১২:৩০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫
বিএনপি প্রার্থী গুলিবিদ্ধ: নির্বাচন ঘিরে কোন অশনি সংকেত? দুর্যোগ পরবর্তী সহায়তা: একত্রিত হয়ে নতুন জীবন গড়ার সংগ্রাম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জকসু নির্বাচন নিয়ে তীব্র বিতর্ক মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩৬৩) থাম্মা বক্স অফিস সংগ্রহ: আয়ুষ্মান খুরানা ও রাশমিকা মন্দান্নার সিনেমা ₹১১৫.৯ কোটি আয় করেছে, ড্রাগনের লাইফটাইম সংগ্রহকেও ছাড়িয়ে গেছে মাইক্রোসফটের ১৫ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগে নতুন দিগন্ত: সংযুক্ত আরব আমিরাতে এআই ও চিপ বিপ্লবের প্রস্তুতি প্যালেস্টাইন ৩৬’ টোকিও চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা বিলুপ্ত পাঁচ শরিয়াহ ব্যাংকের সেবা চলমান থাকবে: কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নর শেরপুরের নকলা উপজেলা কৃষি অফিসে ছাত্রদলের হামলা টরন্টোতে মাধুরী দীক্ষিতের শো ঘিরে বিতর্ক: দেরির দায় টিমের ভুল তথ্য, জানালেন আয়োজকরা

সাজার মেয়াদ শেষ: দেশে ফিরবে ১৫৭ বিদেশি বন্দী

  • Sarakhon Report
  • ০৬:১৪:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • 116

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাজার মেয়াদ শেষ হয়েছে  অনেক আগেই। তারপর ও তারা কারাগারে আটক রয়েছেন।  অবশেষে হাইকোর্টের আদেশে তারা মুক্ত হওয়ার প্রহর গুনছেন। 

বাংলাদেশের কারাগারে ১৫৭ বিদেশি বন্দীকে মুক্তি দিয়ে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। হাইকোর্ট বলেছেন , সাজার পরও কারাগারে রাখা মানবাধিকারের লঙ্ঘন।

বৃহস্পতিবার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

পররাষ্ট্র সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব ও কারা মহাপরিদর্শককে এ নির্দেশনা পালন করতে বলা হয়েছে। আইনজীবী বিভূতি তরফদার জানান, এই ১৫৭ জনকে নিজ নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করে তিন মাসের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে বলেছেন হাইকোর্ট। পরবর্তী আদেশের জন্য ২৮ মে দিন ধার্য্য করা হয়েছে।

কারাবন্দিদের মধ্যে ১৫০ জন ভারতের, পাঁচজন মিয়ানমারের এবং একজন করে পাকিস্তান  ও নেপালের নাগরিক রয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৯ জন নারী রয়েছেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার বিভূতি তরফদার।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।

কারাবন্দি এই বিদেশি নাগরিকদের সাধারণত অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে দ্য কন্ট্রোল অব এন্ট্রি অ্যাক্ট, ১৯৫২, পাসপোর্ট আইন, ১৯৫২ এবং মাদকদ্রব্য  নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, সাজা খাটা শেষ হলেও অন্য দেশের নাগরিক হওয়ায় সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে এসব ব্যক্তিদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করতে হয়। সেই প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের মুক্তি দেওয়া সম্ভব নয়।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কমলপুর থানার বাসিন্দা গোবিন্দ উড়িয়াকে (২৬) আটক করে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা।

ওইদিনই আটক ব্যক্তিকে শ্রীমঙ্গল থানায় সোপর্দ করে তার নামে মামলা করে বিজিবি। তদন্তের পর একই বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ২৪২ ধারা ও দ্য কন্ট্রোল অব এন্ট্রি অ্যাক্ট, ১৯৫২ আইনের ৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। বিচার শেষে দোষ স্বীকার এবং অতীতে অনুপ্রবেশের অভিযোগ না থাকায় গোবিন্দ উড়িয়াকে দুই মাস ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেন মৌলভীবাজারের চতুর্থ বিচারিক হাকিম এম. মিজবাহ উর রহমান।

রায়ে বলা হয়, সাজার মেয়াদের চেয়ে চারদিন বেশি সাজা ভোগ করে ফেলেছেন গোবিন্দ উড়িয়া। তাই তার প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করতে মৌলভীবাজার জেলা কারাগারের সুপারকে নির্দেশ দেন আদালত। এ রায়ের পর দুই বছর কেটে গেলেও প্রত্যাবাসন হয়নি গোবিন্দ উড়িয়ার। ফলে কারামুক্তিও ঘটেনি। এ নিয়ে সম্প্রতি প্রতিবেদন করে একটি টেলিভিশন চ্যানেল। ওই প্রতিবেদনটি যুক্ত করে গত ১১ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বিভূতি তরফদার। সাজা ভোগ করা কারাবন্দি গোবিন্দ উড়িয়ার কারামুক্তি ও তার প্রত্যাবাসনের সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করা হয় রিটে। গত ১৫ জানুয়ারি এ রিটে প্রাথমিক শুনানির পর রুলসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট।

