মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পিট হেগসেথ আগামী সপ্তাহে ভার্জিনিয়ার কোয়ান্টিকোতে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে দায়িত্বে থাকা শীর্ষ মার্কিন সামরিক কর্মকর্তাদের এক বৈঠকে ডাক দিয়েছেন। পাঁচজন কর্মকর্তা বিষয়টি রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন। এত অল্প সময়ে এবং একই স্থানে এমন একত্র সমাবেশ বিরল ঘটনা হিসেবে ধরা হচ্ছে।
অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা
কেন হেগসেথ হঠাৎ করে জেনারেল ও অ্যাডমিরালদের একত্র করছেন তা স্পষ্ট নয়। দুইজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এ কারণে আমন্ত্রিতদের মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
বেশিরভাগ শীর্ষ কর্মকর্তারই আগে থেকে নির্ধারিত ব্যস্ত সূচি থাকে, যা এখন হঠাৎ পরিবর্তন করতে হচ্ছে। এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সবাই তড়িঘড়ি করে পরিকল্পনা পাল্টাচ্ছেন এবং যাচাই করছেন যে বৈঠকে যাওয়া তাদের জন্য বাধ্যতামূলক কিনা।
কতজন যোগ দেবেন তা অনিশ্চিত
কতজন কর্মকর্তা শেষ পর্যন্ত বৈঠকে থাকবেন তা স্পষ্ট নয়। তবে একই সময়ে এত শীর্ষ কর্মকর্তাকে একই স্থানে পাওয়া সচরাচর ঘটে না।
পেন্টাগন মুখপাত্র শন পারনেল বলেছেন, “যুদ্ধ দপ্তরের প্রধান আগামী সপ্তাহের শুরুতে তার শীর্ষ সামরিক নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলবেন।” উল্লেখ্য, ট্রাম্প এর আগে প্রতিরক্ষা বিভাগকে “ডিপার্টমেন্ট অব ওয়ার” বা যুদ্ধ দপ্তর নামে পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়েছেন, যা কার্যকর করতে কংগ্রেসের পদক্ষেপ প্রয়োজন।
হোয়াইট হাউসের মন্তব্য
হোয়াইট হাউসে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেছেন, এমন বৈঠক “একেবারেই অস্বাভাবিক কিছু নয়।”
বিশ্বজুড়ে মার্কিন বাহিনী
মার্কিন বাহিনী বিশ্বের নানা স্থানে মোতায়েন আছে—দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান থেকে শুরু করে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে। এসব ইউনিট পরিচালনা করেন দুই, তিন বা চার তারকা জেনারেল ও অ্যাডমিরালরা।
হেগসেথের দ্রুত পদক্ষেপ
ফক্স নিউজের সাবেক উপস্থাপক হেগসেথ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দ্রুতগতিতে পেন্টাগনে পরিবর্তন এনেছেন। তিনি একের পর এক শীর্ষ জেনারেল ও অ্যাডমিরালকে বরখাস্ত করছেন, ট্রাম্পের নিরাপত্তা নীতি বাস্তবায়ন এবং বৈচিত্র্য উদ্যোগ বন্ধ করার লক্ষ্যে।
অভূতপূর্ব পদচ্যুতি
ফেব্রুয়ারিতে তিনি জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান বিমানবাহিনীর জেনারেল সি.কিউ. ব্রাউনসহ পাঁচজন জেনারেল ও অ্যাডমিরালকে বরখাস্ত করেন। গত মাসে পেন্টাগনের গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান এবং আরও দুইজন শীর্ষ কমান্ডারকেও সরিয়ে দেন।
পদ কমানোর সিদ্ধান্ত
মে মাসে হেগসেথ চার তারকা কর্মকর্তার সংখ্যা ২০ শতাংশ কমানোর নির্দেশ দেন। সেই মেমোতে বলা হয়েছিল, ন্যাশনাল গার্ডের জেনারেল অফিসারদের সংখ্যা ন্যূনতম ২০ শতাংশ এবং সামরিক বাহিনীর জেনারেল ও ফ্ল্যাগ অফিসারদের সংখ্যা অন্তত ১০ শতাংশ কমানো হবে।
তখন হেগসেথ বলেছিলেন, “অতিরিক্ত জেনারেল ও অ্যাডমিরাল থাকলেই সফলতা আসে না।”
নতুন সমাবেশ
এখন সেই বরখাস্ত বা সংকুচিত সংখ্যার অনেক কর্মকর্তাই একই কক্ষে উপস্থিত হবেন। একজন মার্কিন কর্মকর্তা মন্তব্য করেন, “সম্ভবত বিষয়টি এত গুরুতর নয়, তবে স্পষ্ট ধারণার অভাব পরিস্থিতিকে জটিল করছে।”