০৪:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
টিম্বার র‍্যাটলস্নেক: উত্তর আমেরিকার বনে এক ঝনঝনানো সতর্কতার প্রতীক কুশিয়ারা নদীতে নিখোঁজ শ্রমিকের লাশ উদ্ধার, অবৈধ বালু উত্তোলনে প্রশ্ন প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩০৬) মেঘনায় মা ইলিশ রক্ষায় সেনাবাহিনীর প্রথম সরাসরি অংশগ্রহণ, হিজলায় যৌথ অভিযানে ২৭ আটক দক্ষ ব্যবস্থাপকরা জানেন কোথায় কাকে বসাতে হয় — কর্মীদের সঠিক ভূমিকা নির্ধারণই সাফল্যের মূল রহস্য কয়রায় ৮ কেজি হরিণের মাংসসহ নারী আটক—সুন্দরবন ঘিরে চোরাশিকার রুট খতিয়ে দেখছে পুলিশ জাপানের আত্মসমর্পণের ৮০ বছর পর—চীন কীভাবে নতুনভাবে গড়ে তুলছে নিজের ‘বিজয়ের ইতিহাস’ মধ্যযুগে ব্রিটেনে রুটি বিক্রিতে কঠোর শাস্তি—‘আসাইজ’ আইন কীভাবে রক্ষা করেছিল ক্রেতার অধিকার ইংল্যান্ডের অভিজাত ভোজসভায় ছুরি-চামচ ছিল সামাজিক মর্যাদার প্রতীক রাজেশপুর শালবন: কুমিল্লার সবুজ হৃদয়ে প্রকৃতির নিঃশব্দ সিম্ফনি

ক্ষমতার অবারিত দৌরাত্ম্য: আফ্রিকার স্বৈরশাসকদের উত্থান ও বিশ্ব রাজনীতির সতর্কবার্তা

বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র এক কঠিন সময় পার করছে। যেখানে এক সময় ভোট ও সংবিধানের সীমাবদ্ধতা ছিল ক্ষমতার নিয়ামক, সেখানে এখন ব্যক্তিকেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থা আবারও মাথাচাড়া দিচ্ছে। আফ্রিকায় এই প্রবণতা সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে— যেখানে একজন নেতার হাতে অনির্দিষ্ট ক্ষমতা পুরো রাষ্ট্রকে পরিণত করছে এক নতুন ধরনের স্বৈরতন্ত্রে।

গণতন্ত্রের খারাপ সময়

বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র আজ কঠিন সময় পার করছে। রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন থেকে শুরু করে তুরস্কের রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান—সবখানেই দেখা যাচ্ছে ক্ষমতার লোভ ও ব্যক্তিকেন্দ্রিক নেতৃত্বের উত্থান। যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতেও নির্বাচিত নেতারা ব্যক্তিগত প্রভাব খাটিয়ে নেতৃত্বের ধরন বদলে দিচ্ছেন। ইউরোপে, সামাজিক বিভাজন ও অর্থনৈতিক স্থবিরতায় ক্লান্ত নাগরিকরা আকৃষ্ট হচ্ছেন নতুন প্রজন্মের ‘কারিশম্যাটিক স্বৈরশাসকদের’ প্রতি।

তবে এই প্রবণতা সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে আফ্রিকায়—যেখানে একজন নেতার হাতে অনির্দিষ্ট ক্ষমতা এক মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়েছে।

আফ্রিকার “বিগ ম্যান” সংস্কৃতি: এক পুরনো বিপদের পুনরাবির্ভাব

১৯৯০-এর দশকে অনেকে ভেবেছিলেন, আফ্রিকার একনায়করা ইতিহাসের পাতায় হারিয়ে গেছেন। তখন বহু দেশ সংবিধানে মেয়াদসীমা বেঁধে দেয়, নিয়মিত নির্বাচন চালু করে এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রে প্রবেশ করে। কিন্তু সেই ‘গণতান্ত্রিক বসন্ত’ ছিল খুবই স্বল্পস্থায়ী।

