১১:৪৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
ব্যারিস্টার ফুয়াদ ও আরেক প্রার্থীর প্রাণনাশের হুমকি হাদির অবস্থা চরম সংকটাপন্নঃ দেশবাসীর প্রতি শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার বিলম্বে বেড়েছে বীজ আলু প্রকল্পের ব্যয়, খরচ ছাড়াল ১ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা সাংবাদিক আনিস আলমগীরের নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান অ্যামনেস্টি ও সিপিজের, মতপ্রকাশ দমনের অভিযোগ দিল্লিতে যেভাবে রাতারাতি পাল্টাল ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের দৃশ্যপট উষ্ণ শহরে মানিয়ে নিচ্ছে বন্যপ্রাণী প্রাকৃতিক দুর্যোগে অর্থনৈতিক ক্ষতি এক তৃতীয়াংশ কমল, তবু ঝুঁকি কাটেনি আলু, চাল, পেঁয়াজ স্লোগানে মাতিল—ঢাকা না দিল্লি—দিল্লি, দিল্লি। টানাপোড়েনে ঢাকা দিল্লি সম্পর্ক শহরে বাড়ছে শেয়াল ও কায়োট—মানুষের পরিবেশে বন্যপ্রাণীর মানিয়ে নেওয়া

টাইলার রবিনসন: চার্লি কার্ক হত্যাকাণ্ডের অভিযুক্ত

উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ থেকে ভয়াবহ অভিযোগে

মার্কিন কিশোর টাইলার রবিনসন একসময় ছিলেন মেধাবী ছাত্র। কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় তিনি শীর্ষ স্তরে নম্বর পান এবং উটাহ স্টেট ইউনিভার্সিটিতে চার বছরের পূর্ণ স্কলারশিপ অর্জন করেন। তাঁর মা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গর্বের সঙ্গে এ খবর শেয়ার করেছিলেন।

কিন্তু চার বছর পর পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পাল্টে যায়। ২২ বছর বয়সী রবিনসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে: তিনি উটাহ ভ্যালি ইউনিভার্সিটির একটি ভবনের ছাদ থেকে গুলি চালিয়ে রক্ষণশীল ভাষ্যকার চার্লি কার্ককে হত্যা করেছেন। এই হত্যাকাণ্ড যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক সহিংসতা নিয়ে নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে।

কীভাবে শনাক্ত ও আটক

তদন্তকারীরা এখনও সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য খুঁজে পাননি। তবে উটাহর গভর্নর জানিয়েছেন, পরিবারের এক সদস্যের সঙ্গে কথোপকথনে রবিনসন কার্কের অনুষ্ঠানের প্রসঙ্গ তুলেছিলেন এবং তাঁর মতামত অপছন্দের কথা বলেছিলেন।
পুলিশ বলছে, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা বুলেট খোলসে অ্যান্টিফ্যাসিস্ট বার্তার মতো কিছু খোদাই করা ছিল।

রবিনসনের বিরুদ্ধে গুরুতর হত্যাকাণ্ডসহ একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে তাঁর কোনো অপরাধমূলক রেকর্ড নেই। ভোটার রেকর্ড অনুযায়ী, তিনি নিবন্ধিত হলেও কোনো রাজনৈতিক দলে যুক্ত ছিলেন না এবং শেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটও দেননি।

তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় এক পারিবারিক বন্ধুর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে। সেই ব্যক্তি জানিয়েছেন, রবিনসন হয় সরাসরি স্বীকার করেছেন বা অন্তত ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তিনিই কার্ককে হত্যা করেছেন।

গ্রেপ্তার ও পুলিশের তৎপরতা

ঘটনার পরপরই ৩৩ ঘণ্টার তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। দুজনকে প্রাথমিকভাবে আটক করা হলেও পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। অবশেষে বৃহস্পতিবার রাতে ওয়াশিংটন শহরে নিজের বাড়ি থেকে রবিনসনকে শান্তিপূর্ণভাবে আটক করে পুলিশ।
তাঁকে স্প্যানিশ ফর্ক শহরের জেলে পাঠানো হয়েছে। এখনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আদালতে গঠন হয়নি।

