সারসংক্ষেপ
- • এই সপ্তাহে একাধিক ফেড কর্মকর্তার বক্তব্য আসছে
- • ফোকাসে হকিশ গভর্নর বেথ হ্যাম্যাক ও আলবার্তো মুসালেম
- • ডলারের টানা তিন দিনের উত্থান থেমে গেল
- • রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদের হারের পদক্ষেপে সতর্কতা
ডলারের ঊর্ধ্বগতি থেমে গেল
সোমবার মার্কিন ডলার টানা তিন দিনের উত্থান থেকে পিছিয়ে এলো। বিনিয়োগকারীরা ফেডারেল রিজার্ভ কর্মকর্তাদের বক্তব্যের অপেক্ষায় রয়েছেন, যাতে সম্প্রতি নেওয়া নীতিগত সিদ্ধান্তের পরবর্তী দিকনির্দেশনা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। গত সপ্তাহে ফেড আবারও শিথিল নীতি গ্রহণ শুরু করেছে।
ডলারের মান বর্তমানে সেই স্তরে রয়েছে, যা ফেডের আগের বার্তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বিশ্লেষকদের মতে, শ্রমবাজারে দুর্বলতার ঝুঁকিই এখন ফেড নীতির প্রধান চালক।
সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক তথ্য
গত সপ্তাহের মার্কিন তথ্য বলছে, বেকার ভাতার নতুন আবেদন সংখ্যা কমেছে, যা আগের সপ্তাহের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি উল্টে দিয়েছে।
বিএনওয়াই মেলনের বাজার কৌশলপ্রধান বব স্যাভেজ বলেছেন, শুক্রবারের মূল পিসিই মুদ্রাস্ফীতি তথ্য প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত বিনিয়োগকারীরা ফেডের ভবিষ্যৎ সুদ কমানোর পরিকল্পনা নিয়ে আবার ভাবতে পারে। তার মতে, “এই সপ্তাহে ১৮টিরও বেশি অনুষ্ঠানে ফেড কর্মকর্তাদের বক্তব্য আসছে। বিশেষভাবে নজরে থাকবেন চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল, ক্লিভল্যান্ড ফেডের বেথ হ্যাম্যাক ও সেন্ট লুইস ফেডের আলবার্তো মুসালেম যাদের অবস্থান আগে থেকেই হকিশ।”
নতুন গভর্নরের অবস্থান
নতুন ফেড গভর্নর স্টিফেন মিরান শুক্রবার নিজেকে স্বাধীন নীতিনির্ধারক হিসেবে ব্যাখ্যা করেন। তিনি ৫০ বেসিস পয়েন্টের বড় সুদ কাটছাঁটের পক্ষে ভোট দেন এবং সোমবারের বক্তৃতায় তার বিস্তারিত যুক্তি তুলে ধরার ঘোষণা দেন।
বিশ্লেষকদের মতে, মিরানের একক ভিন্নমত আসলে বাকি নীতিনির্ধারকদের একটি কৌশল, যাতে তারা চেয়ারম্যান পাওয়েলের নেতৃত্বে ঐক্য ও প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা জোরালোভাবে প্রদর্শন করতে পারেন।
রাজনৈতিক চাপ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফেডকে আরও দ্রুত সুদ কমাতে আহ্বান জানিয়ে সমালোচনা করেছেন।
মুদ্রাবাজারের প্রতিক্রিয়া
ফেডের ধীর পদক্ষেপের ইঙ্গিতের পর গত সপ্তাহে ডলার কিছুটা বাড়লেও সোমবার আবার দুর্বল হয়েছে। ডলার সূচক ০.২৩% কমে দাঁড়ায় ৯৭.৪৩ এ।
ইউরো বেড়েছে ০.৩০% হয়ে দাঁড়ায় ১.১৭৮৩ ডলার।
সুইডিশ ক্রোনার ০.২২% বেড়ে দাঁড়ায় ৯.৩৭৯০ ডলারে, মঙ্গলবারের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈঠকের আগে। সিটি ব্যাংকের অর্থনীতিবিদ জিয়াদা জিয়ানির মতে, এই বৈঠকে যদি আবার সুদ কমানো হয়, তবে সেটিই সম্ভবত এই চক্রের শেষ পদক্ষেপ হবে।
জাপানি ইয়েন ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা
ইয়েন সামান্য বেড়ে দাঁড়ায় ১৪৭.৮৫ ডলারে। যদিও গত সপ্তাহে ব্যাংক অব জাপান কঠোর অবস্থানের ইঙ্গিত দিয়েছিল, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে তারা এখন অতিরিক্ত পদক্ষেপ নিতে সতর্ক। অক্টোবরের ৪ তারিখে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতৃত্ব নির্বাচন সামনে রয়েছে।
ইউবিএস অর্থনীতিবিদ আরেন্ড কাপটেইন জানান, তারা ২০২৫ সালের শেষের ডলার-ইয়েন পূর্বাভাস ১৩০ থেকে বাড়িয়ে ১৪৩ করেছেন। তার মতে, ডলারের দুর্বলতা মূলত মার্কিন সুদের চক্র ও বৈশ্বিক ঝুঁকি মনোভাবের অবনতির ওপর নির্ভর করবে।
পাউন্ড ও অস্ট্রেলিয়ান ডলার
ব্রিটিশ পাউন্ড সোমবার ডলারের বিপরীতে ০.২৫% বেড়ে দাঁড়ায় ১.৩৫০২ ডলারে। শুক্রবারের রাজস্ব উদ্বেগজনিত বিক্রির পর বাজার কিছুটা স্থির হয়েছে। সেশন শুরুর দিকে এটি দুই সপ্তাহের সর্বনিম্ন ১.৩৪৫৩ ছুঁয়েছিল।
অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ান ডলার সামান্য বেড়ে দাঁড়ায় ০.৬৫৯৬ ডলারে, যা ৮ সেপ্টেম্বরের পর থেকে সর্বনিম্ন ০.৬৫৭৫ ডলার ছুঁয়ে ছিল।