্ষে আমদানিকৃত গাড়ির সমান বা তার চেয়েও বেশি উৎপাদন করতে হবে। এই সময়সীমা ২০২৭ সাল পর্যন্ত।
বিওয়াইডি পশ্চিম জাভায় একটি কারখানা নির্মাণ করছে এবং ২০২৬ সালের শুরুতে উৎপাদন শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। কারখানাটির বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ১ লাখ ৫০ হাজার গাড়ি। তবে অন্য চীনা নির্মাতারা এই প্রতিশ্রুতি রাখবে কি না, তা অনিশ্চিত।
ক্রয়ক্ষমতার হ্রাস ও বাজারের ভবিষ্যৎ
ইন্দোনেশিয়ার মধ্যবিত্তের ক্রয়ক্ষমতা মারাত্মকভাবে কমে যাওয়ায় নতুন গাড়ির সামগ্রিক বিক্রি কমেছে, যদিও ইভি বিক্রি তুলনামূলক ভালো। বাজারে চাহিদা স্থবির হয়ে থাকায় স্থানীয় উৎপাদনে বিনিয়োগ করে কোম্পানিগুলোর বিশেষ লাভ হচ্ছে না।