The dictators who ruined Africa

আজ, একের পর এক আফ্রিকান নেতা দশকের পর দশক ক্ষমতায় থেকে যাচ্ছেন।

  • • ক্যামেরুনের ৯২ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট পল বিয়া
  • • উগান্ডার ৮১ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট ইয়োওয়েরি মুসেভেনি

এই দুইজনই আবারও নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন, যা অনেকেই ‘নির্বাচনের নাটক’ বলে মনে করেন।

বিশ্বে দীর্ঘতম মেয়াদের ১০ নেতার মধ্যে ৭ জনই আফ্রিকার। ইকুয়েটরিয়াল গিনির টেওডোরো ওবিয়াং ৪৬ বছরেরও অধিক সময় ধরে ক্ষমতায় আছেন। আফ্রিকান নেতারা গড়ে অন্য অঞ্চলের নেতাদের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি সময় ক্ষমতায় থাকেন।

ক্ষমতার অপব্যবহার ও রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি

এই “বিগ ম্যান” শাসনব্যবস্থা গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য একটি বড় হুমকি।

  • • বিরোধীদের ভয় দেখানো, নির্বাসনে পাঠানো বা হত্যা করা হয়।
  • • মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কঠোরভাবে দমন করা হয়।
  • • দুর্নীতি রাষ্ট্রযন্ত্রের গভীরে প্রবেশ করে যায়।

What Is "Governmental Abuse of Power"?

তবুও তাদের সমর্থকরা দাবি করেন, এমন নেতৃত্ব দরকার “ভঙ্গুর ও বিভক্ত সমাজ”কে একত্র রাখার জন্য। তারা রুয়ান্ডার পল কাগামে-কে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন—যেখানে শক্তিশালী শাসনের মাধ্যমে স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এসেছে বলে প্রচার করা হয়।

কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা দেখাচ্ছে, এই যুক্তি ভুল।

গবেষণার ফলাফল: স্বৈরশাসক যত পুরোনো, রাষ্ট্র তত দুর্বল

গবেষণা অনুযায়ী, একনায়করা যতদিন ক্ষমতায় থাকেন, ততই তাদের শাসন দুর্বল ও দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। মেয়াদসীমা ভাঙার পর তাদের চারপাশে গড়ে ওঠে ছোট, সুবিধাভোগী এক ‘অভ্যন্তরীণ বৃত্ত’। এতে রাষ্ট্রীয় সম্পদ চলে যায় নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর হাতে।

নির্বাচন জালিয়াতি, সহিংসতা ও জনবিক্ষোভের দমন হয়ে ওঠে তাদের ক্ষমতার স্থায়ী হাতিয়ার।

অর্থনৈতিক দিক থেকেও ফল ভয়াবহ।
একজন নেতার একচ্ছত্র আধিপত্যে থাকা দেশগুলোতে দেখা যায়—

  • • কম বেসরকারি বিনিয়োগ,
  • • বেশি সংঘাত,
  • • এবং জনকল্যাণমূলক খাতে অপ্রতুল বিনিয়োগ।

ফলে সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থেমে যায়।

Difference Between Autocracy and Dictatorship | Difference Between

“প্রাতিষ্ঠানিক স্বৈরতন্ত্র” বনাম “ব্যক্তিকেন্দ্রিক শাসন”

গবেষকরা বলেন, এমনকি কিছু একদলীয় স্বৈরতন্ত্রেও একটি মৌলিক “সামাজিক চুক্তি” থাকে—যেখানে জনগণের ন্যূনতম কল্যাণ নিশ্চিত করা হয় ক্ষমতার বিনিময়ে।

কিন্তু “ব্যক্তিকেন্দ্রিক শাসনে” সেই ভারসাম্য সম্পূর্ণ ভেঙে যায়। সেখানে আইন, প্রতিষ্ঠান বা নীতি নয় — ব্যক্তির ইচ্ছাই রাষ্ট্রের চূড়ান্ত নিয়ম হয়ে দাঁড়ায়।

