গবেষণার ফলাফল
জাপানে দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহজনিত দুটি অন্ত্রের রোগের (ইনফ্ল্যামেটরি বাওয়েল ডিজিজ) রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মাত্র আট বছরে এসব রোগীর সংখ্যা প্রায় ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তোহো ইউনিভার্সিটি, কিওরিন ইউনিভার্সিটি এবং ওসাকা মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির গবেষকরা এ সমীক্ষা চালান। তাঁদের প্রতিবেদন সম্প্রতি জার্নাল অব গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিতে প্রকাশিত হয়েছে।
রোগীর সংখ্যা ও তুলনামূলক চিত্র
গবেষণা অনুযায়ী, ২০২৩ সালে জাপানে আলসারেটিভ কোলাইটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ১৬ হাজার ৯০০ জন এবং ক্রোনস ডিজিজে আক্রান্তের সংখ্যা ৯৫ হাজার ৭০০ জন।
২০১৫ সালের জাতীয় সমীক্ষায় আলসারেটিভ কোলাইটিস রোগীর সংখ্যা ছিল প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার এবং ক্রোনস ডিজিজের রোগী ছিলেন ৭১ হাজার। অর্থাৎ, এ আট বছরে রোগীর সংখ্যা প্রায় ১ দশমিক ৪ গুণ বেড়েছে।

জনসংখ্যার অনুপাতে বর্তমানে প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে আলসারেটিভ কোলাইটিসের হার ২৫৪.৮ জন এবং ক্রোনস ডিজিজের হার ৭৭ জন। ১৯৯১ সালের সমীক্ষার সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় দশগুণ।
রোগগুলোর বৈশিষ্ট্য
আলসারেটিভ কোলাইটিস সাধারণত বৃহদন্ত্রে হয়, আর ক্রোনস ডিজিজ দেখা দেয় পরিপাকতন্ত্রের শ্লেষ্মা ঝিল্লিতে। দুই রোগই অজ্ঞাত কারণে হয় এবং আজীবন স্থায়ী থাকে। এগুলো অন্ত্রের প্রদাহ সৃষ্টি করে, ফলে ডায়রিয়া, পেটব্যথা ও জটিলতা দেখা দেয়। এর এখনো কোনো স্থায়ী চিকিৎসা নেই।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ২০০৭ এবং ২০২০ সালে আলসারেটিভ কোলাইটিসের কারণে পদত্যাগ করেছিলেন।
সরকারি স্বীকৃতি ও চিকিৎসা সুবিধা
জাপানে এ দুটি অন্ত্রের রোগকে “নির্দিষ্ট দুরারোগ্য রোগ” হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এই শ্রেণির রোগগুলো বিরল, নিরাময়যোগ্য নয় এবং দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। একই সঙ্গে রোগ নির্ণয়ে স্পষ্ট মানদণ্ড থাকে এবং আক্রান্তের হার জনসংখ্যার ০.১ শতাংশের নিচে থাকতে হয়। এ কারণে রোগীরা সরকারি আর্থিক সুবিধার আওতায় আসেন।

গবেষকদের পরামর্শ
গবেষকরা জানিয়েছেন, এই সমীক্ষায় শুধু সরকারি চিকিৎসা সুবিধাভোগী নয়, বরং হালকা উপসর্গের রোগী এবং সরকারি সার্টিফিকেটবিহীন রোগীদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে জাতীয় রোগভার সম্পর্কে একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র পাওয়া গেছে।
তাঁরা আরও বলেছেন, রোগীর সংখ্যা ক্রমবর্ধমান হওয়ায় চিকিৎসা, প্রতিরোধ এবং স্বাস্থ্যনীতির পরিকল্পনায় ধারাবাহিকভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরি।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















