“আমাকে ৩,৯০,২০০ টাকারও অধিক রাজস্ব বাকীর জন্য দায়ী করা হইয়াছে, এবং আমি অনেক লোকের প্রাণনাশ করিয়াছি বলিয়া দোষী সাব্যস্ত হইয়াছি, এই সকল কারণে আমার উপর দস্তক জারী করা হইয়াছে।

পরন্তু আমাকে কারাগারে রাখিতে অনুমতি হওয়ায় আমি সে আদেশও পালন করিয়াছি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, সাক্ষাতে আমার কৈফিয়ৎ না লইয়া, আমাকে একেবারে বন্দী করিবার হুকুম দেওয়া হইয়াছে। প্যাটারসন সাহেক নিষেধ করিয়াছেন বলিয়া, জমিদারেরা কেহ আমাকে খাজনা দেয় নাই। যদি তাহাদের নিকট হইতে খাজনা লওয়া না হয়, আমার নিকট হইতে লওয়া হউক।
কিন্তু আমার চরিত্র ও সুনামের, উপর কলঙ্ক প্রদান করা কেন হইয়াছে, তাহা বুঝিতে পারি না। আমি কোন লোকের প্রাণনাশ করি নাই, অথবা রাজস্ব আদায়ের জন্য কাহারও উপর কোনরূপ অত্যাচার করি নাই। আমি বলিতে পারি যে, আমার দ্বারা একটি পাখীরও পর্যন্ত প্রাণনাশ হয় নাই। যদি তাহা সপ্রমাণ হয়, তবে আমি তৎক্ষণাৎ তদ্বিনিময়ে নিজের ও নিজ পরিবারবর্গের জীবন বলি দিতে প্রস্তুত আছি। অতএব আমার একান্ত প্রার্থনা যে, আমাকে সাক্ষাতে লইয়া গিয়া আমার যাবতীয় কৈফিয়ৎ শুনা হয়।”
দেবী সিংহের প্রার্থনাপত্র কাউন্সিলে পঠিত হইলে, সভ্যেরা স্থির করিলেন যে, দেবী সিংহের কলিকাতার আসিয়া কৈফিয়ৎ দেওয়াই সঙ্গত। তাঁহারা অমনি দেবীসিংহের প্রার্থনা মঞ্জুর করিয়া, তাঁহাকে কলিকাতায় আসিতে লিখিয়া পাঠাইলেন। দেবীসিংহ মনে করিয়াছিলেন যে, একবার কলিকাতায় সভ্যদিগের সহিত সাক্ষাৎ করিতে পারিলে, যেরূপেই হউক তাঁহাদের বিরুদ্ধভাব অপনোদন করিতে সমর্থ হইবেন।
তাঁহার অগাধ ঐশ্বর্য্যবলে তিনি যাহা মনে করিতেন, অবিলম্বে তাহাই সম্পাদন করিতে পারিতেন। দেবীসিংহ প্রজাদিগের রক্তশোষণ করিয়া ৭০ লক্ষেরও অধিক টাকা লইয়া কলিকাতায় উপস্থিত হইলেন।।
শ্রী নিখিলনাথ রায় 



