ফলাফল হিসেবে দেখা যায়—

  • • ন্যায়বিচারের অনুপস্থিতি,
  • • গণমাধ্যমের দমন,
  • • রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার অবসান,
  • • এবং আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা।

UNVEILING THE INVISIBLE HANDS: THE INTRIGUING DYNAMICS OF COUPS IN WEST AFRICA - Acar Digest

নতুন প্রজন্মের পুরনো একনায়করা

দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আফ্রিকার “আজীবন নেতাদের” প্রজন্মের অবসান ঘটলেও তাদের উত্তরসূরিরা একই পথেই হাঁটছে।

  • • সাহেল অঞ্চলে ৩০ থেকে ৬০ বছর বয়সী সামরিক নেতারা ক্ষমতা দখল করে “অন্তর্বর্তী সরকার” ঘোষণা করেছেন, কিন্তু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেননি।
  • • কঙ্গো গণপ্রজাতন্ত্রীতে প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স তশিসেদি সংবিধান থেকে দুই মেয়াদের সীমা তুলে দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
  • • ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ নিজেকে একপ্রকার ‘মুক্তিদাতা’ মনে করেন — এবং “মুক্তিদাতারা অবসর নেন না।”

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট: আফ্রিকার অভিজ্ঞতা থেকে সতর্কবার্তা

আজ বিশ্বজুড়ে “শক্তিশালী নেতা”দের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। অনেকেই মনে করেন, এমন নেতৃত্ব রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আনে। কিন্তু আফ্রিকার অভিজ্ঞতা স্পষ্ট করে দিচ্ছে—এমন নেতৃত্ব সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রের মেরুদণ্ড ভেঙে দেয়।

প্রথম দিকে তারা সংস্কারক হিসেবে আবির্ভূত হন, কিন্তু শেষপর্যন্ত তারা পরিণত হন নিজেদের তৈরি কারাগারের বন্দী হিসেবে।

আফ্রিকার ইতিহাস তাই এক সরল বার্তা দেয়:
‘বড় নেতা’ যতই কারিশমাটিক হোক, তাদের অবারিত ক্ষমতা শেষ পর্যন্ত নিয়ে আসে বড় বিপর্যয়।

#আফ্রিকা #গণতন্ত্র #স্বৈরতন্ত্র #রাজনীতি #বিশ্লেষণ #সারাক্ষণরিপোর্ট #বিগম্যান #আন্তর্জাতিকসম্পর্ক #অর্থনীতি #অবসানহীনক্ষমতা

জনপ্রিয় সংবাদ

টিম্বার র‍্যাটলস্নেক: উত্তর আমেরিকার বনে এক ঝনঝনানো সতর্কতার প্রতীক

ক্ষমতার অবারিত দৌরাত্ম্য: আফ্রিকার স্বৈরশাসকদের উত্থান ও বিশ্ব রাজনীতির সতর্কবার্তা

০৪:০৪:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫

বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র এক কঠিন সময় পার করছে। যেখানে এক সময় ভোট ও সংবিধানের সীমাবদ্ধতা ছিল ক্ষমতার নিয়ামক, সেখানে এখন ব্যক্তিকেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থা আবারও মাথাচাড়া দিচ্ছে। আফ্রিকায় এই প্রবণতা সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে— যেখানে একজন নেতার হাতে অনির্দিষ্ট ক্ষমতা পুরো রাষ্ট্রকে পরিণত করছে এক নতুন ধরনের স্বৈরতন্ত্রে।

