দীর্ঘ দুই বছরের দুঃস্বপ্নের সমাপ্তি
নিউইয়র্কের ব্রুকলিনের বাসিন্দা আলানা জেইচিক গত দুই বছর ধরে নিরন্তর চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন—তার অপহৃত পরিবারের সাত সদস্যকে ঘরে ফেরানোর জন্য। অবশেষে সেই লড়াই শেষের পথে। গাজায় বন্দি থাকা শেষ দুই সদস্যকে মুক্তি দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
যুদ্ধবিরতির সংবাদে আশার আলো
আকাশপথে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যাঞ্চল অতিক্রম করার সময়, বিমানে বসেই আলানার ফোনে খবর আসে—হোয়াইট হাউসের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও হামাস একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। এই সমঝোতা শুধু যুদ্ধের অবসানই নয়, গাজায় বন্দি থাকা অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তির পথও খুলে দিয়েছে।
দীর্ঘ অপেক্ষা আর প্রার্থনার পর এই খবর শুনে আলানা কান্নায় ভেঙে পড়েন। অবতরণের আগেই তিনি পরিবারের সদস্যদের বার্তা পাঠাতে শুরু করেন—“অবশেষে তারা ফিরছে।”
২০২৩ সালের অক্টোবরে ভয়াবহ অপহরণ
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলে তার সাত আত্মীয়কে অপহরণ করে নিয়ে যায়। তাদের মধ্যে ছিলেন দুই কাজিন ও তিন ছোট শিশু। পরবর্তী মাসে, নভেম্বর ২০২৩-এ এক অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির সময় এই পাঁচজনকে মুক্তি দেওয়া হয়।
কিন্তু আলানার কাজিনের স্বামী ডেভিড কুনিও এবং তার ভাই এরিয়েল কুনিও তখনও বন্দি অবস্থায় ছিলেন। সেই থেকে তাদের মুক্তির আশায় পরিবারটি প্রতিদিন কাটিয়েছে দুশ্চিন্তায় ও প্রার্থনায়।
হোয়াইট হাউসের মধ্যস্থতায় নতুন চুক্তি
হোয়াইট হাউসের তত্ত্বাবধানে হওয়া এই সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায়, অবশিষ্ট বন্দিদের ধাপে ধাপে মুক্তি দেওয়া হবে। যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এটি দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েল-হামাস সংঘাতের অবসান ঘটাতে পারে।
চুক্তির বাস্তবায়ন শুরু হলে গাজায় বন্দি শেষ দুই ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিক—ডেভিড ও এরিয়েল কুনিও—ফের পরিবারের কাছে ফিরতে পারবেন।
আশার প্রত্যাবর্তন
আলানা জেইচিক বলেন, “দুই বছর ধরে আমরা প্রতিদিন ভয়ে কাঁপতাম—ওরা বেঁচে আছে কিনা, জানতাম না। আজ আমি কেবল চাই, তারা ঘরে ফিরুক, নিরাপদে থাকুক।”
তার পরিবারের এই মুক্তির খবর গাজায় চলমান মানবিক সংকটের মাঝেও এক টুকরো আশার আলো হিসেবে দেখা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীরা আশা করছেন, এই সমঝোতা ভবিষ্যতের স্থায়ী শান্তির পথে এক বড় পদক্ষেপ হতে পারে।
#গাজা #ইসরায়েল #হামাস #জেইচিকপরিবার #যুদ্ধবিরতি #মানবিকসংকট #হোয়াইটহাউস #জিম্মিমুক্তি #আন্তর্জাতিকসম্পর্ক #সারাক্ষণরিপোর্ট