অন্তবর্তী আদেশে গোবিন্দ উড়িয়াকে কারামুক্তির নির্দেশ দেওয়া হয়। আর দণ্ড বা সাজা ভোগ করার পরও প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা না করে কারাবন্দি রাখা হয়েছে, এমন বিদেশি নাগরিকদের তালিকা দিতে বলেন আদালত। কারা মহাপরিদর্শককে এ নির্দেশ দিয়ে আগামী ১০ মার্চ পরবর্তী আদেশের তারিখ রাখা হয়েছে। পরে আদালতে দাখিলের জন্য প্রতিবেদন পাঠায় কারা অধিদপ্তর। অপরদিকে, গোবিন্দকে তার নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করা হয়।

জনপ্রিয় সংবাদ

বিএনপি প্রার্থী গুলিবিদ্ধ: নির্বাচন ঘিরে কোন অশনি সংকেত?

সাজার মেয়াদ শেষ: দেশে ফিরবে ১৫৭ বিদেশি বন্দী

০৬:১৪:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাজার মেয়াদ শেষ হয়েছে  অনেক আগেই। তারপর ও তারা কারাগারে আটক রয়েছেন।  অবশেষে হাইকোর্টের আদেশে তারা মুক্ত হওয়ার প্রহর গুনছেন। 

বাংলাদেশের কারাগারে ১৫৭ বিদেশি বন্দীকে মুক্তি দিয়ে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। হাইকোর্ট বলেছেন , সাজার পরও কারাগারে রাখা মানবাধিকারের লঙ্ঘন।

বৃহস্পতিবার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

পররাষ্ট্র সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব ও কারা মহাপরিদর্শককে এ নির্দেশনা পালন করতে বলা হয়েছে। আইনজীবী বিভূতি তরফদার জানান, এই ১৫৭ জনকে নিজ নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করে তিন মাসের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে বলেছেন হাইকোর্ট। পরবর্তী আদেশের জন্য ২৮ মে দিন ধার্য্য করা হয়েছে।

কারাবন্দিদের মধ্যে ১৫০ জন ভারতের, পাঁচজন মিয়ানমারের এবং একজন করে পাকিস্তান  ও নেপালের নাগরিক রয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৯ জন নারী রয়েছেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার বিভূতি তরফদার।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।

কারাবন্দি এই বিদেশি নাগরিকদের সাধারণত অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে দ্য কন্ট্রোল অব এন্ট্রি অ্যাক্ট, ১৯৫২, পাসপোর্ট আইন, ১৯৫২ এবং মাদকদ্রব্য  নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, সাজা খাটা শেষ হলেও অন্য দেশের নাগরিক হওয়ায় সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে এসব ব্যক্তিদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করতে হয়। সেই প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের মুক্তি দেওয়া সম্ভব নয়।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কমলপুর থানার বাসিন্দা গোবিন্দ উড়িয়াকে (২৬) আটক করে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা।

ওইদিনই আটক ব্যক্তিকে শ্রীমঙ্গল থানায় সোপর্দ করে তার নামে মামলা করে বিজিবি। তদন্তের পর একই বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ২৪২ ধারা ও দ্য কন্ট্রোল অব এন্ট্রি অ্যাক্ট, ১৯৫২ আইনের ৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। বিচার শেষে দোষ স্বীকার এবং অতীতে অনুপ্রবেশের অভিযোগ না থাকায় গোবিন্দ উড়িয়াকে দুই মাস ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেন মৌলভীবাজারের চতুর্থ বিচারিক হাকিম এম. মিজবাহ উর রহমান।

রায়ে বলা হয়, সাজার মেয়াদের চেয়ে চারদিন বেশি সাজা ভোগ করে ফেলেছেন গোবিন্দ উড়িয়া। তাই তার প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করতে মৌলভীবাজার জেলা কারাগারের সুপারকে নির্দেশ দেন আদালত। এ রায়ের পর দুই বছর কেটে গেলেও প্রত্যাবাসন হয়নি গোবিন্দ উড়িয়ার। ফলে কারামুক্তিও ঘটেনি। এ নিয়ে সম্প্রতি প্রতিবেদন করে একটি টেলিভিশন চ্যানেল। ওই প্রতিবেদনটি যুক্ত করে গত ১১ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বিভূতি তরফদার। সাজা ভোগ করা কারাবন্দি গোবিন্দ উড়িয়ার কারামুক্তি ও তার প্রত্যাবাসনের সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করা হয় রিটে। গত ১৫ জানুয়ারি এ রিটে প্রাথমিক শুনানির পর রুলসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট।

অন্তবর্তী আদেশে গোবিন্দ উড়িয়াকে কারামুক্তির নির্দেশ দেওয়া হয়। আর দণ্ড বা সাজা ভোগ করার পরও প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা না করে কারাবন্দি রাখা হয়েছে, এমন বিদেশি নাগরিকদের তালিকা দিতে বলেন আদালত। কারা মহাপরিদর্শককে এ নির্দেশ দিয়ে আগামী ১০ মার্চ পরবর্তী আদেশের তারিখ রাখা হয়েছে। পরে আদালতে দাখিলের জন্য প্রতিবেদন পাঠায় কারা অধিদপ্তর। অপরদিকে, গোবিন্দকে তার নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করা হয়।