গণতন্ত্রের খারাপ সময়

বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র আজ কঠিন সময় পার করছে। রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন থেকে শুরু করে তুরস্কের রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান—সবখানেই দেখা যাচ্ছে ক্ষমতার লোভ ও ব্যক্তিকেন্দ্রিক নেতৃত্বের উত্থান। যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতেও নির্বাচিত নেতারা ব্যক্তিগত প্রভাব খাটিয়ে নেতৃত্বের ধরন বদলে দিচ্ছেন। ইউরোপে, সামাজিক বিভাজন ও অর্থনৈতিক স্থবিরতায় ক্লান্ত নাগরিকরা আকৃষ্ট হচ্ছেন নতুন প্রজন্মের ‘কারিশম্যাটিক স্বৈরশাসকদের’ প্রতি।

তবে এই প্রবণতা সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে আফ্রিকায়—যেখানে একজন নেতার হাতে অনির্দিষ্ট ক্ষমতা এক মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়েছে।

আফ্রিকার “বিগ ম্যান” সংস্কৃতি: এক পুরনো বিপদের পুনরাবির্ভাব

১৯৯০-এর দশকে অনেকে ভেবেছিলেন, আফ্রিকার একনায়করা ইতিহাসের পাতায় হারিয়ে গেছেন। তখন বহু দেশ সংবিধানে মেয়াদসীমা বেঁধে দেয়, নিয়মিত নির্বাচন চালু করে এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রে প্রবেশ করে। কিন্তু সেই ‘গণতান্ত্রিক বসন্ত’ ছিল খুবই স্বল্পস্থায়ী।

The dictators who ruined Africa

আজ, একের পর এক আফ্রিকান নেতা দশকের পর দশক ক্ষমতায় থেকে যাচ্ছেন।

  • • ক্যামেরুনের ৯২ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট পল বিয়া
  • • উগান্ডার ৮১ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট ইয়োওয়েরি মুসেভেনি

এই দুইজনই আবারও নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন, যা অনেকেই ‘নির্বাচনের নাটক’ বলে মনে করেন।

বিশ্বে দীর্ঘতম মেয়াদের ১০ নেতার মধ্যে ৭ জনই আফ্রিকার। ইকুয়েটরিয়াল গিনির টেওডোরো ওবিয়াং ৪৬ বছরেরও অধিক সময় ধরে ক্ষমতায় আছেন। আফ্রিকান নেতারা গড়ে অন্য অঞ্চলের নেতাদের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি সময় ক্ষমতায় থাকেন।

ক্ষমতার অপব্যবহার ও রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি

এই “বিগ ম্যান” শাসনব্যবস্থা গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য একটি বড় হুমকি।

  • • বিরোধীদের ভয় দেখানো, নির্বাসনে পাঠানো বা হত্যা করা হয়।
  • • মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কঠোরভাবে দমন করা হয়।
  • • দুর্নীতি রাষ্ট্রযন্ত্রের গভীরে প্রবেশ করে যায়।

What Is "Governmental Abuse of Power"?

তবুও তাদের সমর্থকরা দাবি করেন, এমন নেতৃত্ব দরকার “ভঙ্গুর ও বিভক্ত সমাজ”কে একত্র রাখার জন্য। তারা রুয়ান্ডার পল কাগামে-কে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন—যেখানে শক্তিশালী শাসনের মাধ্যমে স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এসেছে বলে প্রচার করা হয়।

কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা দেখাচ্ছে, এই যুক্তি ভুল।

গবেষণার ফলাফল: স্বৈরশাসক যত পুরোনো, রাষ্ট্র তত দুর্বল

গবেষণা অনুযায়ী, একনায়করা যতদিন ক্ষমতায় থাকেন, ততই তাদের শাসন দুর্বল ও দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। মেয়াদসীমা ভাঙার পর তাদের চারপাশে গড়ে ওঠে ছোট, সুবিধাভোগী এক ‘অভ্যন্তরীণ বৃত্ত’। এতে রাষ্ট্রীয় সম্পদ চলে যায় নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর হাতে।

নির্বাচন জালিয়াতি, সহিংসতা ও জনবিক্ষোভের দমন হয়ে ওঠে তাদের ক্ষমতার স্থায়ী হাতিয়ার।