পারিবারিক ও সামাজিক পটভূমি

রবিনসন দক্ষিণ-পশ্চিম উটাহর ওয়াশিংটনে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেন। শহরটির জনসংখ্যা প্রায় ২৮ হাজার। তাঁর বাবা একটি পাথরের কাউন্টারটপ কোম্পানির মালিক এবং মা একটি স্বাস্থ্যসেবা সংস্থায় সমাজকর্মী হিসেবে কাজ করেন।

মায়ের ফেসবুক পোস্টে পরিবারকে ঘিরেই বেশি লেখা পাওয়া গেছে: অভিনয়, হ্যালোউইন পোশাক, পারিবারিক ভ্রমণ, পোষা খরগোশ, সবকিছুই সন্তানদের নিয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করার স্মৃতি। রাজনীতি নিয়ে কোনো প্রকাশ্য মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে কয়েকটি ছবিতে দেখা যায় রবিনসন ও তাঁর ভাইয়েরা বন্দুক হাতে। উটাহ রাজ্যে শিথিল অস্ত্র আইন থাকায় বিষয়টি অস্বাভাবিক নয়।

শিক্ষা ও পড়াশোনা

রবিনসন ২০২১ সালে সেন্ট জর্জের পাইন ভিউ হাই স্কুল থেকে স্নাতক হন। কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় তিনি ৩৪ স্কোর করেছিলেন, যা যুক্তরাষ্ট্রে শীর্ষ ১ শতাংশ শিক্ষার্থীর কাতারে ফেলে।
তিনি উটাহ স্টেট ইউনিভার্সিটিতে এক সেমিস্টার পড়াশোনা করেন। পরে তিনি ডিক্সি টেকনিক্যাল কলেজের ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্রেন্টিসশিপ প্রোগ্রামে ভর্তি হন এবং বর্তমানে তৃতীয় বর্ষে পড়ছিলেন।

প্রতিবেশী ও সহপাঠীদের চোখে

প্রতিবেশীরা পরিবারটিকে ভালো বলেই বর্ণনা করেছেন। স্থানীয় মরমন গির্জায় তাদের দেখা হতো। এক সহপাঠী বলেন, রবিনসন সাধারণ এক কিশোর ছিলেন, সংগীতে আগ্রহী এবং স্কুল ব্যান্ডে সময় কাটাতেন।


এই ঘটনাটি যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক বিভাজন ও সহিংসতার আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এখনো তদন্তকারীরা খুঁজছেন: কীভাবে একসময় মেধাবী ছাত্র রবিনসন এ পথে এলেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

ব্যারিস্টার ফুয়াদ ও আরেক প্রার্থীর প্রাণনাশের হুমকি

টাইলার রবিনসন: চার্লি কার্ক হত্যাকাণ্ডের অভিযুক্ত

০২:০৪:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ থেকে ভয়াবহ অভিযোগে

মার্কিন কিশোর টাইলার রবিনসন একসময় ছিলেন মেধাবী ছাত্র। কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় তিনি শীর্ষ স্তরে নম্বর পান এবং উটাহ স্টেট ইউনিভার্সিটিতে চার বছরের পূর্ণ স্কলারশিপ অর্জন করেন। তাঁর মা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গর্বের সঙ্গে এ খবর শেয়ার করেছিলেন।

কিন্তু চার বছর পর পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পাল্টে যায়। ২২ বছর বয়সী রবিনসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে: তিনি উটাহ ভ্যালি ইউনিভার্সিটির একটি ভবনের ছাদ থেকে গুলি চালিয়ে রক্ষণশীল ভাষ্যকার চার্লি কার্ককে হত্যা করেছেন। এই হত্যাকাণ্ড যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক সহিংসতা নিয়ে নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে।

