শুল্কের কারণে অর্থনীতিতে চাপ
যুক্তরাষ্ট্র ভারতের রপ্তানি পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় চলতি অর্থবছরে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ০.২ থেকে ০.৩ শতাংশ কমতে পারে। বুধবার প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ভি. আনন্দ নাগেশ্বরণ এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ইতিবাচক দিক হলো জিএসটি সংস্কারের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধি পাবে, যা যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি না হওয়ার ঘাটতি কিছুটা পূরণ করবে।
জিএসটি সংস্কারের সিদ্ধান্ত
গত সপ্তাহে জিএসটি কাউন্সিল কর ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন আনে। চার স্তরের হার (৫, ১২, ১৮, ও ২৮ শতাংশ) কমিয়ে দুটি ধাপে (৫ ও ১৮ শতাংশ) আনা হয়েছে। পাশাপাশি ‘পাপ ও বিলাসী পণ্য’ এর ওপর ৪০ শতাংশ নতুন হার নির্ধারণ করা হয়েছে।
এই সংস্কারের ফলে সাবান, গাড়ি, শ্যাম্পু, ট্র্যাক্টর ও এয়ার কন্ডিশনারসহ প্রায় ৪০০ পণ্যের দাম কমে যাবে। নতুন ব্যবস্থা কার্যকর হবে ২২ সেপ্টেম্বর, নবরাত্রির প্রথম দিন থেকে।
অনিশ্চয়তা কমাবে জিএসটি
নাগেশ্বরণ বলেন, জিএসটি সংস্কার মূলত দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফাগুলোর নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলা করবে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা তৈরি হলে পুঁজি বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অনিশ্চয়তা কমবে।
তিনি জানান, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসেই যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি প্রায় আগের বছরের অর্ধেক হয়ে গেছে। তাই প্রভাব আপাতত সীমিত হতে পারে। তবে শুল্ক দীর্ঘস্থায়ী হলে বিনিয়োগ, পুঁজি গঠন ও সামগ্রিক অর্থনৈতিক মনোভাবের ওপর চাপ বাড়বে।
শুল্ক বনাম জিএসটি: নেট প্রভাব
নাগেশ্বরণের মতে, জিএসটি সংস্কার কেবল ভোক্তা ব্যয় বাড়াবে না, বরং দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফার শুল্ক-প্রভাবের প্রতিষেধক হিসেবেও কাজ করবে। তার ভাষায়, সব হিসাব মিলিয়ে জিএসটি সংস্কার ও শুল্কের প্রভাবে নেট ক্ষতি হবে ০.২ থেকে ০.৩ শতাংশ, যেখানে সরকারের প্রবৃদ্ধি অনুমান ৬.৩ থেকে ৬.৮ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর শুল্ক ব্যবস্থা
যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত ৫০ শতাংশ শুল্ককে বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চগুলোর একটি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে রাশিয়া থেকে তেল আমদানির কারণে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ জরিমানাও রয়েছে। এই জরিমানা ২৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হয়েছে।
এর আগে, ৭ আগস্ট ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের বিরুদ্ধে ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করেছিল, যুক্তি হিসেবে দেখানো হয় রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানি এবং পুরোনো বাণিজ্যিক বাধাগুলো।