সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মিস ইউনিভার্স মঞ্চে অংশ নিতে যাচ্ছেন এমিরাতি তরুণী মারিয়াম মোহাম্মদ। নারী নেতৃত্ব, আত্মবিশ্বাস ও মানবিকতার প্রতীক হিসেবে তিনি হতে চান নতুন প্রজন্মের অনুপ্রেরণা।
এমিরাতের ইতিহাসে প্রথমবার
সংযুক্ত আরব আমিরাতের মারিয়াম মোহাম্মদ নির্বাচিত হয়েছেন ‘মিস ইউনিভার্স ইউএই ২০২৫’। নারী নেতৃত্ব ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক হতে চান এই এমিরাতি তরুণী। শত শত আবেদনকারীর মধ্য থেকে কঠোর বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছেন ২৬ বছর বয়সী এই ফ্যাশন শিক্ষার্থী। আগামী মাসে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য ‘মিস ইউনিভার্স ২০২৫’-এর মঞ্চে তিনিই হবেন প্রথম এমিরাতি নারী প্রতিযোগী।
মারিয়াম বলেন, “আমার দেশ আমাকে বড় স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছে। আমি এমন নারীদের কণ্ঠ হতে চাই, যারা উচ্চাকাঙ্ক্ষী, অনুসন্ধিৎসু ও উদ্যমী। মিস ইউনিভার্স ইউএই শুধুমাত্র সৌন্দর্যের প্রতিযোগিতা নয়—এটি প্রভাব সৃষ্টির সুযোগ।”
শিক্ষা, শিল্প ও মানবিকতার সেতুবন্ধ
মারিয়াম অর্থনীতিতে সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। বর্তমানে তিনি দুবাইয়ের ইস্মোডে ফ্যাশন ডিজাইন অধ্যয়ন করছেন। তাঁর কাজের ক্ষেত্র একত্র করেছে একাডেমিক জ্ঞান, সৃজনশীলতা ও সামাজিক সচেতনতা। তিনি দারিদ্র্য দূরীকরণ, নারী ক্ষমতায়ন এবং ভালোবাসা ও শান্তির সম্প্রদায় গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছেন।
তিনি টেকসই ফ্যাশন ডিজাইন করেছেন, ‘রমজান আমান’ ও ‘দ্য গিভিং ফ্যামিলি ইনিশিয়েটিভ’-এর মতো মানবিক কার্যক্রমে অংশ নিয়েছেন এবং আন্তর্জাতিক নারী উদ্যোক্তা কর্মসূচিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
ঐতিহ্য ও উদ্ভাবনের সমন্বয়
মারিয়ামের আগ্রহ একই সঙ্গে ঐতিহ্য ও আধুনিকতার প্রতিফলন। বাজপাখি পালন ও উট চালনা থেকে শুরু করে টেকসই ফ্যাশন ও বৈশ্বিক সাংস্কৃতিক বিনিময়—সবক্ষেত্রেই তিনি এমিরাতি সংস্কৃতির সৌন্দর্য ও দৃঢ়তা তুলে ধরছেন।
তিনি মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন এমন এক লক্ষ্য নিয়ে—যাতে নতুন প্রজন্মের এমিরাতি নারীরা অনুপ্রেরণা পান এবং বিশ্বমঞ্চে ইউএই-এর ক্ষমতায়ন, টেকসই উন্নয়ন ও উদ্ভাবনের গল্প তুলে ধরা যায়।
আয়োজকদের প্রশংসা
মিস ইউনিভার্স ইউএই-এর জাতীয় পরিচালক পপি ক্যাপেলা বলেন, “মারিয়াম কেবল তাঁর বাগ্মিতা ও দৃষ্টিভঙ্গির জন্যই নয়, বরং এমিরাতি ঐতিহ্য, নারীর ক্ষমতায়ন ও বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপনের অসাধারণ দক্ষতার জন্য আলাদা হয়ে উঠেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “নারী উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন এবং এমিরাতি সংস্কৃতির প্রতি গভীর গর্ব—এই তিন গুণই তাঁকে আমাদের দেশের প্রতিনিধিত্বের জন্য আদর্শ প্রার্থী করেছে।”
প্রতিযোগিতায় অভূতপূর্ব সাড়া
পপি ক্যাপেলা জানান, এবারের প্রতিযোগিতায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ৯৫০ জনেরও বেশি আবেদন পড়েছিল। “মিস ইউনিভার্স ইউএই ২০২৫-এর পুরো প্রক্রিয়াটি ছিল ন্যায়সংগত, স্বচ্ছ ও কঠোর—যাতে প্রতিটি চূড়ান্ত প্রতিযোগী তাঁদের সেরা প্রতিভা তুলে ধরার সুযোগ পান,” তিনি বলেন।
“প্রতিটি তরুণীই নিজ নিজ যোগ্যতায় অনন্য। তাঁদের মেধা, হৃদয় এবং দৃঢ়তা আমাদের জাতির ভবিষ্যৎ গঠনে প্রতিফলিত। ইউএই এমন এক দেশ যেখানে নারীরা নেত্রী, পরিবর্তনের পথিকৃৎ ও সংস্কৃতির দূত হিসেবে উঠে আসছেন—নিজেদের শেকড়কে সম্মান জানিয়ে আরও উজ্জ্বল বৈশ্বিক ভবিষ্যৎ গড়ে তুলছেন।”
#মিসইউনিভার্স #সংযুক্তআরবআমিরাত #মারিয়ামমোহাম্মদ #নারীকর্মক্ষমতা #ফ্যাশনডিজাইন #ইউএই #সারাক্ষণরিপোর্ট