কীভাবে শনাক্ত ও আটক

তদন্তকারীরা এখনও সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য খুঁজে পাননি। তবে উটাহর গভর্নর জানিয়েছেন, পরিবারের এক সদস্যের সঙ্গে কথোপকথনে রবিনসন কার্কের অনুষ্ঠানের প্রসঙ্গ তুলেছিলেন এবং তাঁর মতামত অপছন্দের কথা বলেছিলেন।
পুলিশ বলছে, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা বুলেট খোলসে অ্যান্টিফ্যাসিস্ট বার্তার মতো কিছু খোদাই করা ছিল।

রবিনসনের বিরুদ্ধে গুরুতর হত্যাকাণ্ডসহ একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে তাঁর কোনো অপরাধমূলক রেকর্ড নেই। ভোটার রেকর্ড অনুযায়ী, তিনি নিবন্ধিত হলেও কোনো রাজনৈতিক দলে যুক্ত ছিলেন না এবং শেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটও দেননি।

তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় এক পারিবারিক বন্ধুর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে। সেই ব্যক্তি জানিয়েছেন, রবিনসন হয় সরাসরি স্বীকার করেছেন বা অন্তত ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তিনিই কার্ককে হত্যা করেছেন।

গ্রেপ্তার ও পুলিশের তৎপরতা

ঘটনার পরপরই ৩৩ ঘণ্টার তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। দুজনকে প্রাথমিকভাবে আটক করা হলেও পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। অবশেষে বৃহস্পতিবার রাতে ওয়াশিংটন শহরে নিজের বাড়ি থেকে রবিনসনকে শান্তিপূর্ণভাবে আটক করে পুলিশ।
তাঁকে স্প্যানিশ ফর্ক শহরের জেলে পাঠানো হয়েছে। এখনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আদালতে গঠন হয়নি।

পারিবারিক ও সামাজিক পটভূমি

রবিনসন দক্ষিণ-পশ্চিম উটাহর ওয়াশিংটনে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেন। শহরটির জনসংখ্যা প্রায় ২৮ হাজার। তাঁর বাবা একটি পাথরের কাউন্টারটপ কোম্পানির মালিক এবং মা একটি স্বাস্থ্যসেবা সংস্থায় সমাজকর্মী হিসেবে কাজ করেন।

মায়ের ফেসবুক পোস্টে পরিবারকে ঘিরেই বেশি লেখা পাওয়া গেছে: অভিনয়, হ্যালোউইন পোশাক, পারিবারিক ভ্রমণ, পোষা খরগোশ, সবকিছুই সন্তানদের নিয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করার স্মৃতি। রাজনীতি নিয়ে কোনো প্রকাশ্য মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে কয়েকটি ছবিতে দেখা যায় রবিনসন ও তাঁর ভাইয়েরা বন্দুক হাতে। উটাহ রাজ্যে শিথিল অস্ত্র আইন থাকায় বিষয়টি অস্বাভাবিক নয়।

শিক্ষা ও পড়াশোনা

রবিনসন ২০২১ সালে সেন্ট জর্জের পাইন ভিউ হাই স্কুল থেকে স্নাতক হন। কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় তিনি ৩৪ স্কোর করেছিলেন, যা যুক্তরাষ্ট্রে শীর্ষ ১ শতাংশ শিক্ষার্থীর কাতারে ফেলে।
তিনি উটাহ স্টেট ইউনিভার্সিটিতে এক সেমিস্টার পড়াশোনা করেন। পরে তিনি ডিক্সি টেকনিক্যাল কলেজের ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্রেন্টিসশিপ প্রোগ্রামে ভর্তি হন এবং বর্তমানে তৃতীয় বর্ষে পড়ছিলেন।

প্রতিবেশী ও সহপাঠীদের চোখে

প্রতিবেশীরা পরিবারটিকে ভালো বলেই বর্ণনা করেছেন। স্থানীয় মরমন গির্জায় তাদের দেখা হতো। এক সহপাঠী বলেন, রবিনসন সাধারণ এক কিশোর ছিলেন, সংগীতে আগ্রহী এবং স্কুল ব্যান্ডে সময় কাটাতেন।


এই ঘটনাটি যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক বিভাজন ও সহিংসতার আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এখনো তদন্তকারীরা খুঁজছেন: কীভাবে একসময় মেধাবী ছাত্র রবিনসন এ পথে এলেন।