অর্থনৈতিক দিক থেকেও ফল ভয়াবহ।
একজন নেতার একচ্ছত্র আধিপত্যে থাকা দেশগুলোতে দেখা যায়—

  • • কম বেসরকারি বিনিয়োগ,
  • • বেশি সংঘাত,
  • • এবং জনকল্যাণমূলক খাতে অপ্রতুল বিনিয়োগ।

ফলে সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থেমে যায়।

Difference Between Autocracy and Dictatorship | Difference Between

“প্রাতিষ্ঠানিক স্বৈরতন্ত্র” বনাম “ব্যক্তিকেন্দ্রিক শাসন”

গবেষকরা বলেন, এমনকি কিছু একদলীয় স্বৈরতন্ত্রেও একটি মৌলিক “সামাজিক চুক্তি” থাকে—যেখানে জনগণের ন্যূনতম কল্যাণ নিশ্চিত করা হয় ক্ষমতার বিনিময়ে।

কিন্তু “ব্যক্তিকেন্দ্রিক শাসনে” সেই ভারসাম্য সম্পূর্ণ ভেঙে যায়। সেখানে আইন, প্রতিষ্ঠান বা নীতি নয় — ব্যক্তির ইচ্ছাই রাষ্ট্রের চূড়ান্ত নিয়ম হয়ে দাঁড়ায়।

ফলাফল হিসেবে দেখা যায়—

  • • ন্যায়বিচারের অনুপস্থিতি,
  • • গণমাধ্যমের দমন,
  • • রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার অবসান,
  • • এবং আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা।

UNVEILING THE INVISIBLE HANDS: THE INTRIGUING DYNAMICS OF COUPS IN WEST AFRICA - Acar Digest

নতুন প্রজন্মের পুরনো একনায়করা

দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আফ্রিকার “আজীবন নেতাদের” প্রজন্মের অবসান ঘটলেও তাদের উত্তরসূরিরা একই পথেই হাঁটছে।

  • • সাহেল অঞ্চলে ৩০ থেকে ৬০ বছর বয়সী সামরিক নেতারা ক্ষমতা দখল করে “অন্তর্বর্তী সরকার” ঘোষণা করেছেন, কিন্তু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেননি।
  • • কঙ্গো গণপ্রজাতন্ত্রীতে প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স তশিসেদি সংবিধান থেকে দুই মেয়াদের সীমা তুলে দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
  • • ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ নিজেকে একপ্রকার ‘মুক্তিদাতা’ মনে করেন — এবং “মুক্তিদাতারা অবসর নেন না।”

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট: আফ্রিকার অভিজ্ঞতা থেকে সতর্কবার্তা

আজ বিশ্বজুড়ে “শক্তিশালী নেতা”দের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। অনেকেই মনে করেন, এমন নেতৃত্ব রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আনে। কিন্তু আফ্রিকার অভিজ্ঞতা স্পষ্ট করে দিচ্ছে—এমন নেতৃত্ব সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রের মেরুদণ্ড ভেঙে দেয়।

প্রথম দিকে তারা সংস্কারক হিসেবে আবির্ভূত হন, কিন্তু শেষপর্যন্ত তারা পরিণত হন নিজেদের তৈরি কারাগারের বন্দী হিসেবে।

আফ্রিকার ইতিহাস তাই এক সরল বার্তা দেয়:
‘বড় নেতা’ যতই কারিশমাটিক হোক, তাদের অবারিত ক্ষমতা শেষ পর্যন্ত নিয়ে আসে বড় বিপর্যয়।

#আফ্রিকা #গণতন্ত্র #স্বৈরতন্ত্র #রাজনীতি #বিশ্লেষণ #সারাক্ষণরিপোর্ট #বিগম্যান #আন্তর্জাতিকসম্পর্ক #অর্থনীতি #অবসানহীনক্ষমতা