অ্যাপলের চীন-কৌশল: বার্তা ও বাস্তবতা
অ্যাপল প্রধান টিম কুক এই সপ্তাহে চীন সফরে জানালেন—কোম্পানি দেশে বিনিয়োগ আরও বাড়াবে। শিল্প মন্ত্রণালয় জানালেও অঙ্কটি প্রকাশ করেনি; অ্যাপলও কিছু বলেনি। কুক সাংহাইয়ের স্টোরে যান, জনপ্রিয় লাবুবু পুতুলের ডিজাইনার ও স্থানীয় গেম ডেভেলপারদের সঙ্গে সময় কাটান। লক্ষ্য স্পষ্ট—ভোক্তা ও পার্টনারদের আশ্বস্ত করা, ডেভেলপারদের উজ্জীবিত করা এবং বিক্রির গতি টিকিয়ে রাখা। বড় আপডেট এসেছে eSIM নিয়ে। আইফোন এয়ারে এমবেডেড সিম ব্যবহারের অনুমতি মিলেছে, ফলে দেশের প্রধান অপারেটরগুলো আরম্ভিক বাধা ছাড়াই সমর্থন দিতে পারবে। চীনের মতো বাজারে, যেখানে এখনো ফিজিক্যাল সিম বদলানো অভ্যস্ততা, এই অনুমোদন গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে পারে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ছুটির মৌসুমের আগে এই সংকেত সময়োচিত—চাহিদা ধরার চেষ্টা এবং নীতিগত সঙ্গতি দেখানো, দুটোই জরুরি।
তবে প্রেক্ষাপট জটিল। ২০২২ থেকে যুক্তরাষ্ট্র–চীনের প্রযুক্তি টানাপোড়েন বেড়েছে। সংবেদনশীল অফিসে বিদেশি ডিভাইস নিয়ে চীনের কড়াকড়ি আছে; আবার ওয়াশিংটনও উন্নত চিপ রফতানিতে নিয়ন্ত্রণ জোরদার করেছে। অ্যাপল উৎপাদন ভারত–ভিয়েতনামে ছড়িয়ে দিচ্ছে, কিন্তু জটিল অ্যাসেম্বলিতে চীন এখনো মূল কেন্দ্র। অ্যাপ স্টোর রাজস্বের বড় অংশও আসে এখানকার অ্যাপ ইকোসিস্টেম থেকে; তাই ডেভেলপারদের সঙ্গে সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ। হার্ডওয়্যার সাপ্লায়াররাও তাকিয়ে আছে—লজিস্টিকসের সামান্য টানও জাস্ট-ইন-টাইম শৃঙ্খলে ঢেউ তোলে। কুকের সফর বার্তা দিচ্ছে—ধারাবাহিকতা। ব্র্যান্ড উপস্থিতি জোরালো করা, স্থানীয় ডেভেলপারদের অনুপ্রাণিত করা, অপারেটরদের এক প্ল্যাটফর্মে আনা—এগুলো বিনিয়োগকারীদেরও আশ্বস্ত করে। অনুত্তরিত প্রশ্ন রয়ে গেছে—উৎপাদন বৈচিত্র্য কত দ্রুত করা যাবে গুণগত মান অক্ষুণ্ণ রেখে? আর eSIMের সদিচ্ছা কি দীর্ঘমেয়াদি নীতিগত স্থিতি দেবে? আসছে ত্রৈমাসিকেই দেখা যাবে, এই ‘গুডউইল’ বিক্রিতে কতটা রূপ নেয়।