দান ও সঞ্চয়ের পরিকল্পনা
কেন্ট (৪৫) এবং রেমি (৫০) দম্পতির বার্ষিক আয় ৩ লাখ ৯০ হাজার ডলার। এর মধ্যে কেন্টের আয়ই ৩ লাখ ডলারের বেশি। তাঁরা এর আগে প্রতিবছর প্রায় ৫০ হাজার ডলার দান করেছেন। এখন যেহেতু তাঁদের আলবার্টার ৩ লাখ ৭০ হাজার ডলারের বাড়ির ঋণ শোধ হয়ে গেছে, তাঁরা প্রতিবছর ১ লাখ ডলার দান করার লক্ষ্য নিয়েছেন।
কেন্ট অবসরে গেলে (৬০ বছর বয়সে) একটি স্থায়ী পেনশন পাওয়ার কথা, যদি তিনি একই প্রতিষ্ঠানে থাকেন এবং বেতন বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে। এ কারণে তাঁদের ভবিষ্যৎ আর্থিক পরিকল্পনা অনেকটাই এ পেনশনের ওপর নির্ভরশীল।
দানের কৌশল ও কর ছাড়
কেন্ট সর্বোচ্চ কর শ্রেণিতে আছেন, তাই তাঁরা যা দান করবেন তার প্রায় অর্ধেক কর ছাড় হিসেবে ফেরত পাবেন। এই ফেরত টাকা এবং অতিরিক্ত সঞ্চয় ব্যবহার করে তাঁরা পরবর্তী বছরের দান চালিয়ে যেতে চান। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বছরে ২০০ ডলারের বেশি দান করলে বাকি অংশে ২৯ শতাংশ ফেডারেল কর ছাড় পাওয়া যায়। তবে উচ্চ আয়ের মানুষরা তাদের করযোগ্য আয়ের উপরের অংশের সমান দানে ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় পান।
আলবার্টায় প্রথম ২০০ ডলারের দানে ৬০ শতাংশ ছাড় পাওয়া যায়। তাই দুইজনই নিজেদের নামে প্রথম ২০০ ডলারের ছাড় দাবি করবেন, আর বাকিটা কেন্টের নামে দাবি করাই ভালো হবে।
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
টরন্টোর আর্থিক পরামর্শদাতা জেনিফার হিউজ মনে করেন, কেন্ট ও রেমি মোটের ওপর ভালো অবস্থানে আছেন। তবে তাঁদের আর্থিক নিরাপত্তা অনেকটাই নির্ভর করছে কেন্টের পেনশন চালু থাকার ওপর। যদি তিনি চাকরি হারান বা পেনশন বন্ধ হয়ে যায়, তবে বড় অঙ্কের দান চালিয়ে যাওয়া কঠিন হবে।
তিনি দুইটি সম্ভাবনা দেখিয়েছেন—
১. তাঁরা যদি অবসরের আগে প্রতি বছর ৫০ হাজার ডলার দান চালিয়ে যান, তবে অবসরে তাঁদের আয়-ব্যয় মেটানো সম্ভব হবে এবং ৬৮ লাখ ডলারের মতো সম্পদ উত্তরাধিকারীদের জন্য থাকবে।
২. তাঁরা যদি এ বছর থেকেই প্রতিবছর ১ লাখ ডলার দান শুরু করেন, তবে শেষ পর্যন্তও প্রায় ৪০ লাখ ডলার সম্পদ রেখে যেতে পারবেন।
তবে অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি যেমন চাকরি পরিবর্তন বা পেনশন পরিকল্পনায় পরিবর্তন হলে তাঁদের দানের অঙ্ক কমাতে হতে পারে।
সন্তানের সহায়তা
কেন্ট ও রেমির দুই সন্তান বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন এবং তাঁদের পড়াশোনার খরচ সঞ্চয় পরিকল্পনা থেকেই মেটানো হচ্ছে। এছাড়া তাঁরা সন্তানদের প্রথম বাড়ি কেনার জন্য প্রত্যেকে ৪০ হাজার ডলার পর্যন্ত সহায়তা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। ইতিমধ্যে তাঁরা প্রত্যেকের জন্য ১৬ হাজার ডলার জমা করেছেন এবং আগামী তিন বছর ধরে প্রতি বছর ৮ হাজার ডলার করে জমা দেবেন।
ভবিষ্যতের পরিকল্পনা ও নমনীয়তা
অবসরে তাঁরা সন্তানদের কাছাকাছি চলে যেতে চান। এজন্য ধরে নেওয়া হচ্ছে, ২০৪০ সালে তাঁরা প্রায় ১০ লাখ ডলারের একটি নতুন বাড়ি কিনবেন। দীর্ঘমেয়াদে তাঁদের বিনিয়োগ থেকে ৪.৮ শতাংশ মুনাফা এবং ২.১ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতির হার ধরা হয়েছে।
পরামর্শ অনুযায়ী, তাঁরা ট্যাক্স-ফ্রি সেভিংস অ্যাকাউন্টে (TFSA) সর্বোচ্চ অবদান রাখা এবং নন-রেজিস্টার্ড সঞ্চয় বাড়ানো উচিত। এতে হঠাৎ পরিস্থিতি বদলালে দান ও ব্যয় চালিয়ে যেতে সহায়ক হবে।
দান বাড়ানোর বিভিন্ন উপায়
- সরাসরি শেয়ার দান: শেয়ার বা মিউচুয়াল ফান্ড যেগুলোর মূল্য বেড়েছে, সেগুলো সরাসরি নিবন্ধিত দাতব্য সংস্থায় দান করলে মূলধনী লাভের ওপর কর দিতে হয় না, আবার পুরো বাজার মূল্যের সমান দানের রসিদ পাওয়া যায়।
- ডোনর-অ্যাডভাইজড ফান্ড (DAF): এটি একটি বিনিয়োগ অ্যাকাউন্ট যেখানে নগদ, শেয়ার বা অন্যান্য সম্পদ জমা রাখা যায়। জমা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কর ছাড় মেলে, আর সময়মতো নিবন্ধিত সংস্থাগুলোকে টাকা দেওয়া যায়। তবে একবার এ ফান্ডে টাকা রাখলে তা আর ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা যায় না। অবসরের কাছাকাছি সময়ে এ ফান্ড বিশেষভাবে কার্যকর হতে পারে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 





















