০৬:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫
 হত্যার ঝুঁকিতে পঞ্চাশজন, গানম্যান পেয়েছেন বিশজন ২০২৫ সালের তারকা: সিনেমার ভবিষ্যৎ আর নতুন তারকাখ্যাতির অর্থ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ২ জানুয়ারির নির্দেশিকা প্রকাশ প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা ছিল পরিকল্পিত, সরকারের ভেতরের একটি অংশ জড়িত: নাহিদ ঢাকার ভারতীয় ভিসা কেন্দ্রে হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোতে হামলা গণতন্ত্রের ওপর সরাসরি আঘাত: মির্জা ফখরুল খুলনায় ভারতীয় ভিসা সেবা বন্ধ মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সুকুমার রঞ্জন ঘোষের মৃত্যু ১৬ জানুয়ারি পবিত্র শবে মেরাজ পালিত হবে দেশে বাংলাদেশ হাইকমিশনে নিরাপত্তা ভাঙনের অভিযোগ নাকচ ভারতের, দিপু হত্যায় গভীর উদ্বেগ

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩৬৪)

সহস্র অত্যাচারময় হইলেও, হতভাগ্য সিরাজকে ধন্যবাদ দিতে ইচ্ছা হয়। সিরাজ মুসল্যান হইয়া কখনও হিন্দুর গুণ অস্বীকার করিত না। সিরাজ বলিয়া কেন, যে দাম্ভিক সম্রাট্ আরঙ্গজেবের মত হিন্দুবিদ্বেষী কেহ দিল্লীর সিংহাসনে অধিরূঢ় হন নাই, সেই আরঙ্গজেবই হিন্দুদিগকে উচ্চপদ প্রদান করিতে কুষ্টিত হইতেন না।

আর সিরাজ, তাঁহার সময়, দুল্লভরাম প্রধান মন্ত্রী, মোহনলাল সেনাপতি, জগৎশেঠ রাজস্ববিষয়ে সর্ব্বেসর্ব্বা, মন্দকুমার হুগলীর ফৌজদার, আর কত নাম করিব! ইহাদের মধ্যে কেহ কেহ সিরাজের প্রিয়পাত্র ও বিশ্বাসী ছিলেন।

সিরাজ তাঁহাদের পরামর্শ লইয়া অনেক কার্য্য করিতেন। তাই’ বলিতেছি, সিরাজের অশেষ দোষ থাকিলেও তাঁহার যে সামান্য গুণ ছিল, তাহাও কেন আমরা বিস্তৃত হই, বুঝিতে পারি না। পাপীর জন্য করুণা প্রকাশই পুণ্যধৰ্ম্ম।

বিশেষতঃ তাহার অন্ধকারময় জীবনের মধ্যে যদি একটু সামান্য আলোকও দেখা যায়, তাহা হইলে সে আলোক-টুকু স্বীকার করিয়া তাহার প্রতি সহানুভূতি দেখান কি উচিত নহে? হতভাগ্য সিরাজের হিন্দু মুসলমানের প্রতি সমভাব স্মরণ করিয়া তাহার অন্ধকারময় জীবনের মধ্যে একটু আলোক দেখিতে পাই বলিয়া, তাহার প্রতি করুণার উদ্রেক হয়।

সিরাজের রাজত্বের সময় হিন্দু মুসলমানের সমান আধিপত্য ছিল; কিন্তু আজিও আমাদের শাদা কাল ঘুচিল না! তাহার পর সে সময় হিন্দু মুসল মানে এরূপ প্রতিনিয়ত বিবাদ হইত না। পরস্পর পরস্পরের প্রতি সহানুভূতি ও স্নেহ প্রকাশ করিত। আর এক্ষণে তাহাদের মধ্যে যে ঘোর বিবাদ হইতেছে, তাহার কারণ কি করিয়া বুঝিব? রাজকর্মচারীকে বিবাদ মীমাংসা করিতে দেখি না।

 

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

 হত্যার ঝুঁকিতে পঞ্চাশজন, গানম্যান পেয়েছেন বিশজন

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩৬৪)

১১:০০:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর ২০২৫

সহস্র অত্যাচারময় হইলেও, হতভাগ্য সিরাজকে ধন্যবাদ দিতে ইচ্ছা হয়। সিরাজ মুসল্যান হইয়া কখনও হিন্দুর গুণ অস্বীকার করিত না। সিরাজ বলিয়া কেন, যে দাম্ভিক সম্রাট্ আরঙ্গজেবের মত হিন্দুবিদ্বেষী কেহ দিল্লীর সিংহাসনে অধিরূঢ় হন নাই, সেই আরঙ্গজেবই হিন্দুদিগকে উচ্চপদ প্রদান করিতে কুষ্টিত হইতেন না।

আর সিরাজ, তাঁহার সময়, দুল্লভরাম প্রধান মন্ত্রী, মোহনলাল সেনাপতি, জগৎশেঠ রাজস্ববিষয়ে সর্ব্বেসর্ব্বা, মন্দকুমার হুগলীর ফৌজদার, আর কত নাম করিব! ইহাদের মধ্যে কেহ কেহ সিরাজের প্রিয়পাত্র ও বিশ্বাসী ছিলেন।

সিরাজ তাঁহাদের পরামর্শ লইয়া অনেক কার্য্য করিতেন। তাই’ বলিতেছি, সিরাজের অশেষ দোষ থাকিলেও তাঁহার যে সামান্য গুণ ছিল, তাহাও কেন আমরা বিস্তৃত হই, বুঝিতে পারি না। পাপীর জন্য করুণা প্রকাশই পুণ্যধৰ্ম্ম।

বিশেষতঃ তাহার অন্ধকারময় জীবনের মধ্যে যদি একটু সামান্য আলোকও দেখা যায়, তাহা হইলে সে আলোক-টুকু স্বীকার করিয়া তাহার প্রতি সহানুভূতি দেখান কি উচিত নহে? হতভাগ্য সিরাজের হিন্দু মুসলমানের প্রতি সমভাব স্মরণ করিয়া তাহার অন্ধকারময় জীবনের মধ্যে একটু আলোক দেখিতে পাই বলিয়া, তাহার প্রতি করুণার উদ্রেক হয়।

সিরাজের রাজত্বের সময় হিন্দু মুসলমানের সমান আধিপত্য ছিল; কিন্তু আজিও আমাদের শাদা কাল ঘুচিল না! তাহার পর সে সময় হিন্দু মুসল মানে এরূপ প্রতিনিয়ত বিবাদ হইত না। পরস্পর পরস্পরের প্রতি সহানুভূতি ও স্নেহ প্রকাশ করিত। আর এক্ষণে তাহাদের মধ্যে যে ঘোর বিবাদ হইতেছে, তাহার কারণ কি করিয়া বুঝিব? রাজকর্মচারীকে বিবাদ মীমাংসা করিতে দেখি না।